সন্দীপ সরকার, কলকাতা: নৈশালোকের ইডেনে (Eden Gardens) তখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) ক্রিকেটারেরা প্র্যাক্টিস করছেন। কিন্তু কেকেআরের প্র্যাক্টিস থাকলে বি বা এল ব্লকের গ্যালারিতে যে উৎসাহী ভিড় দেখা যায়, শনিবার তা গায়েব। এমনকী, মাঠের বাইরে যখন কেকেআরের টিমবাস এসে দাঁড়াল, এবং নেমে এলেন একে একে সুনীল নারাইন, নীতীশ রানারা, তখনও বাইরে জড়ো হওয়া শ'খানেকের ভিড় থেকে জয়োধ্বনি উঠল একজনের নামে।
তিনি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (MS Dhoni)। শনিবার ইডেনে নাইটদের মহড়া সারার সময় বিমানবন্দরে নেমে পড়লেন। অবশ্য মাঠের দিকে আসার কোনও পরিকল্পনা নেই ক্যাপ্টেন কুলের। ঘরের মাঠে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে কলকাতায় এসেছেন। আগের রাতে ম্যাচ খেলার ধকল কাটিয়ে ওঠাই প্রথম লক্ষ্য মাহির।
তবে ধোনি ও তাঁর দলবল যতই পাশের নেটে অনুপস্থিত থাকুন না কেন, তাঁকে নিয়ে চর্চা চলল নাইট শিবিরের অন্দরেও। সিএসকে ব্যাটারদের রুখতে বিশেষ মহড়া চলল কেকেআর বোলারদের। ইডেনে বড় রানের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়। ম্যাচে যদি ধোনির হেলিকপ্টার উড়তে শুরু করে, তাহলে নিমেষে সব তছনছ করে দিতে পারে। যে কারণে সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী, লকি ফার্গুসনদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাদা নেটে পড়ে রইলেন নাইটদের সহকারী বোলিং কোন ওঙ্কার সালভি।
যদিও মুখে চাপা আতঙ্কের কথা মানছে না নাইট শিবির। দলের বোলিং কোচ ভরত অরুণকে জিজ্ঞেস করা হল, ক্যাপ্টেন ধোনি-ক্রিকেটার ধোনি - কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠে পারেন নাইটদের কাছে? ভরত শান্ত গলায় বললেন, 'আমরা জানি এমন এক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলছি যারা দারুণ ছন্দে রয়েছে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে যদি কেকেআরের রেকর্ড দেখেন, তাহলে সেটা বেশ ঈর্ষণীয়। আমরা নিজেদের শক্তি নিয়ে ভাবছি। যে জায়গাগুলোয় উন্নতির পরিসর আছে, সেই জায়গাগুলো নিয়ে পরিশ্রম করছি। পাশাপাশি প্রতিপক্ষ নিয়েও আমরা ওয়াকিবহাল। তবে মাঠে কারা ভাল খেলবে, তার ওপরই সব কিছু নির্ভর করে থাকবে।'
যদিও কেকেআরের বোলিং কোচ সম্ভবত রেকর্ডবুক না দেখে মন্তব্য করেছেন। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, দুই দল মোট ২৯ বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে ১৮ ম্যাচ জিতেছে সিএসকে। মাত্র ১০ ম্য়াচ জিতেছে কেকেআর। একটি ম্যাচ অমীমাংসিত ছিল।
ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সেও পিছিয়ে নাইটরা। ইডেনে ৯ বারের সাক্ষাতে ৫ বার জিতেছে সিএসকে। ৪ বার কেকেআর।
কেকেআর অন্তত ঘরের মাঠে হিসেবটা সমান করতে চাইবে রবিবারের ম্যাচ জিতে। সেই সঙ্গে চাইবে, হারের হ্যাটট্রিকের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে। প্লে অফ নিয়ে এমনিতেই কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আর একটা হার মানে কিন্তু রুগীকে আইসিইউ-তে ভর্তি করার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। নাইটরা চাইবে, যেন তেন ভাবে সিএসকে-কে হারিয়ে সুস্থ হওয়ার পথে এক কদম বাড়িয়ে রাখতে। যাতে করে প্লে অফের অঙ্ক জটিল না হয়ে যায়।
তবু, মাথাব্যথা তো ওই একজনকে নিয়েই। যাঁর পকেটে ৪টি আইপিএল ট্রফি। আন্তর্জাতিক সাফল্য না হয় বাদই দেওয়া গেল, শুধু আইপিএলেই ক্যাপ্টেন ধোনির রেকর্ড অবিশ্বাস্য শোনাবে।
মুখে প্রকাশ করতে না চাইলেও, ধোনি-আতঙ্কের দাওয়াই খোঁজাই কেকেআরের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।