মুম্বই: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (Royal Challengers Bangalore) বিরুদ্ধে ২০০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অতি সহজেই জয় পেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians)। সৌজন্যে সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) ৩৫ বলে ৮৩ রানের ইনিংস ও নেহাল ওয়াদেরার (Nehal Wadhera) অপরাজিত ৫২ রান। এই দুইয়ের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের সুবাদেই ২১ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে ম্যাচ জিতল মুম্বই।


এক ওভারে জোড়া সাফল্য


এদিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ওপেনাররা বিশেষত ঈশান কিষাণ বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছন্দে ছিলেন। কিন্তু পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই মুম্বইকে জোড়া ধাক্কা দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। প্রথমে ২১ বলে ৪২ রানে ব্যাট করা ঈশান কিষাণকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। পরে একই ওভারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স রোহিত শর্মাকেও ৭ রানে এলব্লিউব্লুতে আউট করেন শ্রীলঙ্কান স্পিনারই। রোহিত শর্মার চলতি আইপিএলে ব্যাট হাতে ব্যর্থতা কিন্তু অব্যাহতই রইল।


সূর্য ঝড়


কিন্তু পরপর দুই উইকেট হারালেও কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের রানের গতিতে ভাটা পড়েনি। সূর্যকুমার যাদব ও নেহাল ওয়াদেরা মুম্বইয়ের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে নেন। দুই তারকা ৩২ বলে নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন। ২৬ বলেই অর্ধশতরান পূর্ণ করেন সূর্যকুমার যাদব। অর্ধশতরানের পর আরও আগ্রাসী ছন্দে ব্যাট করতে শুরু করেন সূর্য। অর্ধশতরানের পর আট বলে ৩৩ রান তোলেন তিনি। বিজয়কুমার বিশাখ এক ওভারে পরপর সূর্য (৮৩) ও টিম ডেভিডকে (০) ফেরালেও, ততক্ষণ মুম্বইয়ের জয় সুনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। 


এই জয়ের সুবাদে ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় এক ধাক্কায় তিন নম্বরে উঠে এল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অপরদিকে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর আপাতত ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় সাত নম্বরে।


প্রথম ইনিংস


এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণিত করে মুম্বইয়ের হয়ে শুরুটা কার্যত স্বপ্নের মতো করেন বেরেনডর্ফ। প্রথম ওভারেই গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দুরন্ত ফর্মে থাকা বিরাট কোহলিকে মাত্র ১ রানে সাজঘরে ফেরান অজি তারকা বোলার। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অনুজ রাওয়াতও ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তাঁর উইকেটও বেরেনডর্ফই নেন। শুরুতেই মাত্র ১৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিরাট চাপে পড়ে যায় আরসিবি।


তবে পরপর ধাক্কায় দমে যাওয়ার বদলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে আরসিবি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে ব্যাট করেন। পাওয়ার প্লেতেই ৫৬ রান তুলে ফেলে আরসিবি। পাওয়ার প্লে শেষ হলেও, অবশ্য আরসিবির আক্রমণ থামেনি। ম্যাক্সওয়েলকে যোগ্য সঙ্গ দেন আপাতত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক, আরসিবি অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসি। ডু্প্লেসি ও ম্যাক্সওয়েলের দাপটে তড়তড়িয়ে এগোয় আরসিবির ইনিংস। মাত্র ২৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৯.৩ ওভারেই শতরানের গণ্ডি পার করে ফেলে আরসিবি।


ডুপ্লেসি ও ম্যাক্সওয়েল মিলে তৃতীয় উইকেটে আরসিবির হয়ে শতরানের পার্টনারশিপও গড়ে ফেলেন। তবে এই দুই তারকা যখন আরসিবিকে বিরাট বড় রানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই বল হাতে আবারও মুম্বইয়ের ত্রাতা হয়ে উঠেন বেরেনডর্ফ। তিনিই ম্যাক্সওয়েলকে ৬৮ রানে ফেরান। গত ম্যাচে আরসিবির হয়ে অর্ধশতরান করা মোহিপাল লোমরোর অবশ্য এদিন ব্যাট হাতে রান পাননি। তিনি কুমার কার্তিকেয়ার বলে ১ রানেই ফেরেন। ফাফও ফেরেন ৬৫ রানে।


দুরন্ত তৃতীয় উইকেটের পার্টনারশিপের পর ১০ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ফের একবার চাপে পড়ে যায় আরসিবি। শেষের দিকে দীনেশ কার্তিক ১৮ বলে ৩০ রানের একটি ইনিংস খেলেন বটে, তবে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসাবে নামা কেদার যাদব রানের গতি বাড়াতে পারেননি। তিনি ১০ বলে মাত্র ১২ রান করেন। হাসারাঙ্গা ১২ রানে অপরাজিত থাকেন। মুম্বইয়ের নিয়ন্ত্রিত ডেথ বোলিংয়ে শেষ ৩৪ বলে মাত্র ৪৯ রানই তুলতে পারে আরসিবি। 


আরও পড়ুন: জলপথে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে কাদের ? কেমন যাবে আজকের দিন ?