কলকাতা: আইপিএল খেলার ফাঁকেই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিল্লিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের টিমহোটেলেই নিভৃতবাসে ছিলেন প্রায় দু'সপ্তাহ। অবশেষে করোনাকে হারিয়ে সোমবার গভীর রাতে কলকাতায় ফিরলেন ঋদ্ধিমান সাহা। চারপাশে যখন অতিমারীর অভিশাপ, আতঙ্কে মানুষ দিশেহারা, তখন এবিপি লাইভ-কে বঙ্গ উইকেটকিপার জানালেন, করোনা আক্রান্ত হলে কী করা উচিত আর কী নয়।


মানসিক সুস্থতাই চাবিকাঠি


কেমন আছেন? রবিবার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ঋদ্ধিমান সাহা বললেন, 'শরীর ঠিক আছে। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।' জানালেন, করোনা আক্রান্ত থাকাকালীন মানসিক সুস্থতা কী ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ঋদ্ধি বললেন, 'গোটা বিশ্ব করোনায় উথালপাতাল হয়ে যাচ্ছে। সকলের সমান উপসর্গ হচ্ছে না। তবে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। করোনা আক্রান্ত হলে সকলে ভীষণ ভয় পাচ্ছে। তাতে তো রোগমুক্তি হবে না। মানসিকভাবে সতেজ থাকতে হবে। তাতে সুস্থ হয়ে ওঠা যায় দ্রুত। সারাক্ষণ যদি ভাবতে থাকেন যে আমি করোনা আক্রান্ত, এবার কী হবে, বাঁচব তো? এই উদ্বেগ থেকে রক্তচাপ, হার্টবিট বেড়ে যায়। এমনকী, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেতে পারে।'


ঘরের মধ্যেই হাঁটুন


আইপিএলের মাঝপর্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিল্লিতে হোটেলরুমে একাকী কাটাতে হয়েছে দু'সপ্তাহ। নির্জনতা থেকে অবসাদ আসতে পারে তো? ঋদ্ধিমান বলছেন, 'হ্যাঁ, হোম আইসোলেশনে থাকলে অবসাদ আসার ভয় থাকে। অবসাদ বা একাকীত্বকে একেবারে জায়গা দেবেন না। সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকা খারাপ। ঘরের মধ্যে হাঁটাচলা করলে শরীর সক্রিয় থাকে। করোনা আক্রান্ত মানেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়তে হবে, বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই বিষয়টা তা নয়। ঘরের মধ্য়েই হাঁটুন।'


রোম্যান্টিক বা কমেডি সিনেমা, ফোনে আড্ডা


কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলে ভাল লাগে এমন কাজ করুন, পরামর্শ ঋদ্ধিমানের। করোনাকে হারিয়ে উঠে ঋদ্ধিমান বলছেন, 'মন ভাল করা জিনিস নিয়ে সময় কাটান। সেটা হতে পারে মুভি, বা প্রিয় লেখকের বই। আমি স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছি। বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে প্রচুর কথা হয়েছে। টিভি ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা দেখেছি। প্রিয়জনদের সঙ্গে ফোনে বা ভিডিও কলে কথা বলুন। রোম্যান্টিক বা কমেডি মুভি দেখুন। যেরকম সিনেমা দেখলে মানসিকভাবে হাল্কা থাকা যায়। কারণ আমাদের মনই শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে।' 


স্বাদ-গন্ধ যেতে পারে, ফিরবেও


ঋদ্ধিমান বলছেন, 'আমার বড়সড় কোনও শারীরিক সমস্যা হয়নি। নাক বন্ধ ছিল। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসার প্রায় পাঁচদিন পরে গন্ধ পাচ্ছিলাম না। এ ছাড়া আর কোনও সমস্যা হয়নি। তবে আমি একবারও ভাবিনি যে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। স্বাভাবিক থেকেছি। সাবলীল জীবনযাপন করেছি। মানসিকভাবে ফুরফুরে থাকলে সেরে উঠবেন তাড়াতাড়ি। স্বাদ পাচ্ছিলাম। গন্ধও ফিরে পাই দিন পাঁচেক পরেই। গা-হাত পা ব্যথাও ছিল না। প্রথম দুদিন রাতে অল্প তাপমাত্রা ছিল।'


প্রোটিন খান বেশি


ঋদ্ধিমান বলছেন, 'রিপোর্ট পজিটিভ এলে উদ্বিগ্ন হবেন না। করোনা আক্রান্ত হলেই সব কিছু শেষ নয়। শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা থাকাটা খুব জরুরি। আমাদের (পেশাদার ক্রিকেটারদের) এমনিতেই ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হয়। প্রোটিন ফুড খেতাম। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান। পর্যাপ্ত জল পান করুন। সেরে উঠবেন দ্রুত। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।'