আমদাবাদ: রাজস্থানের (Rajasthan Royals) বিরুদ্ধে আইপিএলের (IPL) ফাইনালে যেন ১৫ বছর আগের রাজস্থান রয়্যালসের কীর্তিকেই মনে করালেন গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) ক্রিকেটারেরা। ২০০৮ সালে প্রথম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শেন ওয়ার্নের রাজস্থান। এক ঝাঁক অচেনা অখ্যাত মুখ নিয়ে প্রথমবারেই বাজিমাত করেছিলেন কিংবদন্তি ওয়ার্ন।


খানিকটা যেন সেই পথেই হাঁটল গুজরাত টাইটান্স। আইপিএলের বয়স পনেরো হয়ে গেলেও গুজরাতের এটাই প্রথম আইপিএল। আর সেই টুর্নামেন্টে শুরু থেকে দাপট দেখান হার্দিক পাণ্ড্য-ডেভিড মিলার-মহম্মদ শামিরা। শেষ পর্যন্ত রবিবার ফাইনালে রাজস্থান রয়্যালসকে ৭ উইকেটে হেলায় হারিয়ে প্রথমবার আইপিএলে নেমেই ট্রফি জিতে নিল গুজরাত।


১১ বল বাকি থাকতে রাজস্থান রয়্যালসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিল গুজরাত টাইটান্স। ৪৩ বলে ৪৫ রানে ক্রিজে ছিলেন শুভমন গিল। দুবার প্রাণরক্ষা পেয়েও যিনি ক্রিজ আঁকড়ে পড়েছিলেন। উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেননি। তার পুরস্কারও পেলেন। ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতালেন তিনিই।


প্রথমবার আইপিএল (IPL) খেলতে নেমেছে একটা দল। কিন্তু শরীরী ভাষা দেখে বোঝার উপায় নেই। শান্ত, সংযত। ফাইনালের স্নায়ুর চাপকে যেন শতহস্ত দূরে রাখলেন। গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) ক্রিকেটারদের যে প্রত্যয়ী মানসিকতার প্রতিফলন হল তাঁদের পারফরম্যান্সেও। আইপিএল ফাইনালে বল হাতে দাপট দেখালেন হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya), মহম্মদ শামি (Mohammed Shami), রশিদ খানরা (Rashid Khan)। প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান মাত্র ১৩০/৯ স্কোরে আটকে যায়।


চলল না জস বাটলারের ব্যাট। যিনি চলতি আইপিএলে অনবদ্য কীর্তি গড়েছেন। চারটি সেঞ্চুরি। ডেভিড ওয়ার্নারের রেকর্ড ভেঙে আইপিএলে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত রানের নজির। রবিবারও বাটলারই রাজস্থানের সর্বোচ্চ স্কোরার। কিন্তু তাঁর ৩৯ রান রাজস্থানের পক্ষে যথেষ্ট ছিল না।


বরং বল হাতে ভেল্কি দেখালেন হার্দিক পাণ্ড্য। ভারতীয় ক্রিকেট আকাশে যাঁর উদয় হয়েছিল পেসার অলরাউন্ডার হিসাবে। কেউ কেউ তো তাঁকে কপিল দেবের উত্তরসূরি পর্যন্ত বলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরই পতন। পিঠের চোট, অস্ত্রোপচার, সব মিলিয়ে হার্দিক বল করাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। এমনকী, জাতীয় দলের হয়ে তিনি বল না করায় প্রচুর প্রশ্ন উঠেছিল। বাদ পড়েছিলেন দল থেকেও। হার্দিক রবিবার প্রমাণ করে দিলেন, বোলার হিসাবেও ফুরিয়ে যাননি।


রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিলেন গুজরাত টাইটান্সের অধিনায়ক। শিকারের তালিকায় রাজস্থানের সেরা তিন ব্যাটার। বাটলার, সঞ্জু স্যামসন ও শিমরন হেটমায়ার।


হার্দিককে যোগ্য সঙ্গত করেন শামি, রশিদ খান-সহ বাকি সব বোলাররাই। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচ করে ১ উইকেট তুলে নেন রশিদ। ইনিংসের বিরতিতে ম্যাচের সম্প্রচারকারী চ্যানেলে যিনি বলছিলেন, ফাইনাল ভেবে নামিনি। আর পাঁচটা ম্যাচটের মতোই মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম সকলে। হয়তো সেই কারণেই আমাদের শান্ত, সংযত দেখিয়েছে।


রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ঋদ্ধিমান সাহা ও ম্যাথু ওয়েডের উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল গুজরাত। কিন্তু শুভমন ও হার্দিক চাপ কাটিয়ে দলকে বাইরে বার করে আনেন। ৩০ বলে ৩৪ রান করে হার্দিক নিশ্চিত করে দেন যে, অন্তত আস্কিং রেট নিয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে না। শেষ পর্যন্ত হয়ওনি। ১১ বল বাকি থাকতে সহজ জয় গুজরাতের।


আরও পড়ুন: রেঁধে খাওয়ানোর আবদার আমিরের, কী বললেন রশিদ?