কলকাতা: ভারতে সেপ্টেম্বর থেকে ‘আনলক ফোর’ শুরু হওয়ার কথা শনিবারই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। করোনার আতঙ্ক পুরোপুরি না কাটলেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিকত্ব ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরও ক্রিকেট মাঠে স্বাভাবিকত্বের খোঁজে। মরুদেশের এক প্রান্তে যখন চেন্নাই সুপার কিংস শিবিরে করোনা থাবা বসিয়েছে, তখন আর এক প্রান্তে প্র্যাক্টিসে নেমে পড়লেন দীনেশ কার্তিক, শুবমান গিলরা।



শনিবার আবু ধাবিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কেকেআরের ভারতীয় ক্রিকেটারেরা প্র্যাক্টিস শুরু করে দিয়েছেন। অনুশীলনের তত্ত্বাবধান করছেন সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার। যিনি আবার নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের ব্যাক্তিগত কোচ। কেকেআর শিবিরের একজন আবু ধাবি থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দকে বললেন, ‘বিদেশি ক্রিকেটারেরা এখনও কেউ আসেনি। আন্দ্রে রাসেল-সুনীল নারাইনের মতো ক্রিকেটার ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলছে। আবার ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার খেলা রয়েছে। অইন মর্গ্যান, প্যাট কামিন্স, টম ব্যান্টনদের আসতে তাই সময় লাগবে। আপাতত ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়েই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’ তিনি আরও বললেন, ‘আমাদের হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে শাহরুখ খানেরই দল ত্রিনিবাগো নাইট রাইডার্সেরও দায়িত্বে। সিপিএল শেষ না হলে উনিও আসতে পারবেন না। তাই এখন সহকারী কোচ অভিষেকই প্র্যাক্টিসের তত্ত্বাবধান করছেন।’



তবে কেকেআরের অনুশীলন শুরু করার আগে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তিন শহরে খেলা হবে আইপিএল। এর মধ্যে দুবাই ও শারজায় বাইরে থেকে কেউ গেলে ৬ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। তবে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় আবু ধাবিতে নিয়মের কড়াকড়ি রয়েছে। সেখানে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হয়। কেকেআর ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আবার বেস ক্যাম্প করেছে আবু ধাবিতে। তাই প্র্যাক্টিসে নামতে সমস্যায় পড়েছিলেন কার্তিকরা। পরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলার পর আইপিএলের দুই দলের জন্য নিয়ম শিথিল করা হয়। ৬ দিনের কোয়ারেন্টিনের পর মাঠে নামার অনুমতি মিলেছে। তাই প্র্যাক্টিস শুরু করে দিয়েছেন কার্তিকরা।



কোথায় হচ্ছে অনুশীলন? নাইট শিবিরের একজন ফোনে জানালেন, আবু ধাবির মূল স্টোডিয়ামেই প্র্যাক্টিস শুরু হয়েছে। চেন্নাই সুপার কিংস শিবির করোনার ধাক্কায় বেসামাল। দুই ক্রিকেটার-সহ মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলের অন্তত ১১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। তার জন্য কি আতঙ্ক বেড়েছে? শাহরুখের দলের এক সদস্য ফোনে বললেন, ‘সিএসকে শিবিরের খবর জানি। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে আমরা আতঙ্কিত হচ্ছি না। সুরক্ষাবিধি যাতে সকলে কঠোরভাবে মেনে চলে, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’



করোনা মোকাবিলায় কীরকম সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে? নাইট শিবিরের একজন ফোনে বললেন, ‘জৈব সুরক্ষা বলয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। প্র্যাক্টিস শুরু হওয়ায় টিমহোটেল থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সকলকে মাস্ক, গ্লাভস, ফেস শিল্ড পরতে হচ্ছে। মাঠের বাউন্ডারি লাইন পর্যন্ত সকলে মাস্ক পরে থাকছে। কিটব্যাগ-সহ সমস্ত ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। ক্রিকেটারেরা সকলে নিয়ম মেনে চলছে।’ তিনি আরও বললেন, ‘এই পরিস্থিতি নিয়ে সকলে ওয়াকিবহাল। কাউকে আলাদা করে সতর্ক করার দরকার পড়ছে না। তবে ক্রিকেটারেরা মাঠে ফিরতে পেরে সকলেই খুশি। জোরকদমে প্র্যাক্টিস শুরু করে দিয়েছে।’