কলকাতা: সবুজ বৃদ্ধির উদ্যোগ কয়েক বছর আগে থেকেই নিয়েছিল শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্স। শুরু করেছিল 'প্লান্ট আ সিক্স' প্রকল্প। ভাবনাটা ছিল মূলত দলের অন্যতম অংশীদার জুহি চাওলার। যে প্রকল্পে আইপিএলে কেকেআর ক্রিকেটারদের মারা প্রত্যেকটা ছক্কার জন্য একটি করে চারাগাছ রোপণের অঙ্গীকার করা হয়েছিল।


এবার আমফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য সম্প্রসারণে বিশেষ উদ্যোগ নিলেন জুহি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের তরফে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ, বিভিন্ন ফলের গাছ-সহ মোট ৫ হাজার চারাগাছ বসানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ছিল ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে। সেদিনই কেকেআরের এক প্রতিনিধি দল পৌঁছে গিয়েছিল সুন্দরবনের অন্তর্গত পাথরপ্রতিমা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া ঊষসী সেনগুপ্ত, সমাজকর্মী ঊর্মি বসু, নিউ লাইট কলকাতা ও মীর ফাউন্ডেশনের কয়েকজন সদস্য। সেখানে গিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে চারাগাছ বিলি করা হয়। পাশাপাশি নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকায় বসানো হয় ম্যানগ্রোভের চারা।


ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গুরুত্বের কথা বারবার জোর দিয়ে বলে থাকেন পরিবেশবিদ, বিজ্ঞানী ও সমাজকর্মীরা। শুধু বাস্তুতন্ত্রের স্বাভাবিকত্ব রক্ষা করার জন্যই নয়, ম্যানগ্রোভ প্রকৃতির রোষানল থেকে জনজীবনকে রক্ষা করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্বলও। আয়ালা থেকে শুরু করে আমফান, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমেছে দুর্যোগের মুখে ম্যানগ্রোভ প্রতিরক্ষার প্রাচীর তুলে দেওয়ায়। তবে প্রকৃতির ভয়ঙ্কর তাণ্ডবে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বারবার। সেই কারণে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ সম্প্রসারণে বিশেষ উদ্যোগ নিল কেকেআর।


শাহরুখ খানের দলের এক প্রতিনিধি এবিপি লাইভকে বললেন, 'আমাদের অন্যতম অংশীদার জুহি চাওলা পরিবেশ রক্ষায় বিশেষভাবে উদ্যোগী। গাছ বসানোর পাশাপাশি সবজু রক্ষা করা, প্লাস্টিক বর্জন ও রিসাইকেল করার মতো একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছেন। উনি নিজে বিভিন্ন জায়গায় বৃক্ষরোপণ করেন। উনিই এবার বৃক্ষরোপণের জন্য সুন্দরবন এলাকাকে বেছে নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গুরুত্বের কথা আমরা সকলেই জানি। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে খুব ক্ষতি হয়েছে ম্যানগ্রোভের। তাই কেকেআরের তরফে এই উদ্যোগ।'


আমফান বিপর্যয়ের পরেও বাংলার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল শাহরুখ-জুহির দল কেকেআর। বিশেষ ভ্যানে করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে। খাদ্য থেকে শুরু করে পোশাক, সবরকম সামগ্রীই বাংলার বিপর্যস্ত মানুষের জন্য পাঠিয়েছিল কেকেআর।


'প্লান্ট আ সিক্স' প্রকল্পে জুহি নিজে অনেকবার গাছ বসিয়েছেন কলকাতায়। রাজারহাটেও কেকেআরের তরফে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। আইপিএলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী এবার সব ম্যাচ হচ্ছে নিরপেক্ষ কেন্দ্রে। তাই বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা ইডেনে খেলার সুযোগ পেলেও কেকেআর এবার ঘরের মাঠে খেলবে না। তবে এবার করোনা আবহে আইপিএলের সমস্ত ম্যাচ হচ্ছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। তাই বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা মাঠে গিয়ে প্রিয় দলের সমর্থনে গলা ফাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে অতিমারি পরিস্থিতিতেও বাংলাকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করছে না কেকেআর।