চেন্নাই: মাত্র ১৩ বলে তখন ৩০ রান করে ফেলেছেন আন্দ্রে রাসেল। কেকেআর যে সামান্য হলেও জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, তার নেপথ্যে তখন ব্যাট হাতে রাসেলের বিধ্বংসী ফর্ম। ধারাভাষ্যকারেরাও তাঁকে ফের সেই পুরনো নামে ডাকতে শুরু করে দিয়েছেন। মাসেল রাসেল। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য যে নামে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারকে ডাকে ক্রিকেট বিশ্ব।


আর সেই রাসেলকে বল করতে এলেন তিনি। ম্যাচ জিততে ১২ বলে তখন কেকেআরের চাই ৪৪ রান। কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়। বিশেষ করে ক্রিজে যে রয়েছেন রাসেল।


মহম্মদ সিরাজের পরের ৬ বলে উঠল ১ রান! হ্যাঁ, লিখতে ভুল নয়, ঠিকই পড়েছেন। ১ রানই উঠল। আর সেখানেই কেকেআরের জয়ের স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে গেল। রাসেলের কৌশল ছিল খুব পরিষ্কার। নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা হরভজন সিংহকে নয়, নিজেই সমস্ত স্ট্রাইক নেবেন। খুচরো রান না নিয়ে বড় শট খেলবেন। ম্য়াচ জেতার জন্য যা তখন একমাত্র উপায়। অথচ রাসেলকে হাত খুলে মারার মওকাই দিলেন না সিরাজ। একের পর এক নিখুঁত ইয়র্কার করে গেলেন। যা আরসিবির জয়ের রাস্তায় শিলমোহর দিয়ে দিল।


আরসিবি ৩৮ রানে ম্যাচ জেতার পর সিরাজের ১৯তম ওভার নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে মুগ্ধতা। আপ্লুত আরসিবি অধিনায়ক বিরাট কোহলিও। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন সিরাজকে। বিরাট বললেন, 'রাসেলের বিরুদ্ধে সিরাজের ওভারটা অনবদ্য। রাসেলের বিরুদ্ধে ওর একটা ইতিহাস রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকে ও সম্পূর্ণ আলাদা বোলার। ওই ম্যাচে আমাদের জয় নিশ্চিত করে দেয়।'


পাশাপাশি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও এ বি ডিভিলিয়ার্সকে নিয়েও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেচেন বিরাট। বলেছেন, 'ম্য়াক্সওয়েল অসাধারণ। এ বিও তাই। এ বি ছন্দে থাকলে আর ওর ব্যাট চলতে শুরু করলে ওকে আটকানো অসম্ভব। মন্থর হয়ে যাওয়া পিচে আমরা ৪০ রান বেশি তুলেছিলাম।' আরসিবি-তে যোগ দেওয়া ইস্তক দুরন্ত ফর্মে ম্যাক্সওয়েল। বিরাট বলছেন, 'ও এই দলে ততটাই স্বচ্ছন্দ যতটা হাঁস স্বচ্ছন্দ জলে।'


পরপর তিন ম্যাচ জিতে লিগ তালিকার শীর্ষে বিরাটের আরসিবি। আইপিএলের ১৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম পরপর টুর্নামেন্টের প্রথম তিন ম্য়াচ জিতল আরসিবি। এর আগে ২০১৪ সালে পরপর দু ম্যাচ জিতেছিল তারা। তবে সেবার পয়েন্ট টেবিলে সপ্তম স্থানে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হয়েছিল তাঁদের।


নাইটদের স্বপ্নভঙ্গ, জয়ের হ্যাটট্রিক আরসিবির