মুম্বই: আইপিএলে (IPL) মঙ্গলবার রাজস্থান রয়্যালসকে (RR) ৪ উইকেটে হারিয়ে দিল রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (RCB)। তবে জয়ের আনন্দের মধ্যেও আরসিবি শিবিরে ক্ষোভ তৈরি হল একটি নো বলকে কেন্দ্র করে।


বিতর্কে তৃতীয় আম্পায়ার


আইপিএলে বর্তমানে নো বল কল করার দায়িত্ব থাকে তৃতীয় আম্পায়ারের উপর। যাতে গুরুত্বপূর্ণ কল মিস না হয়। তবে রাজস্থান রয়্যালস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচে তৃতীয় আম্পায়ারের কল করা এক নো বল কলকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।


কী হয়েছিল ?


রাজস্থান ইনিংসের শেষ ওভারে বল করতে আসেন বাংলার পেসার আকাশ দীপ। ওভারের দ্বিতীয় বলে তৃতীয় আম্পায়ার নো বল ডাকেন। এই নিয়েই বিতর্ক। নিয়ম অনুযায়ী বোলারের পায়ের প্রথম যেখানে পড়ছে, তা দাগের পিছনে থাকলেই, তাঁকে বৈধ বলে মনে করা হয়। পা মাটিতে পড়ার বল ঘষে অনেকটা এগিয়ে গেলেও তাতে কোনও সমস্যা নেই। আকাশ দীপের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটে। রিপ্লেতে দেখা যায়, ক্রিজে প্রথম যখন তাঁর পা পড়েছে, তখন তাঁর জুতোর সামান্য অংশ দাগের পিছনে রয়েছে। পরে তা আরেকটু এগিয়ে যায়। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত বদল করেননি। ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল বলেন, ‘স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, ওর পা দাগের পিছনে ছিল। তৃতীয় আম্পায়ার, তোমার কাছে এখনও সময় আছে, ভুলটা শুধরে নাও।’ তবে তা হয়নি। নো বলের জেরে ফ্রি-হিট পান সেট জস বাটলার, যাতে তিনি ছক্কাও হাঁকান।


দুরন্ত শাহবাজ


প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান রয়্যালস তুলেছিল ১৬৯/৩। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাঝের ওভারগুলোর পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল আরসিবি। একটা সময় তাদের স্কোর ছিল ৮৭/৫। সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু শাহবাজ আমেদের। সঙ্গী হিসাবে পেয়ে যান অভিজ্ঞ দীনেশ কার্তিককে। শেষ পর্যন্ত ২৬ বলে ৪৫ রান করে আউট হন বাংলার তরুণ। তাঁর ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা। কার্তিক ২৩ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।


ফের বাটলারের ঝড়


একবার নয়, দু-দু'বার প্রাণরক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত ১০ রানে থাকা জস বাটলারের (Jos Buttler) ক্যাচ নিজের বলে ফলো থ্রু-তে ফেলে দেন আকাশ দীপ (Akash Deep)। সেই ওভারেরই চতুর্থ বলে আকাশের বলে বাটলারের ক্যাচ ফেললেন ডেভিড উইলি।


শেষ পর্যন্ত সেই বাটলারই বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন। ৪৭ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত রইলেন ইংরেজ ক্রিকেটার। যিনি চলতি আইপিএলে সেঞ্চুরিও করেছেন। কীরকম বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন তিনি? বাটলার গোটা ইনিংসে কোনও বাউন্ডারি মারেননি। মেরেছেন হাফ ডজন ছক্কা। অন্যদিকে শিমরন হেটমায়ার ৩১ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। সব মিলিয়ে শেষ ৫ ওভারে ৬৬ রান যোগ করলেন দুজনে। একটা সময় ১১.৪ ওভারে ৮৬/৩ হয়ে যাওয়া রাজস্থান শেষ পর্যন্ত ১৬৯ রান তুলল। সেই সঙ্গে জমিয়ে দিল ম্যাচ।


চেনা ছকে বাজিমাত


টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আরসিবি অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসি। চলতি আইপিএলে কার্যত ম্য়াচ জেতার ফর্মুলাই হয়ে দাঁড়িয়েছে, টস জেতো, বিপক্ষকে আগে ব্যাট করতে পাঠাও। তারপর রান তাড়া করো। এবারের আইপিএলের গ্রুপ পর্বের খেলা হচ্ছে মহারাষ্ট্রের দুই শহর মুম্বই ও পুণেতে। সন্ধের পর থেকে শিশির পড়ছে। তাই পরের দিকে বল গ্রিপ করতে সমস্যায় পড়ছেন বোলাররা। সব অধিনায়কই তাই চাইছেন শুরুতে ফিল্ডিং করে নিতে। এবং রান তাড়া করতে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের শিশির সমস্যার ফায়দা তুলতে। ডুপ্লেসিও যে নিয়মের ব্যতিক্রম হতে দেননি।


শুরুতেই যশস্বী জয়সবালকে তুলে নিয়ে রাজস্থান শিবিরে ধাক্কা দিয়েছিলেন ডেভিড উইলি। তবে বাটলারের ক্যাচ দুবার পড়ায় সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি আরসিবি। দেবদত্ত পড়িক্কল তাঁর পুরনো দলের বিরুদ্ধে ২৯ বলে ৩৭ রান করেন। তারপর রাজস্থান ইনিংস জুড়ে শুধুই বাটলার ও হেটমায়ারের যুগলবন্দি। আরসিবি বোলারদের মধ্যে উইলি, হাসারাঙ্গা ও হর্ষলের। জবাবে ৫ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নিল আরসিবি।


আরও পড়ুন: বাংলার শাহবাজের দাপট, কোহলি-শুভমনের খুনসুটি, আইপিএলের সারাদিনের সব খবর