মুম্বই ও পুণে: শনিবার আইপিএল-এ ছিল আরও একটি ঘটনাবহুল দিন। এদিন ছিল দু’টি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দেয় রাজস্থান রয়্যালস। দ্বিতীয় ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৭৫ রানে হারিয়ে দেয় লখনউ সুপার জায়ান্টস। এদিন অসাধারণ নজির গড়েন রাজস্থানের লেগস্পিনার যুজবেন্দ্র চাহল। আইপিএল-এ চারটি মরসুমে ২০ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন তিনি। কেকেআর-এর হয়ে ব্যাটে-বলে লড়াই করেন আন্দ্রে রাসেল।


পাঞ্জাবকে হারাল রাজস্থান


রাজস্থানের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক ময়ঙ্ক আগরওয়াল। ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান তোলে পাঞ্জাব। ৪০ বলে ৫৬ রান করেন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। অপর ওপেনার শিখর ধবন করেন ১২ রান। তিন নম্বরে নেমে ২৭ রান করেন ভানুকা রাজাপক্ষে। চার নম্বরে নেমে ১৫ রান করেন ময়ঙ্ক। পাঁচ নম্বরে নেমে ঝোড়ো ইনিংস খেলেন উইকেটকিপার-ব্যাটার জীতেশ শর্মা। তিনি ১৮ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। লিয়াম লিভিংস্টোন ১৪ বলে ২২ রান করেন। ঋষি ধবন ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। 


রাজস্থানের হয়ে চাহল ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। 


রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন রাজস্থানের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ও জশ বাটলার। যশস্বী করেন ৪১ বলে ৬৮ রান। বাটলার করেন ৩০ রান। তিন নম্বরে নেমে ২৩ রান করেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। চার নম্বরে নেমে ৩১ রান করেন দেবদত্ত পাড়িক্কল। ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন শিমরন হেটমায়ার। 


পাঞ্জাবের হয়ে ২৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন আর্শদীপ সিংহ। একটি করে উইকেট নেন কাগিসো রাবাডা ও ঋষি ধবন।


কলকাতাকে হারাল লখনউ


লখনউয়ের কাছে ৭৫ রানে হেরে গেল কেকেআর। প্লে-অফে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হত কলকাতাকে। কিন্তু ম্যাচ হেরে কার্যত প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেল কেকেআর।


আজ টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে লখনউ সুপার জায়ান্টস। সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তাঁর ২৯ বলের ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কা ও চারটি বাউন্ডারি। দীপক হুডা করেন ৪১ রান। তাঁর ২৭ বলের ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি ও দু’টি ছক্কা। ক্রুণাল পাণ্ড্য করেন ২৫ রান। মার্কাস স্টোইনিস ১৪ বলে ২৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। তিনি ১৯-তম ওভারে শিবম মাভির বলে পরপর তিনটি ছক্কা মারেন। ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন আয়ুষ বাদোনি। ৪ বলে ১৩ রান করেন জেসন হোল্ডার।


কেকেআর-এর হয়ে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল। একটি করে উইকেট নেন টিম সাউদি, সুনীল নারিন ও শিবম মাভি।


ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক কে এল রাহুলের (০) উইকেট হারায় লখনউ। কোনও বল না খেলেই রান আউট হয়ে যান রাহুল। এরপর তিন নম্বরে নামা  হুডাকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন ডি কক। তাঁদের জুটিতে যোগ হয় ৭১ রান। ডি কক ফিরে যাওয়ার পর চার নম্বরে নেমে ক্রুণালও লড়াই করেন। শেষদিকে ঝোড়ো ব্যাটিং করেন স্টোইনিস ও হোল্ডার।


রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই বাবা ইন্দ্রজিতের (০) উইকেট হারায় কেকেআর। চতুর্থ ওভারে ফিরে যান অধিনায়ক শ্রেয়স (৬)। ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। এরপর ২৩ রানের মাথায় ফিরে যান অ্যারন ফিঞ্চ (১৪)। এরপর আউট হয়ে যান নীতীশ রানা (২)। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে কেকেআর। এই পরিস্থিতিতে রিঙ্কু সিংহকে (৬) নিয়ে লড়াই শুরু করেন রাসেল। তিনি ১৯ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। নবম ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি মারেন রাসেল। এই ওভারে হয় ২৫ রান। রাসেল যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, কলকাতার জয়ের আশা ছিল। তিনি ফিরে যেতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইনআপ। পরপর ফিরে যান অনুকূল রায় (০), টিম সাউদি (০), হর্ষিত রানা (২)। কিছুটা লড়াই করেন সুনীল (২২)।


লখনউয়ের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন আবেশ খান ও জেসন হোল্ডার। একটি করে উইকেট নেন মহসিন খান, দুশ্মন্ত্য চামিরা ও রবি বিষ্ণোই।