মুম্বই : আজাদ ময়দানে (Azad Maidan) মাঠকর্মীদের সঙ্গে তাঁবুতে রাতের পর রাত কাটানো থেকে আলো ঝলমলে ওয়াংখড়েতে (Wankhede Stadium) ব্যাটিং তাণ্ডব। ক্রিকেটার হিসেবে নাম করার স্বপ্ন দু'চোখে নিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিজের গ্রাম ভাদোহি থেকে মুম্বইতে পাড়ি দিয়েছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal)। কিন্তু স্বপ্নের পথে বাধা হয়েছিল অর্থাভাব। থাকার জায়গার অভাবে রাতের পর রাত থেকেছেন আজাদ ময়দানে মাঠকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের থাকার জন্য বানানো অস্থায়ী তাঁবুতে। খাওয়া-দাওয়া সহ মাসের খরচ চালানোর জন্য দীর্ঘদিন বেচতে হয়েছে ফুচকা তথা পানিপুরি।


অর্থের প্রয়োজনে রাতে ফুচকা বেচতেন যশস্বী জয়সওয়াল। একদিন তাঁর দোকানে খেতে এসেছিলেন সকালে যাঁদের সঙ্গে অনুশীলন সেরে এসেছিলেন, সেই সহ ক্রিকেটাররা। তাঁদের দেখে লজ্জা, অসম্মানে ছুটে পালিয়ে গিয়েছিলেন দোকান ছেড়ে। ভেবেছিলেন, আর নয়। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরে যাওয়ার ভাবনাও এসেছিল। কিন্তু শেষমেশ অবশ্য হাল ছাড়েননি। আর কঠিন লড়াইয়ের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চাপা লড়াইয়ের পর আপাতত নেটপাড়ায় আলোচনায় তিনি।


মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ হেরে গেলেও সকলের আলোচনায় যশস্বী জয়সওয়ালের দুরন্ত শতরান। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ৬২ বলে ১২৪ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন যশস্বী। যেখান থেকে কিছুটা দূরে আজাদ ময়দানের অস্থায়ী তাঁবুগুলো যেখানে কয়েক বছর আগেও ছিল তাঁর রাতের পর রাত থাকার আস্থানা। কঠোর পরিশ্রমে সাফল্যের সিঁড়ি ভাঙার পথটা অবশ্য মোটেই সহজ ছিল না। তবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের তথা ক্রিকেটের স্বপ্নের বাস্তব রূপধারণগুলো তো ঠিক এমনই।


আরও পড়ুন- ফিল্ডিং করতে গিয়ে হোঁচট, খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হল কেএল রাহুলকে


লড়াই জারি রাখার সুফল হিসেবে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে মুম্বইয়ের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেকের সুযোগ পেয়েছিলেন যশস্বী। যেবার ১৫ ম্যাচে ৮০.২১ গড়ে চমকে দেওয়া ১৮৪৫ রান করেছিলেন যশস্বী। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল ক্রিকেট খেলার সুবাদে ইনাম পান ঠিক পরের বছরই।য ২০২০-র আইপিএল নিলামে বড় দামে তাঁকে দলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। যারপর থেকে আইপিএলের রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যশস্বী। যাঁর দুরন্ত শতরানের পরে রাজস্থান দলে তাঁর ওপেনিং পার্টনার জস বাটলার যশস্বীর পিঠ চাপড়ে সোশালে ঘোষণা করেছেন, 'সুপারস্টার ইন মেকিং'। স্বপ্ন বোধহয় এভাবেই বাস্তব হয়। সত্যি হয়। পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক, লড়াই ঠিক যেন সাফল্যের রাস্তা খুঁজে এনে দেয়।




আরও পড়ুন: ফলাহারের সাতকাহন, কখন ফল খাবেন? কীভাবে ফল খাবেন?