কলকাতা: প্রায় ৯ বছর কেটে গিয়েছে। আইপিএলে ট্রফিহীন কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। শেষবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০১৪ সালে। তারপর থেকে শুধুই ব্যর্থতার ছবি। ২০২১ সালে ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছিল। এবারও কি খালি হাতেই শেষ হবে নাইটদের (IPL 2023) অভিযান? 


চলতি আইপিএলে ৯ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটি জিতেছে কেকেআর। হারতে হয়েছে হাফ ডজন ম্যাচে। কেকেআরের ভাঁড়ারে মাত্র ৬ পয়েন্ট। লিগ টেবিলে ৮ নম্বরে রয়েছে কেকেআর। এখান থেকে কি প্লে অফে ওঠা সম্ভব নাইটদের? 


খাতায় কলমে এখনও কেকেআরের আশা শেষ হয়ে যায়নি। তবে কাজটা ভীষণই কঠিন। কেকেআরের হাতে রয়েছে আর ৫টি ম্যাচ। সবকটি ম্যাচেই জিততে হবে নাইটদের। তবেই যদি প্লে অফের দরজা খোলে। কোন অঙ্কে এখান থেকেও প্লে অফে যেতে পারে কেকেআর? 


আইপিএলের নিয়ম বলছে, পয়েন্ট টেবিলের প্রথম চার দল প্লে অফে উঠবে। শীর্ষে থাকা দুই দল কোয়ালিফায়ার ওয়ান খেলবে। যে দল জিতবে, তারা সরাসরি পৌঁছে যাবে ফাইনালে। যে দল হেরে যাবে, তারা ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ পাবে। কোয়ালিফায়ার টু খেলবে তারা। পয়েন্ট টেবিলের তিন ও চার নম্বরে থাকা দুই দল নিজেদের মধ্যে এলিমিনেটর খেলবে। যে দল হারবে, তারা বিদায় নেবে। এলিমিনেটরের বিজয়ী দল কোয়ালিফায়ার ওয়ানের পরাজিত দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলবে। যে ম্যাচকে বলা হয় কোয়ালিফায়ার টু। সেই ম্যাচের বিজয়ী দল পৌঁছে যাবে ফাইনালে। 


পয়েন্ট টেবিলে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা পেতে লড়াই দশ দলের। ষোড়শ আইপিএল মাঝপর্বে এসে পৌঁছেছে। সব দলই অন্তত আটটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তাই শুরু হয়ে গিয়েছে প্লে অফের অঙ্ক কষা। 


প্লে অফে জায়গা পাওয়ার জন্য ১৬ পয়েন্টকে ম্যাজিক ফিগার ধরা হয়। ১৬ পয়েন্ট পেলে মোটামুটিভাবে প্রথম চার দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া যায়। আইপিএলের ইতিহাসে অবশ্য ব্যতিক্রমও রয়েছে। দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে মহার্ঘ ভূমিকা পালন করবে নেট রান রেট। 


এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে গুজরাত টাইটান্স। গতবার আইপিএলে প্রবেশ করেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই সাফল্য যে এমনি এমনি আসেনি, দল হিসাবে তাঁরা যে কতটা এগিয়ে, তা ফের একবার দেখিয়ে দিচ্ছেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। ৮ ম্যাচের মধ্যে ৬টি জিতে ১২ পয়েন্ট গুজরাতের। বাকি ৬ ম্যাচের মধ্যে ২টি জিতলেই প্লে অফে পৌঁছে যাবে গুজরাত।


লখনউ সুপার জায়ান্টস রয়েছে দু’নম্বরে। ৮ ম্যাচ খেলে ৫টি জিতেছেন কে এল রাহুলরা। তাঁদের পয়েন্ট ১০। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হেরে গেলেও প্লে অফের দৌড়ে ভালমতোই রয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। ৯ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতেছেন সঞ্জু স্যামসনরা। তাঁদের ঝুলিতেও রয়েছে ১০ পয়েন্ট।


শেষ বলের থ্রিলারে পাঞ্জাব কিংসের কাছে হেরে গেলেও পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। ৯ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। সিএসকে-র ভাঁড়ারে ১০ পয়েন্ট। পাঁচ নম্বরে রয়েছে শিখর ধওয়নের পাঞ্জাব কিংস। ৯ ম্যাচের মধ্যে ৫টি জিতে পাঞ্জাবের ঝুলিতেও ১০ পয়েন্ট। তবে রান রেটে সামান্য পিছিয়ে পাঞ্জাব। ধবনদের নেট রান রেট মাইনাস ০.৪৪৭। যে কারণে চেন্নাইয়ের থেকে এক ধাপ পিছিয়ে রয়েছে পাঞ্জাব।


বিরাট কোহলিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পয়েন্ট ৮। ছ’নম্বরে রয়েছে আরসিবি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সেরও পয়েন্ট ৮। তবে রোহিত শর্মাদের রান রেট মাইনাস ০.৫০২। সাত নম্বরে রয়েছে মুম্বই।


৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় আট নম্বরে রয়েছে কেকেআর। নাইটদের নেট রান রেট মাইনাস ০.১৪৭। তালিকার শেষ দুটি দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও দিল্লি ক্যাপিটালস। হায়দরাবাদের ৮ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। দিল্লির ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট।


ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে গেলে বাকি ৫ ম্যাচের সবকটিই জিততে হবে নাইটদের। আর শুধু জিতলেই হবে না, জিততে হবে বড় ব্যবধানে। যাতে নেট রান রেটে প্রতিপক্ষদের পেছনে ফেলা যায়। শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দলের কাছে তাই বাকি ৫ ম্যাচই ডু অর ডাই লড়াই। জিতলে স্বপ্ন বেঁচে থাকবে। হারলেই বিদায়। শেষ রাতে ওস্তাদের মার দেখাবেন নাইটরা?