কলকাতা: মাঝে আর মাত্র ২ দিন। মঙ্গলবার দুবাইয়ে বসছে আইপিএলের (IPL Auction) মিনি অকশন। নামে মিনি হলেও, শেষ মুহূর্তে প্লেয়ার কেনাবেচায় চমক দিতে পারে যে কোনও দল। নজর যেমন থাকবে বিদেশি ক্রিকেটারদের দিকে, সেরকম ঘরোয়া ক্রিকেটারদের নিয়েও চলতে পারে দড়ি টানাটানি। এই প্রতিবেদনে দেখে নেওয়া যাক, সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি, ভারতের এরকম কোন পাঁচ 'আনক্যাপড' ক্রিকেটারকে নিয়ে নিলামের টেবিলে ঝড় উঠতে পারে।


আর্শিন কুলকার্নি


বিগহিটার। সঙ্গে কার্যকরী পেসার। পরের বছরের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আয়োজিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ভারতীয় দলের সাফল্য ব্যর্থতা অনেকটাই নির্ভর করে রয়েছে আর্শিনের ওপর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে সফল হতে পারেন, সেই ঝলক দেখিয়েছেন আর্শিন। মহারাষ্ট্র প্রিমিয়ার লিগে ঈগল নাশিক টাইটান্সের হয়ে খেলেন তিনি। সেখানে চোখধাঁধানো সেঞ্চুরি করেন। মহারাষ্ট্র সিনিয়র দলের হয়েও খেলে ফেলেছেন। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে। রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের পরামর্শে তাঁকে ট্রায়ালে ডেকেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ দলের শিবির একইসঙ্গে পড়েছিল বলে যেতে পারেননি আর্শিন। শোনা যাচ্ছে, পাঞ্জাব কিংসও তাঁর সঙ্গে কথা বলে রেখেছে। আনক্যাপড পেসার অলরাউন্ডার হিসাবে তাঁকে নিয়ে নিলামে ঝড় উঠতে পারে।


শুভম দুবে


ফিনিশার, অথচ জাতীয় দলে কখনও খেলেননি। এরকম ক্রিকেটারের হদিশ পেলে ঝাঁপাতে পারে যে কোনও দল। বিদর্ভের শুভম দুবে তাই এবারের নিলামে অনেক দলেরই আগ্রহের কেন্দ্রে। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে তাঁর পারফরম্যান্স দেখে অনেকে প্রভাবিত। লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলেন। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে সাত ইনিংসে ২২১ রান করেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। স্ট্রাইক রেট? ১৮৭.২৮। বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচে ২১৩ রান তাড়া করে জিতেছিল  বিদর্ভ। যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে কোনও দলের ম্যাচ জেতার নজির। তাও ১৩ বল বাকি থাকতে জিতেছিল বিদর্ভ। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২০ বলে অপরাজিত ৫৮ রান করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন শুভম। যে ইনিংসে ছিল ছয় ছক্কা।


মুশীর খান


বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। আট বছরের এক বালকের বলে আউট হচ্ছেন যুবরাজ সিংহ। হতেই পারে যে, বাচ্চা ছেলেকে আনন্দ দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে আউট হয়ে গিয়েছিলেন যুবি। তবে সেই বালক যে ক্রিকেট মাঠে মজা করতে আসেনি, বরং প্রতিষ্ঠা পেতে এসেছে, তা প্রমাণ করে দিয়েছে। সেদিনের সেই বালক, আজকের মুশীর খান। ক্রিকেটার সরফরাজ খানের ভাই। বাঁহাতি স্পিনার-অলরাউন্ডার। মিডল অর্ডারে ব্যাট করেন। আসন্ন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে যে দুজন ক্রিকেটারারে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে, মুশীর তাঁদের একজন। গত মরশুমে মুম্বইকে কোচবিহার ট্রফির ফাইনালে তুলেছিলেন। ৬৩২ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছিলেন ৩২ উইকেট। অলরাউন্ডারকে পেতে আগ্রহ দেখাতে পারে সব দলই।


সমীর রিজভি


বয়স মাত্র ২০। ইউপি টি-টোয়েন্টি লিগে কানপুর সুপারস্টার্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছিলেন। জোড়া সেঞ্চুরি। টুর্নামেন্টে ৪৫৫ রান করেছিলেন সমীর রিজভি। তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁকে ট্রায়ালে ডেকেছিল। যাদের মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাব কিংসও। উত্তরপ্রদেশের রাজ্য দলের কোচ সুনীল জোশীর উদ্যোগে তাঁকে ডেকেছিল প্রীতি জিন্টার দল। তবে উত্তরপ্রদেশের অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে খেলছিলেন বলে যেতে পারেননি। উত্তরপ্রদেশের অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৬৫ বলে ৯১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন। সেই টুর্নামেন্টে জেতে উত্তরপ্রদেশই। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন সমীর। ফাইনালে ৫০ বলে করেছিলেন ৮৪ রান।


কুমার কুশাগ্র


এক ম্যাচেই সব হিসেব ওলট পালট হয়ে যেতে পারে। ঝাড়খণ্ডের কুমার কুশাগ্রকেই দেখুন। উইকেটকিপার-ব্যাটার। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব। তাহলে কেন তাঁকে নিয়ে নিলামের টেবিলে ঝড় উঠতে পারে? কারণ, বিজয় হাজারে ট্রফির একটা ইনিংস। মহারাষ্ট্রের ৩৫৫ রান তাড়া করতে নেমেছিল ঝাড়খণ্ড। ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ বলে অপরাজিত ৬৭ রান করেছিলেন কুশাগ্র। মেরেছিলেন ৫ ছক্কা। সেই ম্যাচে হাজির স্কাউটদের অনেকেই বলেছিলেন, চাপের মুখে এত ঝোড়ো ইনিংস খুব কম দেখেছেন। ঈশান কিষাণ জাতীয় শিবিরে থাকায় ঝাড়খণ্ডের হয়ে উইকেটকিপার হিসাবে সুযোগ পাচ্ছেন কুশাগ্রই।


আরও পড়ুন: দীপ্তির স্পিনের ফাঁদে অসহায় আত্মসমর্পণ, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় ভারতের


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে