সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আইপিএলে (IPL 2024) তাঁর দল প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে। তবে বল হাতে কাগিসো রাবাডা (Kagiso Rabada) নজর কেড়ে নিয়েছেন। গতি ও স্যুইংয়ের মিশেলে ব্যাটারদের বেশ বিব্রত করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ফাস্টবোলার। যিনি আইপিএলে খেলছেন পাঞ্জাব কিংসের হয়ে। ১১ ম্যাচে নিয়েছেন ১১ উইকেট।
কিন্তু আচমকাই দেশে ফিরে গেলেন প্রোটিয়া পেসার। প্রীতি জিন্টার দলের হয়ে শেষ দুটি ম্যাচ না খেলেই। পাঞ্জাব কিংস দল থেকে জানানো হয়েছে, সংক্রমণে আক্রান্ত রাবাডা। তাঁর শরীরের নীচের দিকে সফট টিস্যু ইনফেকশন (infection in the soft tissue of a lower limb) হয়েছে। তাই তড়িঘড়ি দেশে ফিরে গিয়েছেন রাবাডা।
কী এই সফট টিস্যু ইনফেকশন? কতটা ভয়ের এই সংক্রমণ?
এবিপি আনন্দ যোগাযোগ করেছিল কলকাতার নামী অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বিথুন সাহার (Dr. Bithun Saha) সঙ্গে। তিনি বললেন, 'সফট টিস্যু ইনফেকশনকে চিকিৎসার পরিভাষায় সেলুলাইটিস (Cellulitis) বলি আমরা। যে কোনও সয়েল বডি ইনফেকশন থেকে এটা হতে পারে। শরীরের কোথায় কেটে-ছড়ে গেলে সেখান থেকে হয়। আবার রোমকূপে যে সংক্রমণ হয়, যেগুলোকে চলতি কথায় বিষফোঁড়া বা লোমফোঁড়া বলি, সেখান থেকেও এটা হতে পারে।' ডক্টর বিথুন সাহা আরও বললেন, 'এই রোগের প্রকোপ কতটা ভোগাবে, তা এক একজন রোগীর ক্ষেত্রে এক একরকম। কারও শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে তার ক্ষেত্রে সংক্রমণ বেশি ছড়ায়। কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হলে অল্পতেই সেরে যায়। রাবাডা যেহেতু অ্যাথলিট, তাড়াতাড়ি সেরে যাবেন। কারণ, ওঁর শারীরিক সক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি হবে। খেলোয়াড়েরা অনেক বেশি সক্রিয়।'
আইপিএলের পরই শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২ জুন শুরু টুর্নামেন্ট। দ্বিতীয় দিনই নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩ জুন নিউ ইয়র্কে প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচে কি খেলতে পারবেন দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা পেস-অস্ত্র রাবাডা?
চিকিৎসক বিথুন সাহা বলছেন, 'সেলুলাইটিস (Cellulitis) হলে পায়ের যেখানে হয়েছে, সেখানে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ফুলে যায়। বিশ্রামটা খুব দরকার হয়। সঠিক চিকিৎসা হলে ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আশা করি সেরে উঠতে পারবেন রাবাডা।'
এই রোগের চিকিৎসা কি? ডক্টর সাহা বলছেন, 'আমরা অ্যান্টিবায়োটিকস দিই। সঙ্গে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি অর্থাৎ পেনকিলার দেওয়া হয় রোগীকে।' যোগ করলেন, 'তবে সংক্রমণ মাঝে মধ্যে ভোগায়। অনেকটা এরিয়া নিয়ে একটা সফট টিস্যুর মধ্যে হাই গ্রেড সংক্রমণ (rapid spread) থাকলে অস্ত্রোপচারেরও দরকার হয়। তা না হলে যন্ত্রণা বাড়তে থাকে।'
রাবাডার যে সংক্রমণ হয়েছে, তা যে খুব স্বাভাবিক নয়, মনে করেন চিকিৎসক। বিথুন বলছেন, 'খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ কম দেখা যায়। তবে হতেই পারে। হয়তো পড়ে গিয়ে ঘষা লেগে গেল। সঙ্গে সঙ্গে তো পরিষ্কার করা হয় না সব সময়। সেখান থেকেই হয়তো ব্যাকটিরিয়া ছড়িয়ে পড়ল।'
দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির প্রার্থনা করবে, যাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি সেরে ওঠেন দলের বোলিংয়ের সেরা অস্ত্র।
আরও পড়ুন: সচিনের নিরাপত্তারক্ষীর রহস্যমৃত্যু, আইপিএলের মাঝেই শোকস্তব্ধ তেন্ডুলকর পরিবার
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।