সন্দীপ সরকার, কলকাতা: গত বছরের ডিসেম্বরে মিনি নিলামের টেবিলে ঝড় উঠেছিল তাঁকে নিয়ে। অনেক দর কষাকষির পর ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় তাঁকে কিনে নিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। আইপিএলের ইতিহাসে যা রেকর্ড। এত দাম আগের ১৭ বছর কেউ কখনও পাননি। সচিন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলিরাও নয়।


কিন্তু বেগুনি-সোনালি জার্সি গায়ে চাপিয়ে মিচেল স্টার্ক (Mitchell Starc) বুঝেছিলেন, কীরকম অ্যাসিড টেস্ট হতে চলেছে তাঁর। রবিবারের আগে পর্যন্ত চার ম্যাচে ১৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে যিনি ১৫৪ রান খরচ করেছিলেন। সাফল্যের ঝুলিতে মোটে দুই শিকার ছিল। তাও সেই দুটিই দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে। বিশাখাপত্তনমে। বাকি তিন ম্যাচে ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দাম পাওয়া পেসারের ঝুলি ফাঁকাই ছিল। স্টার্ককে দলের বোলিং আক্রমণের মুখ করবে ভেবেছিল কেকেআর। সেই অস্ট্রেলীয় তারকাই কি এখন দলের মাথাব্যথা? জোরাল প্রশ্ন উঠছিল। সমালোচনা ছিঁড়ে খাচ্ছিল স্টার্ককে।


জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসাবে জোড়া ওয়ান ডে বিশ্বকাপজয়ী ফাস্টবোলার বেছে নিলেন কেকেআরের ঘরের মাঠকেই। বাঙালি নববর্ষে ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ২৮ রান খরচ করে ৩ উইকেট। তিনিই রবিবার নাইটদের সেরা বোলার। শেষ ওভারে বল করতে এসে মাত্র ৬ রান খরচ করে নিলেন জোড়া উইকেট। ইডেনে কেকেআর বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচের প্রথমার্ধ হয়ে রইল স্টার্ক-ময়।


চলতি আইপিএলে ডেথ ওভারে ব্রহ্মাস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার জন্য অজ়ি পেসারকে ভেবে রেখেছিল কেকেআর। কিন্তু ডেথ ওভারে স্টার্কের পারফরম্যান্স নিয়ে নিরন্তর প্রশ্ন উঠছিল। রবিবারের আগে পর্যন্ত ১৬-২০ ওভারের মধ্যে ৪ ওভার বল করে ৫৪ রান খরচ করেছিলেন বাঁহাতি ফাস্টবোলার। ওভার প্রতি সাড়ে ১৩ রান করে। রবিবার অবশ্য অন্য ছবি। ২০তম ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করে ২ উইকেট। প্রথমে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা নিকোলাস পুরানকে ফেরালেন। তারপর শেষ বলে ছিটকে দিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার আর্শাদ খানের স্টাম্প।


স্টার্ক নিজেও যেন স্বস্তিতে। ইনিংসের বিরতিতে বলছিলেন, 'দলের হয়ে অবদান রাখতে সব সময় ভাল লাগে। গোটা ইনিংসেই আমরা ভাল বল করেছি। আজ দুপুরের ম্যাচ। তাই আগের ম্যাচের তুলনায় অনেক বেশি গরম। মানিয়ে নিতে সময় লেগেছে। তবে উইকেটে দুরকম গতি রয়েছে। কোনও বল দ্রুত যাচ্ছে, কোনওটা থমকে যাচ্ছে।'


সতীর্থদেরও কৃতিত্ব দিয়েছেন স্টার্ক। বলেছেন, 'সুনীল দারুণ বল করেছে। বল হাতে সকলেই দুর্দান্ত ছিল। আমার কাজ ছিল স্যুইং করানো। ওপরের দিকে বল ফেলে স্যুইং করাতে চেয়েছিলাম। তবে পিচ দেখে কিছুটা পিছনে বোলিং শুরু করি।'


ছন্দে ফিরেছেন স্টার্ক। প্রতিপক্ষ শিবিরের উদ্বেগ বাড়ল বলে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।