চেন্নাই: লক্ষ্য সহজ ছিল না। তবে সেই লক্ষ্যের থেকে বেশ অনেকটাই দূরে থামতে হল চেন্নাই সুপার কিংস। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে (Chennai Super Kings vs Delhi Capitals) ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে ১৫৮  রানে থামল সিএসকে। বিজয় শঙ্করের ৬৯ রানের ইনিংস জলে গেল। ১৫ বছর পর চিপকে সিএসকেকে হারাল রাজধানীর ফ্র্যাঞ্চাইজি। চলতি আইপিএল মরশুমে (IPL 2025) নাগাড়ে তিন ম্যাচ জিতে আপাতত লিগ তালিকার শীর্ষে পৌঁছে গেল দিল্লি ক্যাপিটালস।


 



 


আজকের ম্যাচ জিততে ২০২১ সাল থেকে যা হয়নি, সেটাই করতে হত সিএসকেকে। ১৭৫-র অধিক রান তাড়া করতে হত তাঁদের। চিপকে দিনের বেলার ম্যাচে ১৮০-র অধিক রান মাত্র দুই বার সফলভাবে তাড়া করা সম্ভব হয়েছে। তাই সিএসকের সামনে যে লক্ষ্যটা কঠিন ছিল, তা বলাই বাহুল্য। শেষমেশ খালি হাতেই মাঠ ছাড়ল হলুদ ব্রিগেড। 


চলতি মরশুমে সিএসকের ওপেনিং জুটি একেবারেই রান পাচ্ছে না। বিগত তিন ম্যাচে ১১, ৮ ও ০ রানের ভেঙেছিল ওপেনিং পার্টনারশিপ। দিল্লির বিরুদ্ধে ১৪ রান যোগ করলেন সিএসকে ওপেনাররা। তিন রানে মুকেশ কুমারের বলে আউট হন রাচিন রবীন্দ্র। পরের ওভারেই স্টার্কের বলে পাঁচ রানে ফেরেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়ও। এদিন ব্যাটিং গভীরতা বাড়ানোর জন্য দলে ফেরা ডেভন কনওয়ের সংগ্রহ মাত্র ১৩ রান। পাওয়ার প্লেতেই তিন উইকেট হারিয়ে বিরাট বিপাকে পড়ে যায় হলুদ ব্রিগেড।


মাঝের ওভারে স্পিনারদের বিরুদ্ধে বড় শট হাঁকানোর জন্য বেশ সুখ্যাতি গড়েছেন শিবম দুবে। ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসাবে নেমে তিনি শুরুটাও তেমন করেছিলেন। আগের বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তবে তারপরেই বিপরাজকে কিছু পরামর্শ দেন অধিনায়ক অক্ষর। ঠিক পরের বলেই তিনি শিবম দুবেকে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন। রবীন্দ্র জাডেজা দুই রানে সাজঘরে ফেরার পর আজ সাত নম্বরে ব্যাটে নামেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। 


সমর্থকরা আশা করছিলেন অতীতের পাতা উল্টে ফের একবার ধোনি সিএসকেকে ম্যাচ জেতাবেন। তবে তেমনটা সম্ভব হয়নি। বিজয় শঙ্কর অপরপ্রান্তে ক্রিজে টিকে থাকলেও কোনও অবস্থাতেই রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ৪৩ বলে অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। ধোনি ও বিজয় ৮৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন বটে। তবে তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষমেশ ধোনি ৩০ ও বিজয় ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তবে ২৫ রানে ম্যাচ হারল হলুদ ব্রিগেড।


এর আগে এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ক্যাপিটালস অধিনায়ক অক্ষর। শুরুটা ক্যাপিটালসের খুব একটা ভাল হয়নি। জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক প্রথম ওভারেই খাতা খোলার আগে খলিল আমেদের বলে আউট হন। তবে অভিষেক পোড়েল ও কেএল রাহুল ইনিংস সামলে নেন। অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ গড়েন দুইজনে। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হতেই পোড়েলকে ৩৩ রানে আউট করেন রবীন্দ্র জাডেজা। অক্ষর পটেল নেমে শুরুটা ভাল করলেও, তিনিও ২১ রানের বেশি করতে পারেননি।


এমনকী সমীর রিজ়ভিও (২০) বড় রান পাননি। তবে অপর পক্ষে ব্যাটারদের আনাগোনার মাঝেও রাহুল টিকে থাকেন। তাঁর ক্রিজে উপস্থিতি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা বলাই বাহুল্য। গোটা ইনিংসটা তিনি সামলে এগিয়ে নিয়ে যান। দলকে লড়াইয়ের রসদ এনে দেন। ৩৩ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারে মাথিশা পাথিরানার বলে রাহুল যখন সাজঘরে ফেরেন, তখন তাঁর নামের পাশে লেখা ৭৭ রান। তিনি নিজের ইনিংসে ছয়টি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান। 


শেষের দিকে ট্রিস্টান স্টাবস ১২ বলে ২৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। এর সুবাদেই দু'শো না হলেও বেশ বড় রান তুলতে সক্ষম হয় দিল্লি ক্যাপিটালস। চার ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট নিয়ে এ ম্যাচে সিএসকের সফলতম বোলার খলিল আমেদ।