কলকাতা: সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী আর এবার সুয়াশ শর্মা। কেকেআর শিবিরে আরও এক রহস্যময় স্পিনার। যাঁর বলের গতি, লাইন, লেংথ কিছুই বুঝে ওঠা দায়। অনুশীলনেই নজর কেড়েছিলেন সবার। এবার প্রথমবার আইপিএলের মঞ্চে খেলতে নেমেই তুলে নিলেন তিন তিনটি উইকেট। আরসিবির বিরুদ্ধে ইডেনে নিজেদের প্রথম হােম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল কেকেআর। বিরাট কোহলির দলের বিরুদ্ধে ৮১ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় কেকেআর। আর সেই ম্যাচেই দুরন্ত পারফর্ম করে তিন তিনটি উইকেট তুলে নিলেন।
বয়স সদ্য উনিশ পেরিয়েছে। ২০০৩ সালের ১৫ মে দিল্লিতে জন্ম সুয়াশের। ছোটে থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল। এখনও পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ও লিস্ট এ ক্রিকেটে একটিও ম্যাচ খেলেননি। অনূর্ধ্ব ১৯ ও অনূর্ধ্ব ২৫ দলে খেললেও এখনও কোনও রাজ্য দলে খেলার সুযোগ পাননি সুয়াশ। কেকেআরের ক্যাম্পে প্রথমবার নীতিশ রানার সঙ্গে পরিচয় হয় সুয়াশের। কেকেআর অধিনায়ক নিজেও জানিয়েছেন যে সেই ক্যাম্পে সুয়াশের বোলিং দেখেই তাঁকে খেলানোর বিষয় ভাবনা চিন্তা করেছিলেন। এদিন নিজের ৪ ওভারের স্পেলে সুয়াশ ৩০ রান খরচ করলেও ৩ উইকেট তুলে নেন। শিকারের তালিকায় অভিজ্ঞ দীনেশ কার্তিক রয়েছেন। বাকি ২ জন অনুজ রাওয়াত ও করণ শর্মা।
এদিন, প্রায় সত্তর হাজারি ইডেনের পঁচাত্তর শতাংশই ছিল আরসিবির সমর্থক। বলা ভাল, কোহলির ভক্ত। মুর্শিদাবাদ, খড়্গপুর, মেদিনীপুর, আরও দূর-দূরান্ত থেকে সকলে ছুটে এসেছেন কোহলির ব্যাটিং দেখবেন বলে। ২০১৯ সালে কেকেআরের বিরুদ্ধে ইডেনে সেঞ্চুরি করেছিলেন। চলতি আইপিএলের প্রথম ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করেছেন। বৃহস্পতিবার হতাশ করলেন কোহলি। নারাইনের বল বুঝতে না পেরে বোল্ড হলেন। তারপরই ধস নামল আরসিবি ব্যাটিংয়ে। ২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮.৫ ওভারে ৬১/৫ হয়ে গেল আরসিবি। কোহলি ফিরতেই একদিকে শাহরুখ খানের সামনে নাইটদের জয়ধ্বনি। অন্যদিকে নৈশালোকের ইডেনে সমর্থকদের মধ্যে নামল আঁধার।
চার বছর পর ইডেনে খেলতে নেমেছিল কেকেআর। ২০১৯ সালের পর। মাঝে কোভিড অতিমারি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আইপিএলে ফেরানো হয়েছে হোম ন্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি। তবে বৃহস্পতিবারের ছবিটা দেখলে অনেকেরই অস্বাভাবিক মনে হতে পারত। ম্যাচের দুদিন আগেই জানা গিয়েছিল যে, টিকিট নিঃশেষ। কানায় কানায় ভরা গ্যালারি। আর সেই ম্যাচে কি না সমর্থনে পিছিয়ে কেকেআর!