কলকাতা: আইপিএলে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে গুজরাত জায়ান্টসকে হারাল পাঞ্জাব কিংস। রাজস্থান রয়্যালসের মানবিক উদ্যোগ। ফাঁকা মাঠে হবে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের ম্যাচ। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।
নাটকীয় জয়
আইপিএলের (IPL) জগতে মাত্র দু'বছর হল প্রবেশ করেছে। আর প্রথম বছরেই চ্যাম্পিয়ন। দ্বিতীয় মরশুমে রানার্স। গুজরাত টাইটান্স সব সময়ই প্রচারের আলোয় থেকেছে।
বৃহস্পতিবার ঘরের মাঠে অবশ্য তাদের যাবতীয় আলো কেড়ে নিল পাঞ্জাব কিংস (GT vs PBKS)। মজার ব্যাপার হল, গুজরাত টাইটান্স শিবিরে আঁধার নামালেন এমন একজন, যাঁর এবারের আইপিএলে খেলার কথাই নয়। কারণ, তাঁকে দলে নিতে চায়নি পাঞ্জাব কিংস। নিলামের টেবিলে তাঁকে ভুল করে কিনে ফেলেছিল পাঞ্জাব কিংস। বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর পাঞ্জাব কিংসের দুই মালিক - নেস ওয়াদিয়া ও প্রীতি জিন্টা জানান যে, তাঁরা এই ক্রিকেটারের জন্য প্যাডল তুলতে চাননি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যদিও অকশনার জানিয়ে দেন, একবার হ্যামার পড়ে গেলে আর সিদ্ধান্ত বদল করা সম্ভব নয়। পাঞ্জাব কিংস বাধ্য হয় তাঁকে দলে নিতে।
তিনি, শশাঙ্ক সিংহ (Shashank Singh)। প্রবল চাপের মুখে ২৯ বলে ৬১ রান করে পাঞ্জাব কিংসকে হারের হ্যাটট্রিকের হাত থেকে বাঁচালেন। শশাঙ্কের ব্যাটের শাসনে ম্লান হয়ে গেল শুভমন গিলের দাপুটে ইনিংস। ৩ উইকেটে ম্য়াচ জিতে আইপিএলে ঘুরে দাঁড়াল পাঞ্জাব কিংস।
রাজস্থানের উদ্যোগ
কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) একটা সময় পরিবেশরক্ষায় অনেক কাজ করেছে। কেকেআর ক্রিকেটারদের মারা প্রত্যেক ছক্কার জন্য বৃক্ষরোপণের মতো উদ্যোগ নিয়েছিল শাহরুখ খান, জুহি চাওলার দল।
এবার অভিনব এক উদ্যোগ নিল রাজস্থান রয়্যালসও (Rajasthan Royals)। রাজস্থানে মহিলাদের বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ এক ঘোষণা করল সঞ্জু স্যামসনদের (Sanju Samson) দল। শনিবার জয়পুরে ফাফ ডুপ্লেসি, বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (RCB) বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের। সেই ম্যাচে দুই দলের ক্রিকেটারেরা যে কটা ওভার বাউন্ডারি মারবেন, প্রত্যেকটি ছক্কা পিছু রাজস্থানে ৬টি করে বাড়িতে সৌরবিদ্যুতের ব্য়বস্থা করবে রাজস্থান রয়্যালস। যাতে পরিবেশরক্ষা হয়। যে প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'হ্যাশট্যাগ পিঙ্ক প্রমিস'।
আরসিবির বিরুদ্ধে ম্যাচকে রাজস্থান ও দেশের অন্যত্র মহিলাদের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে চায় রাজস্থান। এ ব্যাপারে রয়্যাল রাজস্থান ফাউন্ডেশন নামক রাজস্থান রয়্যালসের সামাজিক উদ্যোগকে এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আরসিবি ম্যাচে বিশেষ জার্সি পরে মাঠে নামবেন সঞ্জুরা।
মুগ্ধ ম্যাক্সওয়েল
শোয়েব আখতারের মতো নয় তাঁর রান আপ। পাকিস্তানের আখতার বাউন্ডারি লাইনের কাছ থেকে বল হাতে দৌড় শুরু করতেন। দেখলেই হাড় হিম হয়ে যেত ব্যাটারদের।
তাঁর চেহারাও শীর্ণকায়। অন্য পেসারদের মতো পেশিবহুল শরীর নয়। অথচ বল হাতে আগুন ছোটাচ্ছেন। চলতি আইপিএলে দ্রুততম বলটি বেরিয়েছে তাঁর হাত থেকেই। নিখুঁত ইয়র্কার। দুরন্ত লাইন-লেংথ। হইচই ফেলে দিয়েছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে আইপিএলে খেলা ময়ঙ্ক যাদব (Mayank Yadav)।
তাঁকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা জানালেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (RCB) অলরাউন্ডার গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল (Glenn Maxwell)। ভারতের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যাঁর ডাবল সেঞ্চুরি সাড়া ফেলে দিয়েছিল। তবে ময়ঙ্কের গতিতে পর্যুদস্ত হয়েছেন অজ়ি তারকাও। আরসিবি-র বিরুদ্ধে লখনউয়ের জয়ের নায়ক ময়ঙ্ক। যাঁকে দেখে অস্ট্রেলিয়ার শন টেটের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে ম্যাড ম্যাক্সের। আইপিএলে দ্রুততম বলটিও করেছিলেন শন টেট।
ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, 'পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচে ওর বোলিং দেখেছিলাম। পাঞ্জাবের ব্যাটারদের কয়েকজনকে গতিতে পরাস্ত করেছিল। আমিও অল্পবিস্তর হোমওয়ার্ক করে নেমেছিলাম। তবে এরকম কাউকে যতক্ষণ না খেলছো, কোনও হোমওয়ার্কই কাজে দেয় না। যতক্ষণ না হাত থেকে বলটা বেরিয়ে শরীর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসছে। তখনই লাইন-লেংথ বোঝার চেষ্টা শুরু হয়।'
ম্যাক্সওয়েল যোগ করেছেন, 'ও আমায় প্রথম বলটা করে হাই বাউন্সার। বেঙ্গালুরুর উইকেটে দুরকম গতি রয়েছে। প্রথম বলটা যা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে ধীরে আসে। আমার মনে হল, মন্দ নয়। তার পরের বলটাই কঠিন লেংথে পড়ল আর যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে দ্রুত এল। আমি ভেবেছিলাম লেংথ ধরতে পেরেছি। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে ওপরে ক্যাচ উঠে গেল।'
ফাঁকা মাঠে ম্যাচ
ভারতীয় ফুটবলে সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন পাওয়া দুই ক্লাব। ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC) ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)। যে দুই দল কলকাতাতে তো বটেই, ভারতের যে প্রান্তেই খেলুক না কেন, ভরে যায় গ্যালারি।
কিন্তু, দুই প্রিয় দলের একটি করে ম্যাচ মাঠে বসে দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন সমর্থকেরা। নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে কলকাতার দুই ক্লাব মোহনবাগান এসজি ও ইস্টবেঙ্গল এফসি যে দু'টি ম্যাচ খেলবে, সেই দুই ম্যাচে গ্যালারিতে কোনও দর্শক থাকবেন না। এই স্টেডিয়াম চলতি আইএসএলে যাদের ঘরের মাঠ, সেই পাঞ্জাব এফসি এমনই জানিয়ে দিয়েছে বৃহস্পতিবার। এদের বিরুদ্ধেই ম্যাচ দুটি খেলার কথা কলকাতার দুই দলের।