বেঙ্গালুরু: নিজেদের অ্য়াওয়ে ম্য়াচে বেঙ্গালুরু এফসি-র (Bengaluru FC) কাছে হেরে গেলেও দলের দাপুটে পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত (Carlos Quadrat)। তিনি মনে করেন, জিততে না পারলেও তাঁর দল যথেষ্ট আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে। কিন্তু ফুটবলে এমন অনেক ম্যাচেই হয় যে, ভাল খেলেও কোনও দল জিততে পারে না। তাঁর মতে, পেনাল্টি বক্সের মধ্যে যারা বেশি ভাল খেলে, তারাই জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে। 


বুধবার ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র বিরুদ্ধে ২-১-এ জয় পায় বেঙ্গালুরু এফসি। চলতি লিগে এটিই তাদের প্রথম জয়। এ দিন হারার মতো পারফরম্যান্স ছিল না ইস্টবেঙ্গলের। তা সত্ত্বেও হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। বেঙ্গালুরু এফসি-র প্রাক্তন কোচ কুয়াদ্রাত তাঁর পুরনো ঘরের মাঠে নতুন দল নামিয়েছিলেন। তাঁর দলে যে হোম টিমের কাছে আত্মসমর্পণ করে, তা একেবারেই বলা যায় না। তবু হাভিয়ে হার্নান্ডেজের এক অনবদ্য বাইসাইকেল কিকের গোলে চলতি লিগের প্রথম হার স্বীকার করতে হয় তাদের।


এ দিন ১৫ মিনিটের মাথায় মহেশ সিংয়ের দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু তাদের ছন্দপতন ঘটে তার ছ’মিনিট পরেই, যখন সুনীল ছেত্রীকে নিজেদের বক্সের মধ্যে ফাউল করে তাদের পেনাল্টির সুযোগ করে দেন মন্দার রাও দেশাই। পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা আনেন সুনীল। দ্বিতীয়ার্ধে হার্নান্ডেজের অসাধারণ গোলেই শেষ পর্যন্ত চলতি লিগের প্রথম জয় ও প্রথম পয়েন্ট অর্জন করে বেঙ্গালুরু এফসি। 


ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে কুয়াদ্রাত বলেন, ''আমার ভাল লাগছে যে, আমরা আজ সব দিক থেকেই আধিপত্য বিস্তার করেছি। বেঙ্গালুরু যেখানে চারটে শট মেরেছে, সেখানে আমরা ১২টা শট মেরেছি। এর মধ্যে দুটো শট আমরা লক্ষ্যে রাখতে পেরেছি। এই সংখ্যাটা আমাদের বাড়াতে হবে। তবে আমার দলের ছেলেদের কোনও দোষ দেব না। তাদের চাপে ফেলতেও চাই না আমি। সমর্থকদের এবং আমাদেরও সবাইকে বুঝতে হবে, ফুটবলে এ রকমই। বক্সের মধ্যে কে কী রকম খেলছে, তার ওপর নির্ভর করে সব কিছু। ওরা দুটো শট গোলে রেখেছে, দুটো থেকেই গোল পেয়েছে। আমরা কিন্তু অনেক সুযোগ হাতছাড়া করেছি। সুনীল আজ খুবই স্মার্টগেম খেলেছে। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়েও সন্দেহ রয়েছে আমার। আমাদেরও এই ম্যাচে ও গত ম্যাচে নিশ্চিত পেনাল্টি দেওয়া হয়নি। এই দুটো পেনাল্টি পেলে হয়তো আমরা অন্য জায়গায় থাকতাম।'' 


তাঁর দলের খেলোয়াড়রা যে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছেন, এতেই সন্তুষ্ট লাল-হলুদ কোচ। বলেন, ''ফুটবলে সুযোগ তৈরি করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রতি ম্যাচেই অনেক সুযোগ তৈরি করছি। দলের ছেলেরা যে আমাদের সিস্টেমটা বুঝতে পারছে এবং সেই অনুযায়ী খেলতে পারছে, এতে আমি খুশি। সুযোগ তৈরি হতে থাকলে গোলও আসবে।''


প্রাক্তন ক্লাবের ঘরের মাঠে অন্য দল নিয়ে নামার অনুভূতি প্রসঙ্গে এ দিন আইএসএল চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু এফসি-র কোচ কুয়াদ্রাত বলেন, ''বেঙ্গালুরুর সঙ্গে আমার অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। এখানে এসে অনেক কিছু মনে পড়ে যাচ্ছে। তবে এই ম্যাচে বেঙ্গালুরুকে আমি শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম, যা সম্ভব হয়নি। অন্য ক্লাবে চলে যাওয়া সত্ত্বেও এখানকার সমর্থকেরা যে এখনও আমাকে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে, তা দেখে খুব ভাল লাগছে।'' 


বেঙ্গালুরুর মাঠেও এক ঝাঁক লাল-হলুদ সমর্থক দেখে অভিভূত কুয়াদ্রাত বলেন, ''ম্যাচের পর আমরা সমর্থকদের কাছে গিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে আসি। সব ম্যাচেই সমর্থকদের সাহায্য পাচ্ছি আমরা। ওরা আমার নাম লেখা একটা জ্যাকেটও উপহার দিয়েছে আমাকে। আমার খুবই ভাল লেগেছে। তবে ওদের জয় এনে দিতে না পেরে খুব খারাপ লাগছে। আশা করি, আমাদের ছেলেদের পারফরম্যান্স ওদের গর্বিত করবে। এই ম্যাচে আমাদেরই তিন পয়েন্ট পাওয়ার কথা ছিল।''


                                                                                                                                                                                            তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল