ভুবনেশ্বর: ফের এগিয়ে থেকেও হার মানতে হল ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে (East Bengal FC)। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ৭৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকার পরে দু’মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল খেয়ে ১-২-এ হেরে মাঠ ছাড়তে হল লাল-হলুদ বাহিনীকে। গত ম্যাচেও বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও হার মানে ইস্টবেঙ্গল। গত মরশুমে এ ভাবে হেরে ১১ পয়েন্ট খুইয়েছিল তারা। কোচ ও দলে আমূল পরিবর্তন এলেও মনে হচ্ছে তাদের সেই রোগ এখনও সারেনি। টানা তিনটি ম্যাচে জিতে নয় পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল গোয়ার দল। ইস্টবেঙ্গল সাত থেকে নেমে গেল আটে। 


শনিবার এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে হোম ম্যাচ খেলতে নামলেও তা হয় ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে। তাই ঘরের মাঠের সুবিধা বলতে যা বোঝায়, তা পুরোপুরি পায়নি ইস্টবেঙ্গল। নিজেদের শহরে বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা উপেক্ষা করেও প্রিয় দলের খেলা দেখতে যাওয়া কিছু সমর্থক ছাড়া আর তেমন কেউই ছিল না কার্লস কুয়াদ্রাতের দলকে সমর্থন করার জন্য। তাই বলে দল যে এতটা খারাপ পারফরম্যান্স দেখাবে, তা বোধহয় ভাবতে পারেননি কেউই। 


দু’সপ্তাহেরও বেশি সময়ের বিশ্রামে যেন লাল-হলুদ বাহিনীর মেশিনে জং পড়ে গিয়েছিলে। সেই জং ছাড়াতেই প্রায় পুরো ম্যাচ লেগে যায় তাদের। প্রথমার্ধে যাও বা কিছুটা ছন্দে ছিল ইস্টবেঙ্গল, দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কার্যত পুরোটাই নিজেদের হাতে তুলে নেন সন্দেশ ঝিঙ্গনরা। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া সত্ত্বেও ম্যাচের শেষে জয়ের হাসি মুখে নিয়েই মাঠ ছাড়ে মানোলো মার্কেজের দল। 


এ দিন ৪১ মিনিটের মাথায় অসাধারণ একটি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন নাওরেম মহেশ সিং। নন্দকুমারের ক্রস থেকে করা এই গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে অদ্ভূত ভাবে নিজেদের গুটিয়ে নেয় লাল-হলুদ বাহিনী। সেই সুযোগ নিয়ে তাদের পাল্টা চেপে ধরে এফসি গোয়া। সারা ম্যাচে যেখানে মাত্র একটি শট গোলে রাখতে পেরেছে ইস্টবেঙ্গল, সেখানে গোয়ার দল সাত-সাতটি শট গোলে রাখে। ৭৪ ও ৭৫ মিনিটের মাথায় যথাক্রমে সন্দেশ ও ভিক্টর রড্রিগেজের গোলে চলতি লিগের তৃতীয় জয় পায় সাগরপাড়ের দল। 


তাও এ দিন দলের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় নোয়া সাদাউইকে ছাড়াই মাঠে নামে এফসি গোয়া। চোটের কারণে এ দিন স্কোয়াডেই ছিলেন না নোয়া। তা সত্ত্বেও যে ভাবে দ্বিতীয়ার্ধে প্রাধান্য বিস্তার করে তারা, তার প্রশংসা করতেই হবে। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল যে ভাবে এক গোলে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয়ার্ধে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকে, তার কোনও সমালোচনাই যথেষ্ট নয়।