কলকাতা: গত মরসুমে হিরো আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আগামী মরসুমের জন্যও হুয়ান ফেরান্দোকে কোচের পদে বহাল রাখল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সবুজ-মেরুন বাহিনী নতুন মরসুম শুরু করবে এএফসি কাপের ম্যাচ দিয়ে। যদিও এএফসি এখনও চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করেনি। তবে ফেরান্দো তাঁর দল নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়বেন ১৫ জুলাই থেকে।


আরও এক মরশুমের চুক্তির পর ফেরান্দোর প্রতিক্রিয়া, ''আগামী মরসুমেও মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কোচ হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় আমি খুশি। এ জন্য দলের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আগামী মরসুমের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। তাই সমর্থকদের কাছে আমাদের দায়িত্ব ও তাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এই ক্লাবের দর্শনই হল প্রতি বছর উন্নতি করা। এ বার দল আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আইএসএলে এ বারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য থাকবে এএফসি কাপে ভল ফল করা।''


এ বারের লিগের শেষটা যে রকম রোমহর্ষক ও ধারাবাহিক সাফল্য দিয়ে করেছে চ্যাম্পিয়ন এটিকে মোহনবাগান, লিগ পর্বে তাদের চলার পথ কিন্তু এতটা মসৃণ ছিল না। এমনকী প্লে অফ পর্বেও ফাইনালের আগে তাদের পারফরম্যান্স সমর্থকদের বেশ চিন্তায় রেখেছিল। কারণ, দুই সেমিফাইনালের একটিতেও নির্ধারিত সময়ে কোনও গোল করতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুট আউটে ৪-৩ জিতে ফাইনালে ওঠে তারা।


একটা সময় যে রকম গোলখরা দেখা গিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান শিবিরে, তাতে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল আদৌও তারা প্লে-অফ পর্বে উঠতে পারবে কি না। কিন্তু লিগের শেষ বেলায় সঠিক ছন্দ ও ফর্মে ফিরে আসায় অবশেষে বাজিমাত করেন দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, হুগো বুমৌসরা। তাদের লিগপর্বের দৌড় সমর্থকদের কখনওই খুব একটা স্বস্তি দেয়নি। এই জয় তো এই হার, এই কার্ড সমস্যা তো এই চোট-আঘাত। দুই বিদেশি ফুটবলার জনি কাউকো ও ফ্লেরোন্তিন পোগবাকে চোটের জন্য দেশে ফেরতও পাঠিয়ে দিতে হয়। ফলে ধারাবাহিকতার অভাব খুব বেশি রকমই ছিল তাদের।


ঘরের মাঠে চেন্নাইন এফসি-র কাছে ১-২-এ হার দিয়ে শুরু করে তারা। তবে পরের ম্যাচেই দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা এবং কোচিতে গিয়ে কেরালা ব্লাস্টার্সকে ৫-২-এ হারিয়ে আসে। এই দুর্দান্ত জয়ের আত্মবিশ্বাসই তাদের পরের তিনটি ম্যাচেও অপরাজিত থাকতে সাহায্য করে। যার মধ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দী ইস্টবেঙ্গল এফসি-র বিরুদ্ধে জয় ও মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র-ও ছিল।


এফসি গোয়ার কাছে ০-৩ হারটা ছিল তাদের দ্বিতীয় অ্যালার্ম বেল। পরের তিনটি ম্যাচে তারা ফের জেতে এবং চতুর্থটিতে ড্র করে। হায়দরাবাদ এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি ও জামশেদপুর এফসি-কে হারায় তারা। ড্র করে ওডিশার বিরুদ্ধে। ফের একটা ধাক্কা আসে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে। তাদের কাছে হারেন প্রীতম কোটালরা। এর পরের ন’টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র চারটিতে জেতে তারা। দুটিতে ড্র ও তিনটিতে হার। হায়দরাবাদে গিয়ে ফিরতি লিগে হারের পর তাদের সামনে শেষ দুই ম্যাচ (ফিরতি ডার্বি-সহ) হয়ে ওঠে নক আউটের মতো। জিততে পারলে প্লে অফে উঠতে পারবে তারা, না পারলে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা অবশ্যই ছিল। সেই জায়গা থেকে প্লে অফে পৌঁছে চ্যাম্পিয়নের ট্রফিও জিতে নেয় তারা। এই অভিযান সত্যিই মনে রাখার মতো ছিল।


ফেরান্দোর চুক্তির মেয়াদবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ক্লাবের কর্ণধার ড. সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বলেন, ''হুয়ানের সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে পেরে আমরা খুশি। হুয়ান গতবার আমাদের ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। নতুন মরসুমে আমরা ওঁর কাছ থেকে আরও ট্রফি ও সাফল্য প্রত্যাশা করছি।''                              তথ্য সৌ: আইএসএল মিডিয়া