বুয়েনস আইরেস: ফুটবল মাঠে তাঁর কাঁধে তখন দেশকে জেতানোর দায়িত্ব। ২৮ বছরের ট্রফি খরা কাটানোর পরীক্ষা। গোটা দেশ মহাতারকা লিওনেল মেসির পাশাপাশি তাঁর দিকেও তাকিয়েছিল।
আর্জেন্তিনার স্ট্রাইকার সেই লউতারো মার্তিনেজ় রবিবার ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় যখন রিও দে জেনেইরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে নেমেছিলেন, তাঁর পাঁচ মাসের সন্তান তখন হাসপাতালে। জীবনের সঙ্গে লড়াই করছিল। তবু ব্যক্তিগত উদ্বেগ ভুলে মাঠে নেমেছিলেন মার্তিনেজ়। দেশকে কোপা চ্যাম্পিয়নও করেছেন।
আর্জেন্তিনা সংবাদমাধ্যমের খবর, ডায়াপার বদলের সময় খাট থেকে পড়ে গিয়েছিল মার্তিনেজ়ের ৫ মাসের কন্যাসন্তান নীনা। তাকে মেন্দোজ়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় চোট লেগেছিল তার। ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর তাকে সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে।
দেশের ফিরেই হাসপাতালে ছুটেছিলেন ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার। কোপা আমেরিকায় যিনি আর্জেন্তিনার জার্সিতে দু গোল করেছেন।
২৮ বছরের ট্রফি খরা কেটেছে আর্জেন্তিনার। ১৯৯৩ সালে শেষবার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লা আলবিসেলেস্তেরা। সেটাই ছিল দিয়েগো মারাদোনার দেশের বড় মঞ্চে শেষ আন্তর্জাতিক ট্রফি। মাঝে শুধু লিওনেল মেসিরা অলিম্পিক্সে সোনা জিতেছিলেন। যদিও অলিম্পিক্সের ফুটবলকে কখনও কুলীন তকমা দেওয়া হয়নি। কারণ, অলিম্পিক্সে বেশিরভাগ দেশই অনভিজ্ঞ এবং উঠতি ফুটবলারদের পাঠায়। মাঝের ২৮ বছরে সাতটি ফাইনাল খেলেছে আর্জেন্তিনা। কিন্তু বারবার রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। অবশেষে মারাকানায় মোক্ষলাভ। নেমার দ্য় সিলভা স্য়ান্টোস জুনিয়রের ব্রাজ়িলকে ১-০ হারিয়ে ট্রফি জিতেছেন মেসি-মার্তিনেজ়রা।
গোটা টুর্নামেন্টে অবিশ্বাস্য ফর্মে ছিলেন মেসি। নিজে ৪ গোল করেছেন। ৫টি গোল করিয়েছেন। ফাইনালের আগে পর্যন্ত আর্জেন্তিনার করা মোট ১১টি গোলের বাকি দুটোর ক্ষেত্রে যাঁরা ফাইনাল পাস বাড়িয়েছিলেন, তাঁদের বলের জোগান দিয়েছিলেন মেসিই। ফাইনালের পর একাধিক স্বীকৃতি পেলেন আর্জেন্তিনার অধিনায়ক। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার, সেরা ফুটবলার, এবং সর্বোপরি সুদৃশ্য কোপা আমেরিকা ট্রফি। যেটা মোট ১৫ বার পেল আর্জেন্তিনা।
আর টুর্নামেন্টে দু গোল করে দলের ট্রফি জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন মার্তিনেজ়ও।