নয়াদিল্লি: এএফসি এশিয়া কাপ যদিও এখনও অনেক দেরি, কিন্তু প্রস্তুতির দিক থেকে দেখতে গেলে ভারতীয় দলের কাছে বোধহয় সময় তেমন বেশি নেই। তাই এখন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে ভারত। চলতি ভিয়েতনাম সফর সেই প্রস্তুতিরই প্রথম ধাপ। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে শনিবার সন্ধ্যায় হো চিমিন সিটির থং নহত স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে ইগর স্টিমাচের দলের এশিয়া কাপ প্রস্তুতি।


এই ম্যাচের আগে তারা একসঙ্গে বেশি প্র্যাকটিস সেশন না পেলেও ভারতীয় দল যে শনিবারের ম্যাচে আত্মবিশ্বাস নিয়েই নামবে, তা কোচ স্টিমাচের কথা থেকেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। ফিফা ক্রমতালিকায় যদিও সিঙ্গাপুর ভারতের (১০৪) চেয়ে অনেকটাই পিছনে, ১৫৯ নম্বরে, কিন্তু তাই বলে তাঁর দল প্রতিপক্ষকে হালকা ভাবে নিক, তা একেবারেই চান না ক্রোয়েশিয়ান কোচ।


ভারতীয় দলের বেশির ভাগ সদস্যই তরুণ। এশিয়া কাপের আগে তাঁদেরও নিজেদের প্রমাণ করার ও কোচের পছন্দের খাতায় নিজেদের নাম তোলার সুযোগ এটা। তাই তাঁর দল এই ম্যাচে খারাপ খেলবে না বলেই ধারণা স্টিমাচের। গত দশ বছরে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হয়নি ভারতীয় দল। কিন্তু এই দশ বছরে নিজেদের অনেকটাই উন্নত করে তুলেছে তারা।


সহজ নয় প্রতিপক্ষ


দশ বছর আগে শেষ মুখোমুখিতে ভারত হেরেছিল ০-২-এ। আরও জানলে অবাক হতে পারেন, মোট ১২ বারের মুখোমুখিতে ভারত যেখানে জিতেছে চারবার, সেখানে সিঙ্গাপুর জিতেছে সাতবার। একবার মাত্র ড্র হয়েছে। গত শতকে দুই দেশের ফুটবল দলের মধ্যে বেশিরভাগ ম্যাচই হয় মারডেকা কাপে। এই শতকে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ও ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মুখোমুখি হয় তারা।


প্রতিপক্ষের ক্রমোন্নতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভারতের কোচ বলেন, “সম্প্রতি সিঙ্গাপুর যথেষ্ট উন্নতি করেছে। ওদের নতুন কোচ এমন একটা সিস্টেমে দলকে খেলান, যাতে তাদের প্রতিপক্ষের কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। তবে আমি আমার ছেলেদের বলেছি, ওদের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে এবং ওদের জন্য আমাদের কাছে কী কী আছে, তা দেখাতে”। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে কথাগুলি বলেন তিনি।


প্রতিপক্ষ নিয়ে তিনি যে যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করেছেন, তা কোচের কথাতেই স্পষ্ট। বলেন, “হাই প্রেসিং অঞ্চলগুলোতে ওরা যথেষ্ট তৎপর। সারা মাঠ জুড়ে ওরা কী ভাবে প্রেসিং ফুটবল খেলে, তা পর্যবেক্ষণ করেছি আমি। প্রতিপক্ষকে এ ভাবে ওরা কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দেয়। এই ব্যাপারে তাই ওদের এগিয়েই রাখতে হচ্ছে”।


ভরসা সেই সুনীল


এশিয়া কাপের বাছাই পর্বে একশো শতাংশ সাফল্যের রেকর্ড বজায় রাখার পর সম্প্রতি শেষ হওয়া ডুরান্ড কাপে খেললেও দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়েরই ফিটনেস সমস্যা আছে বলে মনে করেন স্টিমাচ। এমনকী ফিটনেসের দিক থেকে তিনি নিজের দলের ছেলেদের কিছুটা পিছিয়েই রাখছেন। এই অবস্থা সামলানোর জন্য তাই স্টিমাচ দলকে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে মাঠে পরামর্শ দিয়েছেন।


সুনীল ছেত্রী এশিয়া কাপের মতো ডুরান্ড কাপেও ফর্মে ছিলেন। তিন মাস পরে ভারতীয় দলের হয়ে নেমে সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারেন কি না, দেখার। আশিক কুরুনিয়ান, যিনি এশিয়া কাপের বাছাই পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তাঁর ওপরও নজর থাকবে ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের।


                                                                                                                                                                                  ----- ছবি ও তথ্য: আইএসএল মিডিয়া