ভুবনেশ্বর: বিস্ময় বালক বুধিয়া সিংহের ভবিষ্যৎ কী? সে ভুবনেশ্বরের সাই হস্টেলে যেতে রাজি নয়। কারণ, সেখানে তাকে বেশি খাবার দেওয়া হয় না। তার চেয়েও বড় কথা, নিজেকে ম্যারাথন রানার হিসেবে দেখতে চাওয়া বুধিয়াকে স্প্রিন্টার বানানোর চেষ্টা করছেন সাই-এর কোচ। যা বুধিয়ার একেবারেই পছন্দ নয়। এখানেই শেষ নয়, হস্টেলের জীবনযাত্রা বুধিয়ার না-পসন্দ। তার মনে হচ্ছে, সে যেন কারাগারে বন্দি। সেই কারণে গরমের ছুটির পর এক সপ্তাহ কেটে গেলেও হস্টেলে ফেরেনি সে। আর ফিরবে কি না সেটাও স্পষ্ট নয়। ফলে এই প্রতিভাবান দৌড়বীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।


 

২০০৬ সালে মাত্র ৪ বছর বয়সে পুরী থেকে ভুবনেশ্বর পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার রাস্তা দৌড়ে সারা দেশের নায়ক বনে গিয়েছিল বুধিয়া। ২০০৭ সালে খুরদা জেলা শিশু কল্যাণ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে সাই হস্টেলে ভর্তি করে দেয় ওড়িশা সরকার। তার ম্যারাথনে ছোটা নিষিদ্ধ করা হয়। রাজ্য সরকারই তার হস্টেলে থাকা, খাওয়া, পোশাকের খরচ দিচ্ছে। এখন ভুবনেশ্বরের একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে বুধিয়া।

 

সে হস্টেলে না ফেরায় তার বাড়িতে দু বার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোচ রুপানিতা পাণ্ডা। কিন্তু সেই চিঠির কোনও জবাব আসেনি। বুধিয়ার বড় দিদি সস্মিতা সিংহ বলেছেন, তাঁর ভাই কাকার বাড়িতে গিয়েছে। এ মাসের শেষদিকে ফিরে আসবে।

 

কিন্তু বুধিয়া আর কোনওদিন হস্টেলে ফিরবে কি না সেটা স্পষ্ট হচ্ছে না। এ বছরের এপ্রিলে একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে বলেছিল, তাকে মাত্র ১,৫০০ মিটার দৌড়তে বলেন কোচ। তিনি ছোটার গতি বাড়াতে বলছেন। কিন্তু সে জোরে ছুটতে চায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্লান্ত না হয়ে ছুটতে পারে সে। ম্যারাথনে ছোটার জন্যই তার জন্ম হয়েছে। তার ম্যারাথনের জন্য বিশেষজ্ঞ কোচ চাই। তাছাড়া তাকে হস্টেলে মাত্র তিন-চার টুকরো মাংস খেতে দেওয়া হয়। সে যখন চার বছরের ছিল, তখনই এর চেয়ে বেশি খেত। হস্টেলে সে খাবারও পাচ্ছে না, কোচিংও পাচ্ছে না। মনে হচ্ছে জেলে বন্দি রয়েছে। সে আর এখানে থাকতে চায় না।

 

তখনই বুধিয়ার হস্টেল ছেড়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।