কলকাতা: সামনে এশীয় গেমস। যে টুর্নামেন্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা অর্জন করা লক্ষ্য মেহুলি ঘোষের (Mehuli Ghosh)। আর সেই লক্ষ্যের দিকে বড় এক পদক্ষেপ করলেন বাংলার শ্যুটার। ওএনজিসি-র প্রতিনিধিত্ব করে ভোপালে জাতীয় স্তরের শ্যুটিংয়ে পদক জিতলেন তিনি। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে সোনা জিতেছেন মেহুলি। রুপো জিতেছেন স্বর্ণালী রায়। যিনি প্রতিযোগিতায় বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
স্বর্ণালী সম্পর্কে মেহুলির বোন। এবিপি লাইভকে মেহুলির মা মিতালি বলছিলেন, 'ভোপালে সোনা জিতেছে মেহুলি। রুপো জিতেছে স্বর্ণালী। মেহুলির মাসতুতো বোন স্বর্ণালী। দুজনের সাফল্যে আমরা খুব খুশি।'
ভোপালে ট্রায়াল ফোর ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মেহুলি। ট্রায়াল থ্রি-তে মেহুলির স্কোর ৬৩৩.৮। ট্রায়াল থ্রি-তে স্বর্ণালীর স্কোর ৬২৬.৬। ট্রায়াল ফোরে মেহুলি ৬৩২.২ স্কোর করেছেন। ট্রায়াল ফোরে স্বর্ণালীর স্কোর ৬৩১.১।
মিতালি জানালেন, ভোপালের ইভেন্টটি দু'রাউন্ডের। সেরা আট শ্যুটার ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করবেন। এরপর কুমার সুরেন্দ্র সিংহ শ্যুটিং প্রতিযোগিতা রয়েছে। জুন মাসে ট্রায়াল ৫ ও ট্রায়াল সিক্স আয়োজিত হবে। তারপরই নির্ধারিত হবে, এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন কারা। তবে এশিয়ান গেমসের যোগ্যতা অর্জনের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন মেহুলি।
অভিনব বিন্দ্রাকে আদর্শ মানেন মেহুলি। ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিক গেমসে সোনা জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। সেই মুহূর্তটা টিভিতে দেখেছিলেন মেহুলি। সেই থেকে শ্যুটার হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হয়। তখনই জানতে পারেন, শ্যুটিং বলে একটা স্পোর্টস আছে। তারপর বাড়িতে জানান তাঁর শ্যুটিং শেখার ইচ্ছের কথা। পরিবারের সকলে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। শুরু হয়েছিল মেহুলির নতুন ইনিংস। শ্যুটিং রেঞ্জে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নজরকাড়া পারফরম্য়ান্স করেন মেহুলি। পরে তিনি ওএনজিসি-র হয়ে জাতীয় শ্যুটিংয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ভোপালে সাফল্যের পর মেহুলি বলেছেন, 'এই সাফল্য আজীবন মনে রেখে দেব। এই ম্যাচে কত কী স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে যোগ্যতা অর্জন। দারুণ ফাইনাল ম্যাচ। এবং তারপর প্রথম স্থান অর্জন করা। এত কিছুর মধ্যে সবচেয়ে ভাল ব্য়াপার হল আমি দিদির সঙ্গে ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছি। ভারতীয় দলের যোগ্যতা অর্জনকারী পর্বের ট্রায়াল ফোরে ও প্রথমবার পৌঁছেছে। ৬৩১.১ স্কোর করে।' মেহুলি আরও বলেছেন, 'শুধু তাই নয়। ফাইনালে আমার সঙ্গে দারুণ লড়াই করেছে দিদি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। ও যেদিন থেকে শ্যুটিং শুরু করেছিল, সেদিন থেকে এই দিনটার স্বপ্নই দেখেছি। যে দুজনে একসঙ্গে পদক জিতব। সেই ইচ্ছে পূরণ হল।'
আরও পড়ুন: নতুন কীর্তি চন্দননগরের কন্যার, পৃথিবীর দশম উচ্চতম শৃঙ্গ জয় করলেন পিয়ালি