রিও দে জেনেইরো: সাত বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক এই মারাকানা স্টেডিয়ামেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল আর্জেন্তিনার। জার্মানির বিরুদ্ধে হেরে অল্পের জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল লিওনেল মেসিদের।
অ্যাঙ্খেল দি মারিয়ার কাছে সেই বিশ্বকাপের ফাইনাল আরও বড় হতাশার স্মৃতি হয়ে রয়েছে। কারণ, গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ খেলার পর চোটের জন্য জার্মানির বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি তিনি। তাই, মারাকানায় কোপা আমেরিকা ফাইনালে দি'মারিয়ার কাছে ছিল জোড়া যন্ত্রণামুক্তির সুযোগ করে দেওয়া এক মঞ্চ।
আর ব্রাজ়িলের বিরুদ্ধে ফাইনালে মাঠে নামার আগে সেই কথাই প্রিয় সতীর্থকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। যিনি নিজে দেশের জার্সিতে মোক্ষলাভের আশায় রবিবার মাঠে নেমেছিলেন।
স্বপ্নপূর্ণ হয়েছে মেসির। স্বপ্নপূরণ হয়েছে দি'মারিয়ারও। হয়তো বা তাঁর প্রাপ্তির ভাঁড়ার আরও সমৃদ্ধ। কারণ, ফাইনালে ব্রাজ়িলের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটি এসেছে দি'মারিয়ার পা থেকেই। ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে তৃপ্ত ১১ নম্বর নীল-সাদা জার্সির মালিক।
ম্য়াচের পর তিনি বলেছেন, 'এই মুহূর্তটা কোনওদিন ভুলতে পারব না। মেসি আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ম্যাচের পরে। আমিও ওকে পাল্টা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। ম্য়াচের আগে মেসি আমাকে বলেছিল, এবার আমার পালা। এটা বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলতে না পারার প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। জিততেই হবে এবং জিতেই মাঠ ছাড়ব।'
এবারের কোপা আমেরিকা যৌথভাবে কলম্বিয়া ও আর্জেন্তিনায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য কলম্বিয়া থেকে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আর্জেন্তিনা থেকেও টুর্নামেন্ট সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রাজ়িলে। দি'মারিয়া বলেছেন, 'আমার মেয়ে, স্ত্রী ও বাবা-মায়ের জন্য ভীষণ খুশি। যাঁরা আমাদের বর্জন করেছিলেন তাঁদের জন্যও খুশি। এবং সেই সমস্ত ফুটবলপাগল মানুষের জন্য, যাঁরা খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন। আমি এখনও কাঁদতে পারছি না। অনেকদিনের স্বপ্ন, অনেক যন্ত্রণার পর এই ট্রফি জিতলাম। অনেকেই বলেছিলেন আর কোনওদিন মারাকানায় এসো না। আমরা দেওয়ালে মাথা ঠুকেছিলাম। শেষ পর্যন্ত জিতেছি।'
তবে এখানেই যে তাঁরা থামতে চান না, সামনে আরও বড় লক্ষ্য, জানিয়ে দিয়েছেন দি'মারিয়া। বলেছেন, 'সামনে বিশ্বকাপ। তার আগে এটা দারুণ প্রয়োজনীয় একটা ঝাঁকুনি।'