নয়াদিল্লি: শোয়েব আখতার বলে পয়েন্টের ওপর দিয়ে সচিন তেন্ডুলকরের সেই ছক্কা একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ২০০৩-র বিশ্বকাপের ম্যাচে পাকিস্তানে ফাস্টবোলার শোয়েব আখতারের বল এভাবে সচিনের হেলায় মাঠের বাইরে ফেলে দেওয়ার স্মৃতি দর্শকদের মনে এখনও অম্লান। সেঞ্চুরিয়নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমেছিল ভারত। দ্বিতীয় ওভারেই শোয়ের শর্ট ও ওয়াইড বলে সচিনের ব্যাটের টাইমিং এতটাই ভালো হয়েছিল যে বল পয়েন্ট বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়।
পরের বলেই সচিনের দুরন্ত ফ্লিকে এসেছিল বাউন্ডারি। ওভার শেষও করেছিলেন স্ট্রেট ড্রাইভে আরও একটা বাউন্ডারি দিয়ে। ১৭ বছর পরও সচিনের সেই ওভার বাউন্ডারি ক্রিকেট মাঠে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একটা মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।
একটি ক্রীড়া চ্যানেলের অনুষ্ঠানে ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ সচিনের সেই শোয়েব আখতারের বলে ছক্কা হাঁকানোর প্রসঙ্গ তুললেন। তিনি বলেছেন, শোয়েব আখতারকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে সচিনের উড়িয়ে দেওয়ার পর ফাইন লেগে ফ্লিকে বাউন্ডারি.. এটাই সচিনের শক্তি এবং এ কারণেই তিনি এলবিড্লু হতেন না, বলও মিস করতেন না। এজন্যই তিনি এত বড় ব্যাটসম্যান। কারণ, বল ভেতরে আনা বোলারদের একটা অস্ত্র, এই অস্ত্রে ব্যাটসম্যানদের বোল্ড বা লেগ বিফোর আউট করা যায়। কিন্তু সচিনের কেরিয়ারে এমনটা খুবই কম ঘটেছে।
পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছয়, যে আইকনিক শটটা বার বার দেখানো হয়, তেমন শট কিন্তু তিনি খেলেতেন না। তাঁকে কদাচিত্ ওই শট মারতে দেখেছি। আমি তাঁকে বল পাঞ্চ করতে বা অন রাইজ হিট করতে দেখেছি, কিন্তু ওই আপার কাট..যে ভারী ব্যাটে তিনি খেলতেন..আবার এমন এক বোলার যিনি দেড়শো কিমি গতিতে বল করেন, তাঁর বিরুদ্ধে এই শট খুবই কঠিন।

ওই ম্যাচে সচিন ৯৮ রান করেন। ভারত পাকিস্তানকে ছয় উইকেটে হারিয়েছিল।
কাইফ আরও জানিয়েছেন, ব্যাটিং করার সময় নিজের শটের প্রশংসা শুনতে একেবারেই পছন্দ করতেন না বিশ্বের সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান। বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে সচিনের সঙ্গে লম্বা পার্টনারশিপ করেছিলেন কাইফ। তিনি বলেছেন, আমাকে বলা হয়েছি, ক্রিজে টিকে থাকতে। সচিন ব্যাট করার সময় বেশি কথা বলতে পছন্দ করতেন না। সচিন পাজী যখন ব্যাট করেন তখন তা ধ্যানের মতো। নিজস্ব জগতে বিচরণ করেন তিনি। বেশি কথা বলতে একেবারেই পছন্দ করতেন না। কেউ যদি এগিয়ে এসে বলত, কী অসাধারণ শট খেলেছেন, তখন তিনি তাকে চুপ থাকতে বলতেন এবং তাঁকে ব্যাটিংটা করতে দিতে বলতেন।