ভুবনেশ্বর: সামনে ছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে যাওয়ার হাতছানি। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে জিতলেই যে মোক্ষলাভ হতো। কিন্তু ম্যাচ শেষ হয়েছে অমীমাংসিতভাবে। দল গোলশূন্য ড্র করায় খুব একটা হতাশ নন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan Super Giant) স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস (Antonio Lopez Habas)।


শনিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে একাধিক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে গোলশূন্য ড্র করল ওড়িশা এফসি ও মোহনবাগান এসজি। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেও তা কাজে লাগাতে পারেনি মোহনবাগান। ওড়িশাকেও বাড়তি ঝুঁকি নিতে দেখা যায়নি।


ম্যাচের পর হাবাস বলেন, “সব ম্যাচ একই রকম হয় না। আমরা এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলাম আজ। আমরা অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। ওড়িশাও একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছে। ক্লিন শিটও রাখতে পেরেছি আমরা। আমার মনে হয়, এই ফল ঠিকই আছে।”


ম্যাচের শুরু থেকেই তাদের আক্রমণে তেমন তীব্রতা ছিল না। প্রতিপক্ষকে পরখ করার প্রবণতাই বেশি দেখা যায় মোহনবাগান ফুটবলারদের মধ্যে। তা সত্ত্বেও অবশ্য পাঁচ মিনিটের মধ্যে বক্সের মধ্যে গোল করার মতো সুযোগ পেয়ে যান দিমিত্রিয়স পেত্রাতোস ও আরমান্দো সাদিকু দু’জনেই। এর পরেও আরও অনেক সুযোগ পান তাঁরা। ওড়িশারও দিয়েগো মরিসিও, রয় কৃষ্ণারা একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেন। এ জন্য দুই গোলকিপারেরও যথেষ্ট কৃতিত্ব প্রাপ্য। মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কায়েথ এ দিন দু’টি সেভ করেন। ওড়িশার গোলকিপার অমরিন্দর সিংহ পাঁচটি গোল বাঁচান।


আরমান্দো সাদিকু একাই এ দিন তিনটি গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন। তাঁর এই গোল মিস করা প্রসঙ্গে কোচ হাবাসের বক্তব্য, “সাদিকু আজ তিনটে গোলের সুযোগ পেয়েছে। অন্তত একটাও যদি গোলে রাখতে পারত, তা হলে হয়তো ম্যাচটা আমরা জিততাম। কিন্তু ফুটবলে এ রকমই হয়। আমাকে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস জোগাতে হবে”।


শনিবার জিতলে তারা এই ওড়িশা ও মুম্বইকে টপকে লিগ টেবলের শীর্ষে পৌঁছতে পারত। কিন্তু ১৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট অর্জন করে মোহনবাগান রয়ে গেল তিন নম্বরে। ১৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে এফসি গোয়া আছে চারে। অর্থাৎ, সবুজ-মেরুন বাহিনীর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা শুরু করল গোয়ার দল। আর ওড়িশা ১৬ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফের দৌড়ে সবার আগে থাকলেও তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে মুম্বই সিটি এফসি, যারা আগের দিনই চেন্নাইন এফসি-কে হারিয়ে ১৫ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে উঠে আসে দু’নম্বরে।


এখনও সাতটি ম্যাচ বাকি সবুজ-মেরুন বাহিনীর। এই ম্যাচগুলিতে তাদের আরও উন্নত পারফরম্যান্স দেখাতে হবে বলে মনে করেন হাবাস। তিনি বলেন, “আপাতত আমাদের কাজ দলের খেলোয়াড়দের পরের ম্যাচ খেলার জন্য ফের শারীরিক ভাবে প্রস্তুত করে তোলা। পরের ম্যাচে (শুক্রবার, বনাম জামশেদপুর এফসি) আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে তিন পয়েন্ট অর্জন করা। জামশেদপুরও নিশ্চয়ই সেই একই লক্ষ্য নিয়ে নামবে। আজ আমাদের পারফরম্যান্স ভালই হয়েছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে। প্রথমার্ধের শেষ ২০-২৫ মিনিটে বল বেশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি আমরা। আমাদের ওই সময় বলের ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত ছিল”।


সদ্য চোট সারিয়ে মাঠে ফেরা আনোয়ার আলির প্রশংসা করে হাবাস বলেন, “অনেক দিন পরে আনোয়ারকে দেখে ভাল লাগল, ও আজ ভাল খেলেছে। তবে ওকে আরও উন্নতি করতে হবে। ও প্রায় মাস দুয়েক ফুটবলে ছিল না। তাই এ রকম হওয়াই স্বাভাবিক। ব্রেন্ডান হ্যামিলও সুস্থ হয়ে হয়ে উঠেছে। আশা করি, পরের ম্যাচে ও খেলতে পারে”।


বিপক্ষের দুই স্ট্রাইকার দিয়েগো মরিসিও ও রয় কৃষ্ণারও প্রশংসা শোনা গেল হাবাসের গলায়। বলেন, “ওরা দুজনেই যথেষ্ট ভাল ফুটবলার। ওদের আমরা আজ কড়া নজরে রেখেছিলাম। বিশালও খুব ভাল সেভ করেছে। দলের প্রত্যেকেরই পারফরম্যান্স ও দায়বদ্ধতা দেখে আমি খুশি। কোনও ম্যাচে যদি জিততে না পারা যায়, সেক্ষেত্রে হারার চেয়ে ড্র করা ভাল। ওড়িশার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য”। (সৌজন্য - ISL Media)


আরও পড়ুন: রোল নয়, পছন্দ চিকেন স্টু, অফস্টাম্প পুঁতে বোলিং, কোচের মুখে ভারতীয় পেসারের অজানা গল্প



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।