কলকাতা: ঘরের মাঠে এফসি গোয়াকে হারাতে পারলেই লিগ শীর্ষে পৌঁছে যেত মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন পয়েন্ট তো দূর, এক পয়েন্টও জুটল না ভাগ্যে। গত ম্যাচে মুম্বই সিটির কাছে হারের পর এবার ঘরের মাঠে এফসি গোয়ার (FC Goa) বিরুদ্ধে হারতে হল মোহনবাগানকে। তাও আবার ৪-১ বিরাট ব্যবধানে। জোড়া গোল করেন মার্কিন মিডফিল্ডার নোয়া সাদাউই। এ ছাড়াও স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ভিক্টর রদ্রিগেজ ও পরিবর্ত স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কার্লোস মার্তিনেজ দু'জনেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে তিন পয়েন্ট এনে দেন। এই জয়ের ফলে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষেই রইল এফসি গোয়া।   


এ দিন প্রথমার্ধেই তিন গোল খেয়ে যায় মোহনবাগান। ২০২১-এর ১ ডিসেম্বরের পর এই প্রথম চার গোল হজম করতে হল সবুজ মেরুনকে। প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে দুর্দান্ত ও মাপা ফ্রি কিকে একটি গোল শোধ করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। কিন্তু এর বেশি কিছু করতে পারেনি সবুজ-মেরুন শিবির। ম্যাচের শেষ দিকে ম্যাচের দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন কার্লোস মার্তিনেজ। আইএসএলে ঘরের মাঠে এটিই মোহনবাগানের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। 


গত ম্যাচে তিনজন নির্ভরযোগ্য ফুটবলার লাল কার্ড দেখায় এই ম্যাচে তাঁরা মাঠে নামতে পারেননি। তার ওপর রক্ষণের দুই খেলোয়াড় গ্লেন মার্টিন্স ও ব্রেন্ডান হ্যামিলের চোট লাগে। অর্ধেক ফিট গেল ও দীপক টাঙরিকে মাঠে নামাতে বাধ্য হন মোহনবাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো। সিনিয়র ডিফেন্ডার শুভাশিস বোসকেও এ দিন চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। চোট-আঘাত ও কার্ড সমস্যায় অবস্থা এতই খারাপ যে ম্যাচের শেষ দিকে হ্যামিল চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলেও তাঁর পরিবর্ত খেলোয়াড় নামাতে পারেননি ফেরান্দো। এই সময় প্রায় মিনিট কুড়ি দশজনে খেলতে হয় তাদের। 


একমাত্র পেত্রাতোস অনেক চেষ্টা করেন দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর। কিন্তু বাকিরা তাঁর মতো তৎপরতা দেখাতে পারেননি। ম্যাচের নয় মিনিটের মাথায় আকস্মিক পেনাল্টি পায় এফসি গোয়া। মোহনবাগান বক্সে ওদেই ওনান্দিয়ার গোলমুখী শট মনবীরের হাতে লাগায় পেনাল্টি দেন রেফারি। নোয়া সাদাউই পেনাল্টি থেকে করে গোয়াকে ম্যাচে এগিয়ে দেন। 


৪২ মিনিটে অসাধারণ পাসিং ফুটবল খেলে দ্বিতীয় গোল পায় গোয়া। বক্সের ডানদিক থেকে বক্সের মাথায় থাকা রদ্রিগেজকে বল দেন ফার্নান্ডেজ। রড্রিগেজ বল পাঠান কার্ল ম্যাকহিউকে, যা তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফেরত দেন গোলের সামনে থাকা রদ্রিগেজকে এবং তিনিই জালে বল জড়িয়ে দেন (২-০)। ৪৮ মিনিটের মাথায় ফের ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় গোয়া। এ বার বাঁ দিক দিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে কাট ব্যাক করে কোণাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলে বল পাঠান নোয়া সাদাউই (৩-০)। 


প্রথমার্ধের বাড়তি সময়ে গোলের ৩৫ গজ দূরে বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় মোহনবাগান। সেই ফ্রিকিক  থেকে সোজা গোলে শট নেন পেত্রাত্রোস, যা গোলকিপার অর্শদীপ সিংয়ের হাতে লেগে গোলে ঢুকে পড়ে (৩-১)। প্রথমার্ধেই এ দিন ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়ে যায়। সারা ম্যাচে মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে হোম টিম। দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান কোনও শটই গোলে রাখতে পারেনি। কিন্তু এফসি গোয়ার ফুটবলাররা আক্রমণে ঘন ঘন ওঠেন। তাঁদের আক্রমণের ঝাঁঝ ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং তাঁদের সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায় সবুজ-মেরুন বাহিনী। প্রচণ্ড চাপে থাকা অনিরুদ্ধ থাপা ৮৯ মিনিটে সেভিয়ার গামাকে বক্সে ফাউল করায় ফেল পেনাল্টি পায় এফসি গোয়া এবং পেনাল্টি থেকে পাওয়া কার্লোস মার্তিনেজের গোলে জয় সুনিশ্চিত করে তারা (৪-১)। 


(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে


আরও পড়ুন: ফের একসঙ্গে মেসি-সুয়ারেজ, ইন্টার মায়ামির হয়ে সই করলেন উরুগুয়ান তারকা