নয়াদিল্লি: কাল ২৯ অগাস্ট। মেজর ধ্যানচাঁদের জন্মদিন। একইসঙ্গে এই দিনটিকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবেও পালন করা হয়। এই দিনেই রাষ্ট্রপতি অর্জুন, দ্রোণাচার্য পুরস্কার তুলে দেন ক্রীড়াজগতে দেশের কৃতিদের হাতে। হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদকে সম্মান জানাতে কিছুদিন আগেই রাজীব গাঁধী খেলরত্ন পুরস্কারের নতুন নামকরণ করা হয়েছে। রাজীব গাঁধী খেলরত্ন অ্যাওয়ার্ডের নাম বদলে নামকরণ করা হয়েছে মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন অ্যাওয়ার্ড। নিজের ট্যুইটারে সেই ঘোষণা করেছিলেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মেজর ধ্যানচাঁদকে নিয়ে জানা, অজানা নানা তথ্য ও ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর অবদান সম্পর্কে ---


১.  উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে (এলাহাবাদ) ১৯০৫ সালের ২৯ অগাস্ট জন্ম হয় ধ্য়ানচাঁদের। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির হয়ে হকি খেলেছিলেন ধ্যানচাঁদের পরিবারের সদস্যরা। বাবা সোমেশ্বর সিংহ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। 


২. মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯২২ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ। সময়ের অভাবে রাতের দিকে অনুশীলনে মগ্ন থাকতেন কিংবদন্তি এই হকি তারকা। রাতের দিকে অনুশীলন করতেন বলে তাঁর সতীর্থরা 'চাঁদ' নামে সম্বোধন করতেন ধ্যানচাঁদকে। তিনি পঞ্জাব রেজিমেন্টের মেজর পদে উন্নিত হয়েছিলেন। 


৩. ১৯৩২ সালে গোয়ালিয়রের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন ধ্যানচাঁদ।


৪. একদম ছোটবেলায় কুস্তিতে মূলত আগ্রহ ছিল ধ্যানচাঁদের। যদিও পরে হকিতে মনোনিবেশ করেন। ইংরেজদের অধীনস্ত ভারতীয় হকি দলের হয়ে ১৯২৮, ১৯৩২ ও ১৯৩৬ অলিম্পিক খেলেন। প্রতিবারই দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন তিনি। 


৫. ১৯২৬ সাল থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত ধ্যানচাঁদ তাঁর পুরো কেরিয়ারে ৪০০-র উপরে গোল করেছেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন।


৬. ১৯২৮ সালের আমস্টারডাম অলিম্পিক্সে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন ধ্যানচাঁদ। সেবারই হকির জাদুকর হিসেবে নামকরণ হয় ধ্যানচাঁদের। 


৭. ১৯৩২ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের একটি ম্যাচে আমেরিকাকে ২৪-১ গোলে হারিয়েছিল ভারত। সেই রেকর্ড ২০০৩ সাল পর্যন্ত অক্ষত ছিল। ম্যাচে ৮ গোল করেছিলেন ধ্যানচাঁদ। তাঁর ভাই রূপ সিংহ করেছিলেন ১০ গোল। ওই টুর্নামেন্টে ৩৫ গোল করেছিল ভারত। তার মধ্যে চাঁদ ও তাঁর ভাই মিলে করেছিলেন ২৫ গোল। 


৮. ১৯৩৪ সালের নিউজিল্যান্ড সফরে অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ। সেই সফরে ২৩ ম্যাচ খেলে মোট ২০১টি গোল করেছিলেন তিনি। 


৯. জীবনের শেষ ম্যাচ খেলেন ধ্যানচাঁদ বাংলার বিরুদ্ধে। অবশিষ্ট ভারতের হয়ে খেলেছিলেন ১৯৪৮ সালে সেই ম্যাচ। ১৯৫৬ সাল ৫১ বছর বয়সে অবসর নেন ধ্যানচাঁদ।


১০. শোনা যায়, হিটলার ধ্যানচাঁদের খেলা দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তাঁকে জার্মান নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা নিতে অস্বীকার করেন ধ্যানচাঁদ। কিংবদন্তি এই হকি তারকার নামে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মূর্তি গড়া হয়েছে। 


১১. জীবনের শেষ সময়টা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ। ১৯৭৯ সালের ৩ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।