নয়াদিল্লি: এক গৌরবময় অধ্যায়ের অবসান। দীর্ঘ লড়াইয়ের চালালেও ক্যান্সারকে গোল দিতে পারলেন না পেলে (Pele)। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ভারতীয় সময় রাত ১২.৩০ নাগাদ ব্রাজিলের (Brazil) সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে (Hospital Albert Einstein Sao Paulo) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ব্রাজিল কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া ফুটবলমহলে। সদ্যই ব্রাজিলিয়ান হিসাবে পেলের সর্বকালীন গোলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন নেমার (Neymar Jr)। ফুটবল সম্রাটের মৃত্যুতে মর্মাহত তিনি। 


পেলে ও নেমারের সম্পর্ক বরাবরই মিষ্টিমধুর। একাধিকবার একাধিক পরিস্থিতিতে ব্রাজিলের বর্তমান ১০ নম্বর জার্সিধারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন ১০ নম্বর জার্সিধারী। দুইজনের জার্সি নম্বরের পাশাপাশি সিনিয়র ফুটবলের শুরুটাও একরকম। দুইজনেই স্যান্টোসের হয়ে নিজের সিনিয়র ফুটবল কেরিয়ারের শুরুটা করেন। এক সেলেসাও তারকার মৃত্যুতে আরেক সেলেসাও তারকা দিলেন মর্মস্পর্শী বার্তা। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পেলের সঙ্গে একাধিক ছবি পোস্ট করে বার্তা দেন নেমার



তিনি লেখেন, 'পেলের আগে ১০ টা শুধুই একটা নম্বর ছিল মাত্র। আমি এই কথাটা কোথাও শুনেছিলাম। তবে এই বাক্যটা সুন্দর হলেও, তা অসম্পূর্ণ। আমার মতে পেলের আগে ফুটবলের সঙ্গে আর বাকি পাঁচটা খেলার কোনও পার্থক্য ছিল না। পেলে সবকিছু বদলে দেন। ওঁ ফুটবলটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যান। ওঁ গরীবদের, কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতীক হয়ে ওঠেন। ব্রাজিলকে বিশ্বের মানচিত্রে তুলে ধরেন। ফুটবলে ব্রাজিলের আজ এত নামডাকের প্রধাণ কারণই হলেন কিংগ। ওঁ মারা গেলও, ওঁর জাদুতা চিরজীবন থেকে যাবে। পেলে অমর।'


দীর্ঘ লড়াই


দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। মাঝে মধ্যেই শোনা যাচ্ছিল নানারকম খবর। তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজবও ছড়ায়। তবু ভক্তরা প্রার্থনা করে যাচ্ছিল।  তবে শেষ পর্যন্ত জীবনের মাঠ থেকে বিদায় নিলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে প্রায় এক মাস হাসপাতালে কাটানোর পর পেলের এক কন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। যা দেখে উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছিল গতকালই। আজ সমস্ত আশঙ্কা সত্যি করে খবর প্রকাশ্যে এল। 


পেলেই একমাত্র ফুটবলার যিনি ৩টি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপ জয় পেলের। ব্রাজিলের জার্সিতে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোল করেছেন ফুটবল সম্রাট। ক্লাব ও দেশের হয়ে ১ হাজার ৩৬৩টি ম্যাচে ১ হাজার ২৮৩টি গোল। সব মহাদেশের ফুটবলভক্তরা বুঁদ হতেন পেলের পায়ের জাদুতে। ফুটবলভক্তরা তাঁকে ডাকেন 'ব্ল্যাক পার্ল' নামে। ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাকোয়েস শহরে জন্ম। জন্মের পর বাবা-মা নাম রাখেন এডসন অ্যারিন্টো ডো নাসিমেন্টো। 


আরও পড়ুন: এই রেকর্ডগুলিই পেলের ফুটবল সম্রাট হওয়ার পরিচয়বাহক