নয়াদিল্লি: অস্ট্রেলিয়ার পর বিশ্বের দ্বিতীয় সফলতম দল। ১৯৮৩ ও ২০১১, দুবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে (ODI World Cup) রানার আপ। এছাড়া ১৯৮৭, ১৯৯৬, ২০১৫ ও ২০১৯ - চারবার সেমিফাইনালে পৌঁছেছে। ২০০৭ বিশ্বকাপের বিপর্যয়ের পর থেকে প্রত্যেকবার অন্যতম ফেভারিট হিসাবে বিশ্বকাপে অভিযান শুরু করেছে ভারত (Indian Cricket Team)। টিম ইন্ডিয়া (Team India)। এবারও হট ফেভারিট রোহিত শর্মারা (Rohit Sharma)। কারণ, এবার ঘরের মাঠের চেনা পরিবেশে খেলবেন বিরাট কোহলি, যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ড্যরা।


সাম্প্রতিক ফর্ম


বিশ্বকাপের আগের কয়েকটা মাস বেশ উদ্বেগে কেটেছে ভারতীয় শিবিরের। ঋষভ পন্থের গাড়ি দুর্ঘটনা, যশপ্রীত বুমরা, কে এল রাহুল, শ্রেয়স আইয়ার ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর গুরুতর চোট। কিন্তু স্বস্তির খবর যে, বুমরা, রাহুল, শ্রেয়সরা অস্ত্রোপচারের পর ফিট। শুধু মাঠেই ফেরেননি, ফিরেই ছন্দ দেখিয়েছেন। পাশাপাশি কুলদীপ যাদব যেন নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করে চলেছেন প্রত্যেক ম্যাচে।


বিশ্বকাপের ঠিক আগে সেরা ছন্দে রয়েছে ভারত। এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছে। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচই বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলেও তাই খুব একটা সমস্যায় পড়ার কথা নয় ভারতের।

 

শক্তি

 

দেশের মাঠের চেনা পরিবেশ পরিস্থিতিতে খেলবে টিম ইন্ডিয়া। দলের সকলেই ছন্দে। শুভমন গিল কেরিয়ারের সেরা ফর্মে। কোহলিকে বর্তমান বিশ্বের সেরা ব্যাটার মনে করা হয়। দলে সব জায়গায় দারুণ বিকল্প রয়েছে হাতে। উইকেটকিপার হিসাবে দুরন্ত ছন্দে থাকা ঈশান কিষাণ হয়তো শুরুর দিকের ম্যাচগুলিতে সুযোগই পাবেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করা সূর্যকুমারকেও হয়তো রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে হবে। আর অশ্বিনের শেষ মুহূর্তের অন্তর্ভুক্তি দলের স্পিন বিভাগকে আরও শক্তিশালী করেছে। বাড়িয়েছে বৈচিত্র। মাঝের ওভারগুলিতে কুলদীপ যাদবের উইকেট নেওয়ার দক্ষতা ভারতের অন্যতম বড় অস্ত্র। বুমরা ও সিরাজ বল হাতে যে কোনও ব্যাটিংকে ধ্বংস করে দিতে পারেন। শামিও দুরন্ত ছন্দে। হার্দিক পাণ্ড্য ব্যাটে হোক বা বলে, একা হাতে ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কাকে ছেড়ে কাকে খেলাবেন, সবচেয়ে বড় চিন্তা কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অধিনায়ক রোহিত শর্মার।

 

দুর্বলতা

 

ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে বাঁহাতি ব্যাটারের অভাব। রোহিত, গিল, কোহলি, শ্রেয়স, রাহুল ও হার্দিক - ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম ছয়জনই ডানহাতি। তাই বিপক্ষ বোলারদের লাইন-লেংথ নষ্ট করে দেওয়ার সম্ভাবনা সামান্য হলেও কমে যায়। সাত নম্বরে জাডেজা দলের ব্যাটিং লাইন আপে প্রথম বাঁহাতি ব্যাটার। যে কারণে কোনও কোনও মহল থেকে ঈশান কিষাণকে খেলানোর দাবি তোলা হচ্ছে। ভারতের আরও বড় কাঁটা, ব্যাটিংয়ের লেজ। জাডেজার পর শেষের দিকে যে চার ব্যাটার নামবেন, কেউই ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকতে পটু নন। এমনকী, বিগহিটারও নন। যা বাকি দলগুলিকে সুবিধা করে দিতে পারে। সূর্যকুমার যাদব রিজার্ভ বেঞ্চে থাকবেন শুরুর দিকের ম্যাচগুলিতে। তবে তাঁর ওয়ান ডে রেকর্ড ভাল নয়। একমাত্র কোহলি ও অশ্বিন ছাড়া আর কারও বিশ্বকাপ জেতার অভিজ্ঞতা নেই।

 

চমক দিতে তৈরি

 

শুভমন গিল। ওয়ান ডে ক্রিকেটে স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন। ৩৬ ইনিংসে ৬টি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। একটি ডাবল সেঞ্চুরিও রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি সেঞ্চুরি এই বছরে। ইনিংস ওপেন করেন। আরও বড় গুণ হল, দীর্ঘক্ষণ ব্যাট করে ইনিংস গড়ে তুলতে পারেন।  অনেকে মনে করছেন, শুভমনই এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ স্কোরার হবেন।

 

গেমচেঞ্জার

 

চোট পেয়ে যেসব ক্রিকেটার মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে ফিরে পেতেই সবচেয়ে বেশি মরিয়া ছিল টিম ইন্ডিয়া। যশপ্রীত বুমরা। নতুন বলে হোক বা পুরনো বলে, পাওয়ার প্লে-তে হোক বা ডেথ ওভারে, সব জায়গায় সবরকম পরিস্থিতিতে উইকেট তুলতে পারেন। অদ্ভুত অ্যাকশন, সঙ্গে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতি। নিখুঁত ইয়র্কার। চোট সারিয়ে ফিরে দুরন্ত ছন্দে। ৭৮ ওয়ান ডে-তে ১২৯ উইকেট। ওভার প্রতি খরচ করেন মাত্র ৪.৬৭ রান। ঈর্ষণীয় রেকর্ড।

 

বিশ্বকাপের দল: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুল (উইকেটকিপার), হার্দিক পাণ্ড্য (সহ অধিনায়ক), রবীন্দ্র জাডেজা, শার্দুল ঠাকুর, যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজ়, ঈশান কিষাণ (উইকেটকিপার), সূর্যকুমার যাদব, মহম্মদ শামি ও আর অশ্বিন।


বিশ্বকাপে ভারতের সূচি: 



  • বনাম অস্ট্রেলিয়া, চেন্নাই, ৮ অক্টোবর, রবিবার, দুপুর ২

  • বনাম আফগানিস্তান, দিল্লি, ১১ অক্টোবর, বুধবার, দুপুর ২

  • বনাম পাকিস্তান, আমদাবাদ, ১৪ অক্টোবর, শনিবার, দুপুর ২

  • বনাম বাংলাদেশ, পুণে, ১৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, দুপুর ২

  • বনাম নিউজ়িল্যান্ড, ধর্মশালা, ২২ অক্টোবর, রবিবার, দুপুর ২

  • বনাম ইংল্যান্ড, লখনউ, ২৯ অক্টোবর, রবিবার, দুপুর ২

  • বনাম শ্রীলঙ্কা, মুম্বই, ২ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, দুপুর ২

  • বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, কলকাতা, ৫ নভেম্বর, রবিবার, দুপুর ২

  • বনাম নেদারল্যান্ডস, বেঙ্গালুরু, ১২ নভেম্বর, রবিবার, দুপুর ২   

    আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


    https://t.me/abpanandaofficial


    আরও পড়ুন: স্পিনারদের হাতে আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ ভাগ্য, তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলতে পারবেন রশিদরা?