মুম্বই: রণক্ষেত্র ওয়াংখেড়ে (Wankhede)। যুযুধান দুই দলের নাম? ভারত ও শ্রীলঙ্কা (Ind vs SL)।
ফের একটি বিশ্বকাপ (ODI World Cup)। ফের মুম্বইয়ে মুখোমুখি দুই প্রতিবেশী দেশ। ১২ বছর আগে এই মাঠে এই প্রতিপক্ষকে হারিয়েই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত। এবার পরিস্থিতি অবশ্য আলাদা। ২০১১ সালে ছিল ফাইনাল। বৃহস্পতিবারের ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা গ্রুপ পর্বের লড়াই। কিন্তু তবু ম্যাচের পরতে পরতে ১২ বছর আগের স্মৃতি।
আর সেই স্মৃতিকে আরও তরতাজা করে বাইশ গজে দাপট দেখালেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
শুরুটা করেছিলেন বিরাট কোহলি ও শুভমন গিল। বৃহস্পতিবার টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস। দাসুন শনাকা চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পর যিনি শ্রীলঙ্কাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ম্যাচের তখন প্রথম ওভার। দিলশান মধুশঙ্কাকে ফ্লিক করে বাউন্ডারি মেরে শুরু করলেন রোহিত শর্মা। প্রথম বলেই। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই বিপত্তি। বোল্ড হয়ে গেলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হিটম্যান।
সেখান থেকে ইনিংসের হাল ধরলেন কোহলি। দ্বিতীয় উইকেটে শুভমন গিলের সঙ্গে ১৮৯ রানের পার্টনারশিপ। ভারতীয় ইনিংসে নতুন আশার সঞ্চার করলেন কোহলি।
বিরাট কোহলির (Virat Kohli) রান তখন ১০। দুষ্মন্ত চামিরার বল সরাসরি বোলারের দিকেই তুলে দিলেন বিরাট। ফলো থ্রুতে কার্যত লোপ্পা ক্যাচ। কিন্তু শরীরের ভারসাম্য় ধরে রেখে বল তালুবন্দি করতে পারলেন না শ্রীলঙ্কার (Ind vs SL) পেসার। স্কোরবোর্ড বলছে, কোহলির ব্য়ক্তিগত রান তখন ১৭ বলে মাত্র ১০। দলের স্কোর ২৫/১।
দেখতে দেখতে মনে পড়ে যাচ্ছিল ২০০৩ সালের এক ঘটনার কথা। সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্ট পার্কে সচিনের লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের আব্দুল রজ্জাক। যা দেখে ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি ওয়াসিম আক্রম। পাক কিংবদন্তি রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়েন। রাগে ফেটে পড়েন। আক্রম ভালই বুঝেছিলেন, শুধু ক্যাচ নয়, রজ্জাক ম্য়াচই ফেলে দিয়েছিলেন হাত থেকে। ৭৫ বলে ৯৮ রান করে পাক শিবিরকে বিনিদ্র রজনী উপহার দিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার।
কাকতালীয় হলেও, বৃহস্পতিবার কোহলির ক্যাচ পড়ল যে মাঠে, সেখানকার বাইশ গজে খেলেই ক্রিকেটবিশ্বের কোহিনূর হয়ে উঠেছিলেন সচিন। কোহলির ক্যাচ ফেলার পর কি কুশল মেন্ডিসও গিয়ে দুষ্মন্ত চামিরাকে ভর্ৎসনা করলেন?
নতুন জীবন পেয়েই যেন নিজেকে নতুন প্রতিজ্ঞায় বেঁধে ফেললেন কোহলি। ৯৪ বলে ৮৮ রান করে ভারতীয় ইনিংসের ভিত সাজিয়ে দিলেন কোহলি। ঘটনাচক্রে, সচিন তেন্ডুলকরেরর সামনেই। বৃহস্পতিবার সচিন মাঠেই ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন সচিন-কন্যা সারাও। যাঁর সঙ্গে শুভমনের প্রেম নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। সচিন-সারার সামনে দুরন্ত ইনিংস খেললেন শুভমন। তিনিও একবার প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন। ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করলেও শুভমন বুঝিয়ে দিলেন, তিনি বড় মঞ্চের জন্য তৈরি।
গিল ও কোহলি ফেরার পর ভারতীয় ইনিংসকে রানের পাহাড়ে চড়িয়ে দিলেন শ্রেয়স আইয়ার। মুম্বইয়ের ক্রিকেটারের কাছে চোটের জন্য এক সময় বিশ্বকাপে খেলাটাই ছিল ধোঁয়াশায় ঢাকা। তবে ফিরে দুরন্ত ছন্দে। মাত্র ৫৬ বলে ৮২ রান করলেন। ৩টি চার ও ৬টি ছক্কা। কসুন রাজিথাকে ১০৬ মিটারের ছক্কা মারলেন। যা চলতি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ওভার বাউন্ডারি।
সব মিলিয়ে ৫০ ওভারে ভারত তুলল ৩৫৭/৮। ছন্দে থাকা ভারতীয় বোলারদের সামনে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের এবার অগ্নিপরীক্ষা। রোহিত শর্মা তো টসের পরই শুনিয়ে রেখেছেন, নৈশালোকে পেসারদের জন্য এই মাঠে বাড়তি সুবিধা থাকবে।
আরও পড়ুন: গল্ফ কার্টের থেকে মাঠে পড়ে মাথায় চোট, ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন ম্যাক্সওয়েল
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন