নয়াদিল্লি: আইপিএলের (IPL) সময় তাঁদের সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মাঠে সৌজন্য দেখানোর পথেও হাঁটেননি। ম্যাচের শেষে যখন করমর্দন করছিলেন দুই দলের ক্রিকেটারেরা, তখন উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছিলেন তাঁরা।


বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও নবীন উল হক (Naven Ul Haq)। একসময় মাঠে যাঁদের হাতাহাতি হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মুখ দেখাদেখি বন্ধ। শেষ পর্যন্ত কি সন্ধি হল দুই তারকার?


আইপিএলে কোহলি খেলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে। নবীন খেলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। আইপিএলের সময় তাঁদের মধ্যে তুলকালাম বেঁধেছিল। এমনকী, নবীনের পক্ষ নিয়ে কোহলির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন গৌতম গম্ভীরও। যিনি লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর ছিলেন। সেই ঘটনার পর থেকে মাঠে নবীনকে তো বটেই, এমনকী গম্ভীরকে দেখলেও কোহলি ভক্তরা বিদ্রুপ করতে ছাড়েন না। তাঁদের দেখলেই স্লোগান ওঠে, 'কোহলি, কোহলি...'


কম যাননি নবীনও। আরসিবি হারলে বা কোহলি ব্যর্থ হলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমের ছবি পোস্ট করেছেন। বিরাট ভক্তরা যে পোস্টগুলি নিয়ে খুব একটা খুশি ছিলেন, এমন দাবি কেউ কখনও করেননি। বরং আফগান ক্রিকেটারের জন্য বরাদ্দ থেকেছে তীব্র ব্যঙ্গ।


ছবিটা একই ছিল বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারত-আফগানিস্তান (Ind vs Afg) বিশ্বকাপের ম্যাচেও। যা আবার কোহলির ঘরের মাঠ। এখানে খেলেই বাইশ গজে উত্তরণ ঘটিয়েছেন কোহলি। এখন তিনি শহর ছেড়েছেন। স্ত্রী অনুষ্কার সঙ্গে এখন মুম্বইয়ে থাকেন কোহলি। কিন্তু কোহলিকে ছাড়েনি দিল্লি। বুধবার ঘরের ছেলের জন্য ছিল গণউন্মাদনা। আর নবীনের জন্য উপহাস।


মাঠে নবীন ব্যাট করতে নামুন বা বোলিং, গ্যালারির শ্লেষ হজম করতে হয়েছে। এক ক্রিকেটভক্ত তো ব্য়ানারে এ-ও লিখে এনেছিলেন যে, 'আজকের স্পেশাল ম্যেনু - ম্যাঙ্গো শেক। বিরাট কোহলির বানানো।'


আফগানিস্তান ইনিংসের ৪৯তম ওভার। ওভারের প্রথম বলেই রশিদ খানকে ফেরালেন বুমরা। তারপরই ক্রিজে নামেন নবীন। তাঁকে দেখা মাত্রই গ্যালারি থেকে গর্জন উঠল, 'কোহলি, কোহলি'। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। পরে নবীন বল করার সময়ও গ্যালারি থেকে উড়ে এল বিদ্রুপ। আফগান অধিনায় হাশমাতুল্লাহ শাহিদিও কোহলি ব্যাট করতে নামা মাত্র বল তুলে দিলেন নবীনের হাতে। ব্যস, আর যায় কোথায়?

তবে ম্যাচের শেষে করমর্দন করেছেন কোহলি ও নবীন। একে অন্যের পিঠে উৎসাহব্যঞ্জক চাপড়ও মেরেছেন। যা দেখে অনেকের মনে হয়েছে, সংঘাতে হয়তো ইতি টানার চেষ্টা দু তরফেই। কেউ কেউ বলছেন, ম্যাচ একপেশে হওয়ায় কোহলি-নবীন সংঘাত মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পায়নি।


ম্যাচের পর নবীন বলেছেন, 'মাঠে খেলা দেখতে আসা সকলে তো তাঁদের নিজেদের ক্রিকেটারের নাম নিয়েই চিৎকার করবেন। এটা কোহলির ঘরের মাঠ। ও ভাল মানুষ। খুব ভাল ক্রিকেটার। আমরা করমর্দন করেছি।' আরও বলেছেন, 'অতীতে যা হয়েছে মাঠের মধ্যে, মাঠের বাইরে কিছু হয়নি। বাইরের সবাই এটা বড় করে দেখে। কোহলি বলেছে, যথেষ্ট হয়েছে। আমিও সেই কথাই বলেছি। আমরা আলিঙ্গনও করেছি।'


নবীনের কথায় ইঙ্গিত, যুদ্ধের ঝাঁঝ আপাতত অতীত। আম-কাণ্ডও প্রাক্তন হয়ে পড়েছে। কোহলি-নবীন সমীকরণ এবার অন্য দিকে মোড় ঘুরেছে। শান্তির পথে।


আরও পড়ুন: ABP Exclusive: ধোনি বিশ্বকাপ জিতেছে, ওর কৃতিত্ব আমার চেয়েও বেশি, দরাজ প্রশংসায় সৌরভ


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial