নয়াদিল্লি: আর সপ্তাহখানেকও বাকি নেই। ২৮ অগাস্ট থেকে প্যারিসে বসতে চলেছে প্যারালিম্পিক্সের (Paralympics 2024) আসর। অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করাটাই কম বড় ব্যাপার নয়। সেখানে প্যারা অ্যাথলিটদের তো সেরা প্রতিযোগিতায় নামতে হলে আরও কত কিছুই না সইতে হয়। তেমনই এক জীবনযুদ্ধের কাহিনি প্রণব সুরমার (Pranav Soorma), যাকে ঘিরে প্যারালিম্পিক্সে সোনার স্বপ্ন দেখছে ভারত।


মাত্র ১৬ বছর বয়সে ছাদ ভেঙে পড়ায় প্যারালাইস হন প্রণব। এত অল্প বয়সে প্যারালাইস হওয়াটা আক্ষরিক অর্থেই মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ার সমতুল্য। তবে হার মানেননি প্রণব। বরং সামনে থেকে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। এর তাঁর এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষমতাই তাঁকে বিশ্বের সেরাদের মধ্যে স্থান করে দিয়েছে। ক্রীড়াপ্রেমী প্রণব সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পিটিআইকে জানান প্যারালাইস হওয়াটাই তাঁর কাছে শাপে বর হয়ে ওঠে। তাঁকে নিজের জীবনে বড় কিছু করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।


তিনি বলেন, 'আমি বরাবরই ক্রীড়াপ্রেমী ছিলাম। তবে খেলাকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার তেমন কোনও আগ্রহ ছিল না। হ্যাঁ, জীবনে ভাল কিছু করার ইচ্ছা ছিল বটে। সেই লক্ষ্যটা আমি প্যারালাইস হওয়ার পরেই পাই। এটা আমার কাছে অনেকটা শাপে বর পাওয়ার মতো। আমি নিজের পরিচয় তৈরি করার জন্য খেলাধুলোকে বেছে নিই।' 


২০১৬ সালের প্যারালিম্পিক্সের পরেই প্যারা-স্পোর্টস সম্পর্কে প্রণবের আগ্রহ জন্মায়। ২৯ বছর বয়সি প্রণব জানান, '২০১৬ সালে রিও প্যারালিম্পিক্সের পরেই আমি প্যারা-স্পোর্টস সম্পর্কে জানতে পারি। এই নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করি। প্যারা সাঁতার সম্পর্কে জানতে পারি। তবে আমার যা পরিস্থিতি তাতে সেটা সম্ভব ছিল না। টেবিল টেনিসও আমার পছন্দের। তবে ভাল কোচ পাইনি। তারপর আমার জীবনে নার্সি রাম স্যর (প্যারা অ্যাথলেটিক্স কোচ) এলেন। ওঁ আমায় অ্যাথলেটিক্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করান এবং আমি ক্লাব থ্রোকে বেছে নিই।'


ক্লাব থ্রো প্রতিযোগিতায় কাঠের ক্লাবকে যে যতদূরে ছুড়তে পারবে, সে চ্যাম্পিয়ন হয়। কাঁধ ও হাতের জোরে এই থ্রো করেন প্যারা অ্যাথলিটরা। এশিয়ান প্যারালিম্পিক্সে এফ৫১ ইভেন্টে পুরুষদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন প্রণব। ৩০.০১ মিটার দূরে ক্লাব ছুড়ে গড়েন রেকর্ড। স্বাভাবিকভাবেই প্যারিস প্যারালিম্পিক্সে তিনি ভারতের পদকজয়ের বড় আশা।


তাঁর এই সফরে প্রণব নিজের পরিবারকে সবসময় পাশে পেয়েছেন তাঁর বাবা তাঁর জন্য়, তাঁর পাশে থাকার উদ্দেশ্যে নিজের চাকরি অবধি ছেড়ে দেন। 'আমার পরিবারের থেকে আমি প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। আমার বাবা নিজের চাকরি ছেড়ে আমার অ্যাটেনডেন্ট হন, কারণ সবসময়ের জন্য অ্যাটেনডেন্ট রাখার মতো টাকা আমার ছিল না। মা চাকরি করে আমাদের সংসার টানতেন।' বলেন প্রণব। প্যারিস অলিম্পিক্সে বাবা, মা এবং সমগ্র দেশের নাম উজ্জ্বল করে প্রণব পদক জিততে পারেন কি না, এখন সেটাই দেখার।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে হাজির রোহিত, জয় শাহ