কলকাতা: প্যারিসে (Paris Olympics 2024) একের পর এক স্বপ্নভঙ্গ। মনু ভাকেরের জোড়া পদক যে আশার প্রদীপ জ্বালিয়েছিল, ব্যাডমিন্টন থেকে টেবিল টেনিস, তিরন্দাজি থেকে বক্সিং, একের পর এক ইভেন্ট থেকে বিদায়ের আঁধার সেই আলো ফিকে করে দিয়েছে। পদক নিশ্চিত করার পরেও যেভাবে বিনেশ ফোগতকে বাতিল হতে হয়েছে, গোটা দেশ সেই ধাক্কায় টলমল।
আর এই পরিস্থিতিতে ভারতের সমস্ত ক্রীড়াপ্রেমীদের নজর বৃহস্পতিবার রাতের প্যারিসে। অলিম্পিক্সে জ্যাভলিন ফাইনালে নামছেন নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra)। টোকিও অলিম্পিক্সে যিনি সোনা জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন। ভারতের প্রথম অ্যাথলিট হিসাবে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে অলিম্পিক্স সোনা জিতেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ফাইনালের আগে নীরজের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন ভারতীয় খেলাধুলোর আর এক কিংবদন্তি, লিয়েন্ডার পেজ়। ১৯৯৬ সালে আতলান্তা অলিম্পিক্সে টেনিসে পুরুষদের সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জ জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন কলকাতার তারকা। সেটাই অলিম্পিক্সের ইতিহাসে টেনিসে ভারতের জেতা একমাত্র পদক।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টেনিসের হল অফ ফেমে জায়গা পেয়েছেন লিয়েন্ডার। ভারত তো বটেই, এশিয়ার আর কোনও টেনিস খেলোয়াড়ের যে নজির নেই। যে কারণে বৃহস্পতিবার বন্ধন ব্যাঙ্কের তরফে কলকাতায় তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হল। আজ রাতেই জ্যাভলিন ফাইনালে নামছেন নীরজ? কী বার্তা দেবেন দেশের সোনার ছেলেকে? এবিপি আনন্দের প্রশ্নে লিয়েন্ডার বললেন, 'আমরা সকলেই ওর জন্য গলা ফাটাব। আর শুধু ওর জন্যই নয়, ভারতের সব অ্যাথলিটদের জন্যই আমার সমর্থন সব সময় থাকবে।'
বিনেশের দুর্ভাগ্যজনকভাবে পদক হারানো নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি লিয়েন্ডার। শুধু বলেছেন, 'বিনেশ, ওর পরিবারের সকলের জন্য আমার খারাপ লাগছে। তবে গোটা বিষয়টা আমি সঠিকভাবে জানি না। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়।'
লিয়েন্ডার, মহেশ ভূপতিরা অবসর নিয়েছেন। রোহন বোপান্নার কেরিয়ারও কার্যত শেষ। টেনিসে ভারতের নতুন কোনও মুখ উঠে আসছে না কেন? চলতি অলিম্পিক্সে ভারতের একাধিক তারকা ভাল শুরু করেও পদক জয়ের সামনে গিয়ে খেই হারিয়েছেন, সমস্যাটা কোথায়? লিয়েন্ডার বলছেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সঠিক সময় এটা নয়। কারণ, শুধু টেনিস নয়, সব খেলারই তৃণমূল স্তরে কাজ করা প্রয়োজন। বাংলার খেলাধুলোর সংস্কৃতি খুব সমৃদ্ধ। এখানে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ফুটবল ডার্বি শতাব্দীপ্রাচীন। আমিও অলি-গলিতে খেলে বড় হয়েছি। আমার বাবা ভেস পেজ়ই আমার গুরু। মায়ের প্রভাবও বিরাট। আমার বাবা-মা চেয়েছিলেন, ফুটবল, হকি বা বাস্কেটবল না খেলে আমি ব্যক্তিগত স্পোর্টসে অংশ নিই। সেই থেকেই টেনিসে আসা।'
লিয়েন্ডারের মতে, শুরুতেই আইপিএল, আইএসএল বা অলিম্পিক্সের মতো বড় মঞ্চের কথা না ভেবে তৃণমূল স্তরে জোর দেওয়া উচিত। বলছেন, 'বড় খেলায়োড় কোনও চোখধাঁধানো স্টেডিয়ামে তৈরি হয় না। তৈরি হয় পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জের গলিতে খেলাধুলো করে।'
পুরুষ ডাবলস ও মিক্সড ডাবলস - দুইয়েই কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম রয়েছে কিংবদন্তি লিয়েন্ডারের। তবে লিয়েন্ডারের মতে, ১৯৯৯ সালে জেতা উইম্বলডনই তাঁর মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করেছিল। সেই সঙ্গে তিনি যোগ করছেন, 'প্রত্যেকের জীবনে খারাপ সময় আসে। সকলেই কোনও না কোনও সময়ে ব্যর্থ হয়। সেখান থেকে উঠে দাঁড়াতে হয়। শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও দরকার হয়।'
বন্ধন ব্যাঙ্কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রচুর খুদের পড়াশোনা ও খেলাধুলোর দায়িত্ব নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন লিয়েন্ডার।
আরও পড়ুন: অভিমান ভুলে দাদার রিসেপশনে হাজির সৌরভ, কী পোশাক পরেছিলেন নবদম্পতি?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।