সিডনি: তাঁকে বলা হতো স্পিনের জাদুকর। মাইক গ্যাটিংকে করা তাঁর বলকে শতাব্দীর সেরা হিসাবে মেনে নিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সেই শেন ওয়ার্নের (Shane Warne) সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে ১১ অগাস্ট দিনটি।
কেন?
বিশ্বের প্রথম বোলার হিসাবে এই দিনই টেস্টে ছশো উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন ওয়ার্ন। তৈরি করেছিলেন ইতিহাস। যেন প্রমাণ করেছিলেন, দক্ষতা আর ইচ্ছেশক্তি থাকলে অসম্ভব নয় কোনও কিছুই।
সাল ২০০৫। অ্যাশেজে মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। ১১ অগাস্টের কথা। বিশ্বের প্রথম বোলার হিসাবে টেস্টে ছশো উইকেট সম্পূর্ণ করেন ওয়ার্ন। এবং সেই কীর্তি গড়েন বিপক্ষের ঘরের মাঠে। ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। কাকতালীয় হলেও, এটাই সেই মাঠ যেখানে ১৯৯৩ সালে ওয়ার্নের হাত থেকে বেরিয়েছিল বিখ্যাত সেই ডেলিভারি। যাতে বপোল্ড হয়েছিলেন গ্যাটিং। যে ডেলিভারিকে শতাব্দীর সেরা বল হিসাবে চিহ্নিত করেছেন সকলে।
ওয়ার্নের ছশোতম শিকার হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন মার্কাস ট্রেসকোথিক। ওয়ার্নের বলে স্যুইপ করতে গিয়েছিলেন ট্রেসকোথিক। বল তাঁর ব্যাটের পিছনের দিকে লেগে শূন্যে উঠে যায়। দুরন্ত ভঙ্গিতে সেই বল তালুবন্দি করেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। গোটা অস্ট্রেলিয়া শিবির উৎসবে মেতে ওঠে। ১৭ বছর পরেও ওয়ার্নের সেই কীর্তি আজও অমলিন হয়ে রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে।
ওয়ার্নের স্মৃতিতে
প্রয়াত লেগস্পিনারের স্মৃতি বারে বারে ফিরে আসছে ক্রিকেট বিশ্বে। তাঁর নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় তো বটেই, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডেও ওয়ার্নের স্মৃতি ফিরছে। ব্রিস্টলের ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন ওয়ার্ন। তখন তাঁর বয়স ১৮। তখনও তিনি পরিচিত নাম হয়ে ওঠেননি। অস্ট্রেলিয়ার উদীয়মান ক্রিকেটার হিসাবে খেলতে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ক্লাবে। সে সময়ের কথা বলেছেন ব্রিস্টলের বাসিন্দা নাইজেল বেভান। ওয়ার্নকে নিয়ে নাইজেলের লেখা একটি চিঠি সোশ্যালস মিডিয়ায় পোস্ট করেছে ইংল্যান্ডের বার্মি আর্মি।
সেই চিঠিতে নাইজেল লিখেছেন, ‘ওয়ার্ন তখন ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতে এসেছিলেন। এক দিন রাতে ক্লাবের তাঁবুতেই ঘুমিয়ে ছিলেন। সে দিন মাঠকর্মীদের কাজে সাহায্য করেছিলেন ওয়ার্ন। মাঝে মধ্যেই ওঁকে মাঠকর্মীদের সাহায্য করতে দেখতাম। কারণ মাঠের পাশেই আমার বাড়ি। সকালে উঠে মাঠের বাউন্ডারি পরীক্ষা করছিলেন ঘুরে ঘুরে। সে সময় আমার স্ত্রী বাড়ির বাগানে একটা ছোট পুকুর কাটছিলেন। তা দেখেই ওয়ার্ন সাহায্য করার প্রস্তাব দেন আমার স্ত্রীকে। উত্তর পাওয়ার আগেই দৌড়ে মাঠের বেড়া টপকে আমার বাড়ির বাগানে চলে আসেন। সারা দিন আমার স্ত্রীকে পুকুর কাটার কাজে সাহায্য করেন। ওয়ার্নের সাহায্যেই এক দিনে পুকুর কাটা শেষ হয়েছিল'।
নাইজেল জানিয়েছেন, সেদিনই ওয়ার্ন তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন যে, তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে চান। নাইজেল এ-ও জানিয়েছেন যে, ওয়ার্নের কাটা সেই পুকুর এখনও রয়েছে তাঁর বাগানে।
আরও পড়ুন: পদকজয় বদলে দিয়েছে জীবন! সেনাবাহিনীতে পদোন্নতির পথে অচিন্ত্য