কলকাতা: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, তারপরেই দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান (India vs Pakistan)। এ বার টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়া কাপ। দুই পড়শি দেশ প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে মুখোমুখি হয়েছিল আজ থেকে ১৫ বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেইবার দুই ম্যাচেই পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ভারত। প্রথম ম্যাচ ড্র হওয়ার পর বোল আউটে জিতেছিল ভারত। আর দ্বিতীয়বার একেবারে ফাইনালে (2007 T20 World Cup Final) হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত।


ফাইনালে ম্যাচ সেরা ইরফান


সেই ফাইনালে বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ইরফান পাঠান (Irfan Pathan)। মাত্র ১৫৭ রান ডিফেন্ড করতে নেমে নির্ধারিত চার ওভারে ১৬ রানের বিনিময়ে ইরফানের তিন উইকেট নেওয়াই ভারতের জয় সুনিশ্চিত করায় বড় ভূমিকা নিয়েছিল। ইরফান তৎকালীন পাকিস্তান অধিনায়ক শোয়েব মালিক, একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখা শাহিদ আফ্রিদি এবং ভাল ছন্দে দেখানো ইয়াসির আরাফাতকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন। এই কৃপণ বোলিং এবং তিন গুরত্বপূর্ণ উইকেটের জেরেই মিসবা উল হক একদিক থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বড় পার্টনারশিপ গড়তে পারেননি তিনি। পরিণামে পাঁচ রানে ম্যাচ ও বিশ্বকাপ জিতে নেয় ভারতীয় দল।


সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে এক তরুণ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। সেই শুরু ধোনি জমানা। তারপর থেকে একের পর এক ট্রফি এসেছে ধোনির হাত ধরে। তাই ভারতীয় দলের ভাগ্য বদলের ক্ষেত্রে এই বিশ্বকাপ জয়ের অবদান কিন্তু অনেকটাই। সেই বিশ্বকাপের ফাইনালের তিনি ভাল পারফর্ম করলেও বাকিদের দাপটের জেরে তাঁর পারফরম্যান্স পাত্তাই পায়নি বলে মনে ধারণা ইরফানের। একদা এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, 'আমি প্রথমদিন থেকেই টুর্নামেন্টে ভালই বল করছিলাম। তব কিছুতেই স্বীকৃতি পাচ্ছিলাম না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উইকেট নিয়েছিলাম আমি, তবে যুবরাজ ওই ম্যাচেই ছয় ছক্কা হাঁকায়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আগ্রাসী ব্যাটিং করছিল। আমি ওর উইকেট নিই। তবে সেই ম্যাচ ঘোরানো পারফরম্যান্সটা হচ্ছিল না।'


টার্নিং পয়েন্ট


ফাইনালেই বল হাতে জ্বলে উঠেন ইরফান, আসে কাঙ্খিত পারফরম্যান্স। 'আমি বারবার নিজেকে প্রশ্ন করছিলাম, কখন সেই ম্যাচ ঘোরানো পারফরম্যান্সটা করব। ভাবতেও পারিনি ফাইনালেই সেটা আসবে। আফ্রিদি চলে গেলে ও একাই ম্যাচ নিয়ে যেত। ওকে আমি শূন্য রানে ফেরাই। সেটাই ম্যাচ ঘোরায়। সেই কারণেই এই পারফরম্যান্সটা আমার অন্যতম সেরা বলে মনে করি। আমার জীবনের সেরা স্মৃতি এটা। তখন তো বুঝতেই পারিনি আমরা কী করেছি। পরে বুঝি।' জানান ইরফান। ইরফান সেই বিশ্বকাপে ১৪.৯০ গড়ে ভারতের হয়ে ১০টি উইকেট নিয়েছিলেন। সেই বিশ্বকাপের ফাইনালের পর ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। রবিবার (২৭ অগাস্ট) আবারও মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। এবারেও কী পাকিস্তানকে হারাতে পারবে ভারত? তা অবশ্য সময়ই বলবে।


আরও পড়ুন: টেস্ট ওপেনার হিসাবে ব্যর্থ হবেন ভয়ে আগেই প্যাড পরছিলেন দ্রাবিড়, নবাবি ইনিংসে ধারণা বদলান সহবাগ