কলকাতা: ১৯৯৯ বিশ্বকাপের (1999 Cricket World Cup) মাঝপথেই হঠাৎ করেই বাবা রমেশ তেন্ডুলকরের মৃত্যুতে ভারতীয় দল ছেড়ে দেশে ফিরে আসতে হয়েছিল সচিন তেন্ডুলকরকে (Sachin Tendulkar)। শোকস্তব্ধ তেন্ডুলকর পরিবারের কেউই এই মৃত্যু সহজে মেনে নিতে পারেননি। তবে বাবা মারা যাওয়ার ঠিক তিনদিন পরেই ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে কেনিয়ার বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় অপরাজিত ১৪০ রানের ইনিংস খেলেন সচিন। সেই শতরানের পর সচিনের আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবাকে শতরান উৎসর্গ করার ছবি ভারতীয় সমর্থকরা আজও ভোলেননি।


মায়ের পরামর্শেই ফেরেন সচিন


তবে সচিন এমন সময়ে কিন্তু নিজে থেকে পরিবারকে ছেড়ে বিলেতে গিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে রাজি হননি। বরং তাঁর মাই জোর করে তাঁকে ভারতের হয়ে খেলার জন্য পাঠান। সেই স্মৃতি মনে করে সচিন জানিয়েছিলেন, 'ওটা আমার জীবনের সবথেকে খারাপ সময়। সেই সময় আমার মা আমায় বলেছিলেন যে বাবা বেঁচে থাকলে তিনিও চাইতেন যে আমি যেন বিশ্বকাপে খেলি। ঘরে বসে থাকার চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। মায়ের এই কথাগুলোই আমায় শক্তি প্রদান করে। ওই সমর্থনটা আমার দরকার ছিল। কারণ ওই সময়টা গোটা পরিবারের জন্যই খুব কঠিন ছিল। বাবার মৃত্যুর তিনদিন পরেই আমার পক্ষে নয়তো ক্রিকেট ম্যাচ খেলাটা সক্ষম হত না।'


ঐতিহাসিক শতরান


দেশ ছেড়ে কেনিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের ঠিক আগের দিন, ২২ মে ইংল্যান্ডে ভারতীয় দলে আবারও যোগ দেন সচিন। তারপরেই আসে তাঁর সেই ঐতিহাসিক ১০১ বলে ১৪০ রানের ইনিংস। এই ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাট করতে নামেন সচিন। বিরাট গর্জনের মাধ্যমে মাঠে উপস্থিত সমর্থকরা স্বাগত জানান 'মাস্টার ব্লাস্টার'-কে। এরপর ব্যাট হাতে ২২ গজ শাসন। ইনিংস যত এগোয়, ততই আগ্রাসী ভঙ্গিমায় ব্যাট করেন সচিন। তিনি ৫৪ বলে পূরণ করেন অর্ধশতরান। ৮৪ বলে আসে শতরান। আর শেষ ১৭ বলে করেন ৪০।


সচিনের এই ইনিংস সাজানো ছিল ১৬টি চার ও তিনটি ছক্কায়। ওয়ান ডে কেরিয়ারে এটি ভারতীয় মহাতারকার ২২তম শতরান। তবে ওয়ান ডেতে এই ম্যাচেই প্রথম ওপেনার হিসেবে নয়, বরং মিডল অর্ডারে ব্যাট করে শতরান করেন সচিন। সচিনের পাশাপাশি অবশ্য এই ম্যাচে রাহুল দ্রাবিড়ও ১০৪ রান করেন। ভারত দুই উইকেটে ৩২৯ রান তোলে। কেনিয়া ম্যাচে ২৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি। ৯৪ রানের এই জয়ে ভারতের ওই বিশ্বকাপে সুপার সিক্সে ওঠার আশাও জীবিত থাকে। স্বাভাবিকভাবেই সচিনকেই ম্যাচ সেরা ঘোষণা করা হয়।


আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সচিনের অপরাজিত ১৮৬, ঔজ্জ্বল্য বেড়েছিল ১৯৯৯ সালের দীপাবলির