প্যারিস: কিছুদিন আগেই মনু যখন ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন, তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে পছন্দের খাবার কী? মায়ের হাতের আলু পরোটার বদলে তখন ব্রোঞ্জ মেডেলটি কামড়ে ছবি তোলেন ভারতের তরুণী শ্যুটার। এটাও বলেন যে ব্রোঞ্জ পদকটিই তাঁর সবচেয়ে পছন্দের খাবার এখন। কিন্তু শুধু মনুই নয়। অলিম্পিক্সের ইতিহাসে পদক কামড়ে ছবি তোলার বা ফটোসেশনের ঘটনা অনেক পুরনো। মাইকেল ফেল্পস, উসেইন বোল্ট, সিমোনে বাইলসরা ছাড়াও ভারতের সাক্ষী মালিককেও দেখা গিয়েছিল রিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ের পর মেডেলে কামড় দিতে। কিন্তু কেন? কয়েকটি সম্ভাব্য উত্তর খোঁজা যাক-
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে আগেকার দিনে স্বর্ণব্যবসায়ীরা এই সোনা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এমনটা করে থাকতেন। সত্যিকারের খাঁটি সোনা কি না, তা জানার জন্য স্বর্ণমুদ্রায় কামড়ে দাগ কাটা হত। তা থেকেই বোঝা যেত যে সোনাটি আসল না নকল। কিন্তু অলিম্পিক্সে পদকজয়ীদের ক্ষেত্রে এই কারণটা কোনওমতেই যুক্তিযুক্ত নয়। তাছাড়া ১৯১২ সাল থেকে অলিম্পিক্স কমিটি সত্যিকারের সোনার পদক দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে আসল, নকল যাচাইয়ের কোনও কারণ এখানে আসেই না। তাহলে?
অলিম্পিক্স কমিটির এক রিপোর্টে প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী এইভাবে মেডেলে কামড় দেওয়াটা আরও বেশি করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফটোগ্রাফারদের আবদারে। তাঁরা নাকি পদকজয়ীদের এভাবে কামড় দেওয়ার পোজ দিতে বলে থাকেন। সেই অনুয়ায়ী ফটোও তোলা হয়। ডেভিড ওয়ালেচিনস্কি এক জনপ্রিয় ফটোগ্রাফার বলেছিলেন, ''এটা ফটোগ্রাফারদের একরকম নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে এভাবে ফটো তোলাটা। আমার মনে হয় এই ধরণের ছবি পরের দিনের সংবাদপত্রের প্রথম পাতার সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে ফটোগ্রাফাররাও ইচ্ছে করেই এমন ছবি তুলতে চান।''
২০১০ সালে উইন্টার অলিম্পিক্সে রুপো জিতেছিলেন জার্মানির অ্যাথলিট ডেভিড মােলার। তিনিও একইভাবে ফটো তুলতে গিয়ে নিজের দাঁত ভেঙে ফেলেছিলেন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ''ফটোগ্রাফাররা আমাকে ওইভাবে পোজ দিতে বলেছিলেন। আমি সেরকমই দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে যখন ডিনার করতে যাই, তখন লক্ষ করি যে আমার দাঁত ভেঙে গিয়েছিল।''