প্যারিস: আমিশা রাওয়াত (Amisha Rawat)। ছবির মতো সাজানো রাজ্য উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) বাসিন্দা। প্যারিস প্যারালিম্পিক্সের (Paris Paralympics 2024) যোগ্যতা অর্জন করেছেন আমিশা। গড়েছেন নজির। নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jawaharlal Nehru University) ছাত্রী। প্যারালিম্পিক্সে মহিলাদের শট পাট এফ ৪৬ বিভাগে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। প্রতিকূলতাও তাঁর ইচ্ছেশক্তিকে খর্ব করতে পারেনি।


রুদ্রপ্রয়াগে বাড়ি। সেই রুদ্রপ্রয়াগ, যেখানকার পাহাড়-জঙ্গলের পরতে পরতে রোমাঞ্চ। জিম করবেটের কলমে যেখানকার হাড় হিম করা মানুষখেকো চিতাবাঘের কাহিনি এখনও অনেকের মুখে মুখে ফেরে। পাহাড়ি সেই শহর থেকেই উত্থান আমিশার। যাঁর একটা হাত কনুই পর্যন্ত। রয়েছে শারীরিক সীমাবদ্ধতা। তবে স্বপ্ন দেখা থামেনি সাহসী কন্যার। আর্থিক বাধাও তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।


একটি সাক্ষাৎকারে আমিশা বলেছেন, 'আমার পথে প্রচুর বাধা ছিল। আমার পরিবারকে অভাবের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। বাড়ির কাছে একটা ছোট বাগানে প্র্যাক্টিস করতাম। দৌড়, লং জাম্পের মতো একাধিক ইভেন্টে অংশ নিতাম। কোনও প্রশিক্ষক ছিল না। যেটুকু শিখেছি, ইউ টিউবের সৌজন্যে।'


স্কুলে আমিশার ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের শিক্ষক অনিল কান্দওয়াল প্রথম উপলব্ধি করেন, সঠিক পরিচর্যা হলে এ মেয়ে অনেক দূর যাবে। তাঁর কথাতেই উত্তরাখণ্ডের রাজ্য প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন আমিশা। সেখানে ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দৌড়ে সোনা জেতেন।


আমিশার পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হন উত্তরাখণ্ডের প্যারা স্পোর্টস সংস্থার সচিব প্রেম কুমার। জাতীয় প্যারা দলে সুযোগ পাওয়া প্রেম কুমারের উদ্যোগে। তবে পেশাদার কোচের অভাবে আমিশার প্রস্তুতি বিঘ্নিত হয়। এরপরই তাঁর সঙ্গে আলাপ ২০১৮ সালের এশিয়ান প্যারা গেমসের সোনা জয়ী সন্দীপ চৌধুরীর। তিনিই আমিশাকে শট পাট ও জ্যাভলিনে অংশ নিতে বলেন। সন্দীপের ডাকে দিল্লিতে আসা আমিশার। যদিও করোনার প্রাদুর্ভাবে সব পরিকল্পনা পিছিয়ে যায়।


করোনাকাল অতিবাহিত হতেই নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি শুরু আমিশার। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি দিল্লিতে রাকেশ যাদবের কোচিংয়ে শট পাট শুরু করেন। আমিশার কথায়, '২০২২ সাল থেকে শট পাটে মনোনিবেশ করি। খেলো ইন্ডিয়া গেমসে পদক পাই।'


এবার লক্ষ্য আরও বড়। প্যারিসে জাতীয় পতাকা ওড়ানোই স্বপ্ন আমিশার।



আরও পড়ুন: পথ দেখিয়েছিল বাংলা, জয় শাহর আগে ভারত থেকে আর কারা বসেছিলেন আইসিসির মসনদে?