চার বছর আগে ভারতীয় দলে কে এল রাহুল যে রূপান্তর এনেছে, তাতে আমি খুশি হয়েছি। এখনও ওর ব্যাটিং দেখলে সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হয়। ওর প্রতিভা সবসময়ই ছিল। সব ফর্ম্যাটে শতরান করে ও প্রতিভার পরিচয়ও দিয়েছে। ও আরও অনেক শতরান করতে পারত। সেই সুযোগ হেলায় হারিয়েছে। তবে এখন রাহুল যেভাবে খেলছে, সেটা দেখে আমার বেশি ভাল লাগছে। এখন ওর প্রতিভার সঙ্গে পরিণতি বোধ এসেছে। ফলে ও এখন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ও রান করছে, দারুণ সব শট খেলছে এবং দলকে ম্যাচ জেতানোর ইনিংস খেলছে। টেস্ট ফর্ম্যাট থেকে বাদ পড়া, একটি চ্যাট শোয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ও মাঠে এবং মাঠের বাইরে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং সে কথা মনে রেখেছে।
এখন রাহুল যা করছে, সবই ভাল হচ্ছে। ও ছাপ ফেলছে। অনিল কুম্বলের মতো একজনকে নিজের দলে পাওয়া আশীর্বাদস্বরূপ। অধিনায়ক হিসেবে ওর দায়িত্বও রয়েছে। ফলে ও নিজের প্রতিভাকে অন্য খাতে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। রাহুল বুঝতে পেরেছে, ও ব্যাটসম্যান হিসেবে কতটা ভাল। একার কাঁধে গোটা দলের দায়িত্ব বহন করার ক্ষমতা ওর আছে। একটা-দুটো ম্যাচে না, গোটা প্রতিযোগিতায় ভাল খেলে দলকে ট্রফি জেতাতে পারে ও। এখন রাহুল অধিনায়ক, ওপেনার, নিজের দলে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’। এরইসঙ্গে কিপিং করায় ওর বাড়তি পরিশ্রম হচ্ছে। তবে স্পষ্টতই ও এটা উপভোগ করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে আমি ড্রেসিংরুমে ওর কথা শুনেছি ও দেখেছি। ওর শ্রদ্ধা প্রাপ্য।
আমার বলতে বিশেষ দ্বিধা নেই, রাহুলের মধ্যে আমি বিরাট কোহলির জীবনের ছায়া দেখেছি। একজন তরুণ প্রতিভাবান সাময়িকভাবে পথ হারানোর পর নিজের ভুল শুধরে ফিরে এসে বিশ্ব শাসন করছে। রাহুলের কেরিয়ারও সেরকমই। আমার মনে হচ্ছে, রাহুল ২.০ বিরাটের মতোই ‘বিগ ব্লকবাস্টার’ হবে। সেটা হলে ভারতীয় দলই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। আগামী তিন বছরে সাদা বলের ফর্ম্যাটের তিনটি বিশ্বকাপ হবে। রাহুল ও বিরাট দু’জনেই সেরা ফর্মে থাকলে আমাদের কাপের খরা কাটার দারুণ সুযোগ আছে।
ব্যক্তিগতভাবে রাহুলের জন্য আমার আরও একটি লক্ষ্য রয়েছে। আমি চাই ও ভারতের হয়ে তিনটি ফর্ম্যাটেই খেলুক। ওর হাতে সব ধরনের শট আছে, টেম্পারামেন্ট আছে, আগেই বলের লেংথ বুঝতে পেরে যায় ও। ভাল বল সামলানোর মতো টেকনিক ওর আছে। তাছাড়া এখন ও পরিণত হয়েছে। তাই ও তিন ফর্ম্যাটেই খেললে দারুণ দেখতে লাগবে। তখন বসে ‘রাহুল শো’ উপভোগ করা যাবে।