মলপ্পুরম: বাংলা ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে জড়িয়ে। ময়দানের অনেক পুরনো সৈনিক তিনি। নিজের ফুটবল কেরিয়ার যেমন উজ্জ্বল ছিল, ঠিক তেমনই কোচিং কেরিয়ারেও নাম করেছেন। প্রচুর ছেলেকে তুলে এনেছেন, যারা ভারতীয় ফুটবলে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। আরও একবার কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে রঞ্জন ভট্টাচার্য। বাংলা ফুটবল দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর দলের ভোল পাল্টে দিয়েছিলেন। দলকে সন্তােষ ট্রফি ফাইনালে তুলে এবার খেতাব জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না। এবিপি লাইভকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন সন্তোষ ফাইনালের আগে বাংলা দলের প্রস্তুতি সম্পর্কে -


ফের সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে বাংলা, দলকে নিয়ে কতটা আশাবাদী?


দেখুন এর আগেও বাংলা দল সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে উঠেছে। চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। কিন্তু গোটা দলে বাঙালি ফুটবলারের ছড়াছড়ি এমনটা এর আগে কোনওবার হয়েছে কি না, তা বলা মুশকিল। আমি হলফ করে বলতে পারি, পুরো বঙ্গ ব্রিগেড এটা। কেরলের বিরুদ্ধে ফাইনালে এগারো বঙ্গসন্তানের লড়াই বিফলে যাবে না। ছেলেরা জানে কি করতে হবে ওদের। সবাই পরিশ্রম করেছে। তাই এতদূর আসতে পেরেছে। 


কেরলের বিরুদ্ধে লিগ পর্যায়ে হারতে হয়েছে? কিছুটা কি চাপ থাকবে?


এটা পুরোটাই মানসিক লড়াই। সবসময় নেগেটিভ চিন্তাভাবনা করার কোনও মানে হয় না। আমার মনে হয়েছে যে এই কেরলের বিরুদ্ধেও আমরা জিততে পারব। আমি ছেলেদের বলেছি যে আমি যেভাবে স্ট্র্যাটেজি করছি। যেভাবে গেমপ্ল্যান সাজাচ্ছি, ঠিক সেভাবেই খেলতে। বাংলার দলের জার্সিতে আমার কথাটা শুনতে বলেছি ছেলেদের। এরপর ওরা যেখানে খেলবে, ওদের মতো খেলুক। কিন্তু আমি চাই ছেলেরা এখানে আমার কথাটা শুনুক। এতে দলেরই ভাল। আর ছেলেরা সেটাই করছে। 


কেরল এখনও অপরাজিত এই টুর্নামেন্টে, কীভাবে দেখবেন বিষয়টি?


দেখুন আমি লিগ পর্যায়ে কেরল-বাংলা ম্যাচের মূল্যায়ণ করি, তবে কিন্তু আমি বাংলাকেই এগিয়ে রাখব। প্রথম ৪৫ মিনিটে বাংলার বল পজিশন বেশি ছিল, গোলমুখি শট বেশি ছিল, বাংলা কর্নার পেয়েছে বেশি। এমনও সুযোগ পেয়েছে যে বারের ওপর দিয়ে শট মেরেছে। দ্বিতীয় অর্ধে একেবারে শেষের দিকে গোল খেলেছিলাম আমরা। তবে আমি সেই ফল নিয়ে বেশি ভাবতে রাজি নই। আমার মনে হয় কেরলকে যদি কেউ হারাতে পারে, তবে তা একমাত্র বাংলা দল। আর সোমবার সেটাই হবে। লিগ পর্যায়ে হেরে যাওয়াটা আমাদের কাছে শাপে বর হয়েছে একদিকে। কেরলের সঙ্গে হারার পরই আমাদের ডু অর ডাই ম্যাচ হয়ে গিয়েছিল সব ম্যাচ গুলো। এবার ফাইনালেও ছেলেরা তাদের সেরাটাই দেবে।


বাংলা ফুটবলের ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল?


আমি এখন যে বাংলা দল দেখছি তাতে একটা বিষয় নিশ্চিত করে বলতে পারি এরকম আরও একটা বাংলা দল গড়ে তোলা যায়। মানসিকভাবে শক্ত হলেই এমন অনেক প্লেয়ার আরও উঠে আসবে। গোটা বাংলা জুড়ে একাধিক প্রতিভা রয়েছে। এখন আইএসএলের বেশিরভাগ দলে দেখা যায় যে নর্থ ইস্টের প্লেয়ার। আগে কিন্তু বাংলার প্লেয়ার সব জায়গায় খেলত। আমি এটুকুও বলব যে কোচিংয়র পদ্ধতি যদি এখানে একটু বদল করা হয়, তবে বাংলার ফুটবলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। প্রচুর ছেলে আছে, যারা পরবর্তীতে দেশের জার্সিতে নাম করবে।