কলকাতা: রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) জয়ের হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে বাংলা শিবির। কটকের বরাবাটি স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচের তৃতীয় দিনের শেষে কোণঠাসা চণ্ডীগড়। শেষ দিন বাংলার জয়ের জন্য চাই আর ৮ উইকেট। হাতে রয়েছে ৩৯৮ রান।


দিনের খেলার শেষে আত্মবিশ্বাসী অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar)। দ্বিতীয় ইনিংসে যিনি বাংলার সর্বোচ্চ স্কোরার। অনুষ্টুপ বলছেন, 'পিচ কিছুটা মন্থর হয়ে গিয়েছে। বোলারদের কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। তবে বোলাররা আমাদের শেষ দুটি ম্যাচ জিতিয়েছে। ওদের ওপর আমাদের ভরসা রয়েছে। ওদের জন্যই মনে হচ্ছে, শেষ দিন ৮ উইকেট তুলে জেতা সম্ভব।'


তৃতীয় ম্যাচে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলার ব্যাটিং। অনুষ্টুপ বলছেন, 'এখনও সেরাটা আসা বাকি। এই ম্যাচে আমাদের হাতে বড় রান রয়েছে। তবে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক হতে পারছি না। সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে। বাংলার হয়ে রান করতে সব সময়ই ভাল লাগে।


বাংলা আর টুর্নামেন্টে টানা তিন ম্যাচে সরাসরি জয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৮ উইকেট। রবিবার, ম্যাচের শেষ দিন চণ্ডীগড়ের শেষ আট উইকেট ফেলতে পারলেই তিনে তিন করবে বাংলা।


চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছে বাংলা। তার জন্য আর ৮ উইকেট চাই। রবিবার গোটা দিনটা পাবে বাংলা। জয়ের জন্য ৪১৩ রান তাড়া করতে নেমে শনিবার, তৃতীয় দিনের শেষে চণ্ডীগড়ের স্কোর ১৪/২। এখনও ৩৯৯ রান চাই মনন ভোরাদের। যা ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে। বরং এখান থেকে সারাদিন ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করলে সেটাই হবে কৃতিত্বের।


প্রথম ইনিংসে বাংলার ৪৩৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় চণ্ডীগড়। শনিবার তৃতীয় দিনে ৬ উইকেটে ১৩৩ রানে খেলা শুরু করে চণ্ডীগড়। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই তারা অল আউট হয়ে যায়। শেষ চারটি উইকেটের মধ্যে ঈশান পোড়েল ২টি এবং মুকেশ কুমার ও শাহবাজ আহমেদ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।


তৃতীয় দিনের চতুর্থ ওভারে প্রথম আঘাত হানেন মুকেশ কুমার। তাঁর বলে গৌরব গম্ভীর (১৩) এলবিডব্লিউ হন। এর পর অঙ্কিত কৌশিক এবং যশকরণদীপ সিংহ অষ্টম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন। তবে এই জুটি ভাঙেন ঈশান। তাঁর বলে কট বিহাইন্ড হন কৌশিক (৬৩)। সেই ওভারেই চন্দননগরের পেসার তুলে নেন শ্রেষ্ঠ নির্মোহির (০) উইকেটও। পরের ওভারে যশকরণদীপকে (৩১) ফেরান শাহবাজ।


দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বড় ধাক্কা খায় বাংলা। ১৮ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে বসে তারা। অভিমন্যু ঈশ্বরণ আউট হন ১৪ করে। এর পর একের পর এক উইকেট তারা হারাতে থাকে। ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলা। ঋত্বিক রায়চৌধুরী ৬ রান করে আউট হন। সুদীপ ঘরামি আউট হন মাত্র ১৩ রান করে। মন্ত্রীমশাইও ফের ব্যর্থ। মনোজ তিওয়ারিও আউট হন ১৩ করে। দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিষেক পোড়েলরা। অনুষ্টুপ ৪৩ করে আউট হন। অভিষেকের সংগ্রহ ৩৮ রান। এ ছাড়াও ৩২ রান করেন শাহবাজ আহমেদ। ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান করে বাংলা ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে। মোট ৪১২ রানে এগিয়ে থেকেই ডিক্লেয়ার করেছে বাংলা।


রান তাড়া করতে নেমে আবার ১৪ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে বসে রয়েছে চণ্ডীগড়। মুকেশ কুমার এবং ঈশান পোড়েল ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। আরসলান খান ৪ রান করে আউট হয়েছেন। ১০ করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন হরনুর সিংহ। বাংলা শিবির জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে।