নয়াদিল্লি: প্রিয়জনকে হারানোর শোক বুকে নিয়ে ক্রিকেট মাঠে নামার নজির এর আগেও আছে। সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar) থেকে বিরাট কোহলি (Virat Kohli), অনেকেই পিতৃহারা হয়ে মাঠে নেমেছেন। তবে বিষ্ণু সোলাঙ্কির  (Vishnu Solanki) সঙ্গে যা ঘটেছে, তা হয়তো অন্য কেউ অনুভব করতে পারবেন না।


১১ ফেব্রুয়ারি সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে হারান বিষ্ণু। তা সত্ত্বেও বঢোদরার হয়ে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে শুধু মাঠে নামাই নয়, দলের প্রয়োজনে দুর্দান্ত ১০৪ রানের ইনিংসও খেলেন তিনি। তবে ম্যাচের শেষদিন, রবিবার তাঁর অসুস্থ বাবাও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এমন পরপর দুই আপনজনের মৃত্যু নিঃসন্দেহে যে কাউকে ভেঙে দেবে। তবে এখানেই বিষ্ণু আলাদা। অভূতপূর্ব মানসিক দৃঢ়তার প্রদর্শন দেখিয়ে বঢোদরা দলের হয়ে তিনি মরসুমের তৃতীয় তথা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও মাঠে নামতে প্রস্তুত তিনি।


মেয়ের শেষকৃত্যের জন্য ফেরত আসায় তিনদিন নিভৃতবাসে থাকার নিয়ম অনুযায়ী বিষ্ণু প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি। তবে বাবার মৃত্যুর পর তিনি ফিরছেন না। বরং দলের সঙ্গেই থেকে পরের ম্যাচের প্রস্তুতি সারছেন। বঢোদরা ক্রিকেট সংস্থার সচিব অজিত লেলে বলেছেন, ‘ও ফিরে আসছে না, শেষ ম্যাচেও খেলবে। ও তৃতীয় ম্যাচে খেলবে এবং দলের সঙ্গেই থাকছে।’ ৩ মার্চ বঢোদরা এলিট গ্রুপ বি-র ম্যাচে হায়দরাবাদের মুখোমুখি হবে।


জীবনে ঝড় বয়ে গিয়েছে মাত্র ২৯ বছর বয়সেই। বঢোদরার মিডল অর্ডার ব্যাটার ১২ ফেব্রুয়ারি হারিয়েছেন সদ্যোজাত কন্যাকে। পিতৃত্বের আনন্দ উপভোগ করার আগেই তছনছ হয়ে যায় তাঁর পরিবার। শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিষ্ণুকে ছেড়ে চলে যায় বহু দূরে। তার পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করে বিষ্ণু সোলাঙ্কি ফিরে আসেন তাঁর রাজ্য দলের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলতে। বাধ্যতামূলক নিভৃতবাস শেষ করেই বুকে পাথর চাপিয়ে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে যান তিনি। তারপরেই ক্রিকেটবিশ্ব দেখে এক অদম্য লড়াই। ১৬১ বলে ১০৪ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন বঢোদরার এই ব্যাটার। মারেন ১২টি চার। তাঁর এই লড়াইয়ের কথা শুনে শ্রদ্ধায় মাথায় ঝোঁকায় ক্রিকেট মহল থেকে আমজনতা। এমন মরিয়া লড়াই করে তাঁর দলকে প্রথম ইনিংসে ৫০০ রানের গণ্ডি পার করান বিষ্ণু। এবার বাবার মৃত্যুশোক বুকে চেপে ফের বাইশ গজে পরীক্ষায় বসতে চলেছেন ২৯ বছরের বিষ্ণু।


জৈব সুরক্ষা বলয়ের আতঙ্ক! আইপিএল থেকে সরলেন তারকা ক্রিকেটার