সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ঘরোয়া ক্রিকেটে হইচই ফেলে দিয়েছেন হনুমা বিহারি। ভাঙা হাত নিয়ে পরপর দুই ইনিংসে ব্যাট করে। অন্ধ্র প্রদেশের ব্যাটারের সাহসিকতায় মুগ্ধ লক্ষ্মীরতন শুক্ল-মনোজ তিওয়ারিরাও।


সেমিফাইনালে তাঁরা হতে পারেন প্রতিপক্ষ। কারণ, মধ্যপ্রদেশ বনাম অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে খেলবে বাংলা। যদিও হনুমার সঙ্গে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনও সম্ভাবনা নেই। সেমিফাইনালে উঠলেও, বাংলার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না হনুমা। ৪-৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে।


তবে বৃহস্পতিবার সকলকে ফের হতবাক করে দিয়েছেন হনুমা। ভাঙা হাত নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয় হয়েছে অন্ধ্র প্রদেশের। বাধ্য হয়ে ব্যাট করতে নামেন হনুমা। বাঁহাতের কব্জি ভাঙা থাকায় বাঁহাতে ব্যাটিং করেন। ১৬ বলে ১৫ রান করেন তিনি। মারেন তিনটি বাউন্ডারিও।


যে সাহসিকতা দেখে মুগ্ধ লক্ষ্মীরতন শুক্ল-মনোজ তিওয়ারিরা। বাংলা বনাম ঝাড়খণ্ড ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর মাঠ ছেড়ে বেরনোর সময় লক্ষ্মী বললেন, 'দারুণ সাহস দেখিয়েছে হনুমা। খুব ভাল উদাহরণ তৈরি করল।' বাংলার অধিনায়ক মনোজও প্রশংসা করলেন জাতীয় দলে এক সময় খেলা হনুমার। বললেন, 'তরুণ ছেলেদের সামনে দৃষ্টান্ত তৈরি করল।'


ম্যাচে অবশ্য বেশ চাপে অন্ধ্রপ্রদেশ। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ৯৩ রানে শেষ হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে মধ্যপ্রদেশ বিনা উইকেটে ৫৮ রান। ম্যাচ জিততে এখনও ১৮৭ রান চাই মধ্যপ্রদেশের।


প্রথম ইনিংসে যখন চোট পেয়েছিলেন, ৩৭ বলে ১৬ রান করেছিলেন হনুমা। চোট পাওয়ার পর স্ক্যান করিয়ে দেখা যায়, তাঁর কব্জি ভেঙেছে। ৫ থেকে ৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে হনুমাকে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন অন্ধ্রের দুই ব্যাটার রিকি ভুঁই ও কর্ণ শিণ্ডে। একটা সময় ৩২৩/২ ছিল স্কোর। তারপরই ব্যাটিং বিপর্যয়। ৩৫৩/৯ হয়ে যায় অন্ধ্রপ্রদেশ। সেই সময়ই মাঠে ফেরেন হনুমা। বাঁহাতে ব্যাটিং শুরু করেন। পুরো টেপ জড়িয়ে রেখেছিলেন বাঁহাতে। কার্যত এক হাতেই ব্যাট করেন। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে ৫৭ বলে ২৭ রান করে আউট হন তিনি।


হনুমার অবশ্য বাইশ গজে সাহসিকতার নিদর্শন এই প্রথম নয়। সিডনিতে হ্যামস্ট্রিংয়ে গুরুতর চোট নিয়ে আর অশ্বিনের সঙ্গে ব্যাটিং করে টেস্ট ম্যাচ বাঁচিয়েছিলেন হনুমা। রঞ্জি ট্রফিতে আবেশ খানের বাউন্সারে বাঁহাতের কব্জি ভেঙে যায় হনুমার। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। তবে পরে মাঠে ফেরেন হনুমা। সকলকে হতবাক করে দিয়ে। যদিও বাঁহাতের কব্জি ভাঙা থাকায় তিনি ডানহাতে ব্যাট করেননি। কারণ, ডান হাতে ব্যাট করলে বাঁহাতের কব্জিতে ফের চোট লাগার আশঙ্কা ছিল। তাই আশ্চর্যজনকভাবে বাঁহাতে ব্যাটিং করেন হনুমা। 


আরও পড়ুন: ইডেনে দাপট বাংলার বোলারদের, মনোজদের সেমিফাইনালের টিকিট সময়ের অপেক্ষা