সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রবিবার ভোর থেকে কুয়াশায় ঢাকা কলকাতা। লোকাল ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে চলছে। যানবাহনের গতিও শ্লথ।


বাংলা শিবিরও একটা সময় প্রার্থনা করছিল, বাউন্ডারি লাইন থেকে অর্পিত বাসবডার থ্রো-টাও যদি একটু মন্থর গতিতে আসত। তাহলে অন্তত লড়াইয়ের সামান্যতম আশা বেঁচে থাকলেও থাকতে পারত।


চতুর্থ দিন সকালের ষষ্ঠ ওভার। জয়দেব উনাদকটের বলে দুরান সম্পূর্ণ করলেন মনোজ তিওয়ারি। তারপর তিন রান নিতে দৌড়লেন। অর্পিত বাসবডা তখন বাউন্ডারি লাইন থেকে বল কুড়িয়ে নিখুঁত থ্রো করেছেন। মনোজ ও শাহবাজ ভুল বোঝাবুঝিতে ক্রিজের এক প্রান্তে। স্টাম্প ভেঙে দিল সৌরাষ্ট্র। ৩৮ বলে ২৭ রান করে ফিরলেন শাহবাজ। বাংলার স্বপ্নভঙ্গের শুরু।


তারপর একে একে ফিরলেন মনোজ তিওয়ারি (৬৮), অভিষেক পোড়েল (৩)। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলার স্কোর ২০৬/৯। এখনও ২৪ রানে পিছিয়ে বাংলা। ইনিংস হার এড়ানো মুশকিল।


মাথার ওপর ২৩০ রানের লিডের বোঝা। তার ওপর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও ব্যাটিং বিপর্যয়। বাংলা শিবির কিছ বুঝে ওঠার আগেই ইডেন গার্ডেন্সের স্কোরবোর্ডে জ্বলজ্বল করে উঠল, ৪৭/৩। ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন সুমন্ত গুপ্ত, অভিমন্যু ঈশ্বরণ ও সুদীপ ঘরামি।


বড়িশা স্পোর্টিংয়ের ক্রিকেটার সুমন্ত রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে অভিষেক ঘটিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ফিরেছিলেন ১ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসেও স্কোরারদের তিনি বিব্রত করেননি। ১ রান করেই ফিরলেন। রান পাননি অন্য ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণও। যাঁর বিরুদ্ধে বরাবরের অভিযোগ, তিনি গ্রুপ পর্বে ব্যাট হাতে রাজা। বড় ম্যাচে ফকির। প্রথম ইনিংসে শূন্য করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রান করে ফিরলেন অভিমন্যু।


গোটা মরসুমে ব্যাট হাতে ভরসা দিয়েছিলেন সুদীপ ঘরামি। সেমিফাইনালেও রান পেয়েছিলেন। ঘরের মাঠে ফাইনালে তিনিও দুই ইনিংসে ব্যর্থ। একটা সময় দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ব্যাট করতে পারবেন কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার, ম্যাচের দ্বিতীয় দিন অর্পিত বাসবডার কভার ড্রাইভ বাঁচাতে ডাইভ মেরে বাঁ কাঁধে চোট পেয়েছিলেন। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল সুদীপকে। ইডেন থেকেই সরাসরি হাসপাতালে যান সুদীপ। তাঁর কাঁধে চোট পাওয়া জায়গায় স্ক্যান হয়। তৃতীয় দিন সকালে ফিল্ডিং করতেও নামেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেন সুদীপ। তবে রান পাননি। ১৪ রান করে ফেরেন।


রবিবার সকালে মনোজ, শাহবাজ, অভিষেক পোড়েল, আকাশ দীপ ও আকাশ ঘটক ফিরতেই পাল্টা লড়াইয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষ।


আরও পড়ুন: গ্রুপ-২ ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ১১ রানে পরাস্ত ভারত