মুম্বই: মাঝে আর ২ দিন। এরপরই জীবনের পঞ্চাশটি বসন্ত পার করে ফেলবেন সচিন তেন্ডুলকর। কিংবদন্তি ভারতীয় ক্রিকেটারের জন্মদিনের আগেই এক অন্য সেলিব্রেশন মেজাজে মাস্টার ব্লাস্টার। মুম্বইয়ে কাটলেন পেল্লাই কেকও। আসলে ১৯৯৮ সালে শারজাতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৩১ বলে ১৪৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন সচিন। সেই ইনিংসের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে কেক কাটলেন তিনি। মুম্বইয়ে এই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সচিনের অসংখ্য অনুরাগীও।


শারজায় সেই ঐতিহাসিক ইনিংস


সালটা ১৯৯৮। কোকাকোলা কাপের ম্যাচ। ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৮৫ রান বোর্ডে তুলেছিল অজি শিবির। বিশাল রানের লক্ষ্যমাত্রা। তার ওপর আবার ইনিংসের বিরতিতে ঝড় ওঠে শারজায়। যার জন্য ওভার ও লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমে ভারতের জন্য। পরিবর্তিত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৬ ওভারে ২৭৭। সেই সময়কার দিনে বিশ্বের যে কোনও পিচে আড়াইশোর বেশি রান তাড়া করা বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় মানা হত। কিন্তু ভারতীয় দল হাল ছেড়ে দেয়নি। সচিন ১৪৩ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন শারজার দর্শকদের। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার তারকাখচিত বোলিং লাইন আপে ছিলেন শেন ওয়ার্ন, ড্যামিয়েন ফ্লেমিং, মাইকেল কাসপ্রোয়িচের মতো তারকারা। কিন্তু তাঁদের বোলিংকেও সেদিন ক্লাবস্তরে নামিয়ে এনেছিলেন সচিন। একের পর এক দর্শনীয় শট। বেশ কয়েকবার গ্যালারিতে ফেললেন বল। ম্যাচের ৪৩ তম ওভারে যখন আউট হলেন সচিন, তখন তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৩১ বলে ১৪৩ রান। নিজের ইনিংসে ৯টি বাউন্ডারি ও ৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সচিন।


সেই ইনিংস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সচিন বলেন, ''আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারি না যে সেই ইনিংসটির ২৫ বছর হয়ে গেল। এখন আমার ২৫ বছরের মেয়ে ও ২৩ বছরের ছেলে রয়েছে। কীভাবে সময় চলে যায়, বোঝাই যায় না। আমরা প্রতিনিয়ত আরও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হই। আমি ভগবানের কাছে কৃতজ্ঞ যে আমাকে ক্রিকেটের ব্যাট হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আমি এই একটি জিনিসই সারাজীবন ভালবেসে গিয়েছি।''


উল্লেখ্য, সেই ম্যাচে ফ্লেমিংয়ের বলে সচিন যখন আউট হলেন, তখন ভারতের দরকার আর ১৮ বলে ৩৫ রান। যদিও শেষ পর্যন্ত আর কেউই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। ম্যাচে ২৬ রানে হেরে যায় ভারত। তবে রান রেটে নিউজিল্যান্ডকে পিছনে ফেলে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। আর সচিনের মরুঝড়কেও ম্লান করে দেওয়া ইনিংস ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে জায়গা করে নেয়।