বার্লিন: ২০১১-র বিশ্বকাপের ফাইনালে জয়ের পর সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে তুলে সহ খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাসের সেই দৃশ্য ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের একটা সোনালী অধ্যায়। এই দৃশ্যই গত কুড়ি বছরে ক্রীড়াক্ষেত্রে সেরা মুহুর্ত হিসেবে বিবেচিত হল বার্লিনে। এই দৃশ্য গত ২০ বছরে লরিয়াস সেরা ক্রীড়া মুহূর্তের সম্মান পেল। সোমবার এক্ষেত্রে সর্বাধিক ভোট পেলেন সচিন।
২০১১-তে শেষবার বিশ্বকাপ খেলেছিলেন সচিন। আর কেরিয়ারের ওই ষষ্ঠ বিশ্বকাপেই ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় তাঁর। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতত্বাধীন ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রীলঙ্কার নুয়ান কুলশেখরার বল বাউন্ডারির বাইরে উড়িয়ে ভারতকে বহুকাঙ্খিত জয় এনে দেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এরপরই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন ভারতীয় সমর্থক ও ক্রিকেটাররা। খেলোয়াড়রা মাঠে নেমে সচিনকে কাঁধে তুলে নিয়ে স্টেডিয়ামে ভিকট্রি ল্যাপ দেন। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সহ খেলোয়াড়দের কাঁধে সচিনের সেই ছবি ভারতীয় দর্শকদের স্মৃতিতে এখনও তাজা হয়ে রয়েছে।
বার্লিনের জমকালো অনুষ্ঠানে জয়ী হিসেবে সচিনের নাম ঘোষণা করেন টেনিস কিংবদন্তী বরিস বেকার। সচিনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয়া।
ট্রফি নেওয়া পর সচিন বলেছেন, এটা অবিশ্বাস্য। বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। খুবই কম এমন ঘটনা ঘটে, যাতে সারা দেশ উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
সচিন বলেছেন, সেই উচ্ছ্বাস স্মরণ করিয়ে দেয়, খেলা কতটা শক্তিশালী এবং তা সকলের মনে জাদুকরী প্রভাব ফেলতে পারে।



বেকার সচিনকে ওই সময়ে তাঁর অনুভূতির কথা জানাতে বললে ভারতের ব্যাটিং কিংবদন্তী জানালেন, এই ট্রফি জয় তাঁর কাছে কতটা গুরুত্বপূ্র্ণ ছিল।
সচিন বলেছেন, আমার এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৩-তে। তখন আমার বয়স ছিল ১০। ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল। এর তাত্পর্য বোঝার বয়স তখন ছিল না। সবাই আনন্দে মেতেছিল, তাই আমিও সেই দলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনভাবে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম যে, খুব বিশেষ কিছু একটা ঘটেছে। আমিও একদিন এইদিনটা দেখতে চেয়েছিলাম। এবং এভাবেই আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। ওই মুহূর্তটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে গর্বের। ২২ বছর ধরে এই স্বপ্ন দেখেছি। কোনওদিনও আশা ছাড়িনি। আমি সেদিন আসলে দেশের মানুষের হয়ে ট্রফিটা তুলেছিলাম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক রানের মালিক জানান, লরিয়াস ট্রফি হাতে নিতে পারাটাও তাঁর কাছে সম্মানের বিষয়।