কলকাতা: আশা জাগিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। লড়াই করেও সন্তোষ ট্রফির (Santosh Trophy) ফাইনালে কেরলের কাছে হেরে যেতে হয়েছে বাংলাকে (Keral vs Bengal)। টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে রঞ্জন ভট্টাচার্যের ছেলেদের।


তবে সন্তোষ ট্রফি হাতছাড়া হলেও, জীবনযুদ্ধে কিছুটা যেন স্বস্তির খবর পেলেন বাংলার দুই ফুটবলার। ৭৫তম সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মনোতোষ চাকলাদার। ফরোয়ার্ডে দিলীপ ওঁরাওয়েরও টুর্নামেন্ট খুব ভাল কেটেছে। এবার তারই পুরস্কার পেলেন বাংলা দলের এই দুই ফুটবলার। রাজ্য সরকারের তরফে বাংলার দুই প্রতিভাবান ফুটবলারকেই চাকরি দেওয়া হল।


সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে কেরলের বিরুদ্ধে পেনাল্টিতে ৪-৫ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল বাংলা। তবে সেমিফাইনালে গোল করার পর, ফাইনালেও গোল করেন দমদম নাগের বাজারের ছেলে দিলীপ। সেই লিড অবশ্য স্থায়ী হয়নি। অপরদিকে, চুঁচুড়ার ছেলে মনোতোষ গোটা টুর্নামেন্টে নিজের সেরাটা দিয়ে রক্ষণের দুর্গ আগলেছেন। ফাইনাল ম্যাচের আগেই কালবৈশাখী ঝড়ে তাঁর বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছিল। সেই উদ্বেগ সরিয়ে ফাইনালে নিজের সর্বস্বটা উজাড় করে দেন তিনি। ফাইনালে বাংলাকে জেতাতে না পারলেও, তাঁদের লড়াই কিছুটা হলেও যেন মর্যাদা পাচ্ছে।


বৃহস্পতিবার নবান্নে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেখানেই বাংলা দলের এই দুই প্রতিভাবান ফুটবলারকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই ময়দানে খুশির হাওয়া।


সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে হার বাংলার। কেরলের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে হেরে গেল রঞ্জন ভট্টাচার্যের দল। ম্যাচের ২ অর্ধেই কোনও দল গোল করতে পারেনি। এরপর অতিরিক্ত মিনিটে খেলা গড়ালে প্রথমে গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন দিলীপ ওঁরাও। কিন্তু অতিরিক্ত মিনিটের দ্বিতীয় অর্ধেই সেই গোলশোধ করে দেন কেরলের বিবিন আজওয়ান। খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানে ৫-৪ গোলে বাংলাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল কেরল। 


দ্বিতীয়ার্ধেও ২ দলের কেউই গোল করতে পারেননি। বাংলার মহিতোষ রায় সুযোগ মিস করেন। অন্যদিকে কেরলের হয়ে একটি সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন জয়রাজ। তাঁর জোরালো শট আটকে দেন প্রিয়ন্ত কুমার সিংহ। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। সেখানেই ৯৬ মিনিটের মাথায় দিলীপের গোলে এগিয়ে যায় বাংলা। যখন মনে হচ্ছিল যে বাংলা ৩৩ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে সন্তোষে। ঠিক সেই সময়ই খেলার ঠিক চার মিনিট আগে গোলশোধ কেরলের। হলুদ জার্সিধারীদের জন্য গ্যালারি তখন ফেটে পড়েছে।


খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই বারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে দিয়ে বাংলার আশায় জল ঢেলে দেন সজল বাগ। কেরল একটিও গোল মিস করেনি। একটিও গোল বাঁচাতে পারেননি সারা ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা প্রিয়ন্ত সিং। শেষ পর্যন্ত ৫-৪ ফলে চ্যাম্পিয়ন হল কেরল। ৩৩ বার সন্তোষ ট্রফি জেতা হল না বাংলার। রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল বাংলাকে।