কলকাতা: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিনি খেলেননি। তবে নাগপুরে রবিবার সন্ধ্যায় মাহমুদুল্লাহদের হারিয়ে যখন সিরিজ জয় নিশ্চিত করলেন রোহিত শর্মারা, কাছাকাছি সময়ই বল হাতে আগুন ছোটালেন মহম্মদ শামিও! অবশ্য জামথায় বিদর্ভ ক্রিকেট সংস্থার স্টেডিয়ামে নয়। শামিকে বল হাতে দেখা গিয়েছে নাগপুর থেকে প্রায় ১১০০ কিলোমিটার দূরে। বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। রবিবার থেকে যেখানে রাহুল দ্রাবিড়ের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন শামি-সহ পাঁচ ভারতীয় ক্রিকেটার। তবে দিনের আলোয় নয়। শামিদের প্রস্তুতি চলল নৈশালোকে। আর গোলাপি বলে!
কিন্তু ১৪ নভেম্বর থেকে ইনদওরে ভারত-বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ তো খেলা হবে প্রথাগত লাল বলে। তাহলে আচমকা গোলাপি বলে অনুশীলন কেন? কৌতূহল মেটালেন শামি স্বয়ং। সোমবার সকালে বেঙ্গালুরু থেকে মোবাইল ফোনে জাতীয় দলের তারকা পেসার বললেন, ‘আমরা ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ খেলব নৈশালোকে আর গোলাপি বলে। দেশের মাটিতে লাল বলে খেলে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা দলের সকলের নেই। তাই আগাম প্রস্তুতিতে নেমে পড়া।’
জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে শামির সঙ্গেই প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন চেতেশ্বর পূজারা, মায়াঙ্ক অগ্রবাল, রবীন্দ্র জাডেজা ও অজিঙ্ক রাহানে। সোমবার থেকে অনুশীলনে যোগ দেওয়ার কথা ঋদ্ধিমান সাহার। ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র শামি ও ঋদ্ধিরই ফ্লাডলাইটে গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিন বছর আগে সিএবি পরিচালিত স্থানীয় ক্রিকেটের সুপার লিগ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও ভবানীপুর। নৈশালোকে ও গোলাপি বলের সেই ম্যাচও হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই। মোহনবাগানের হয়ে খেলেছিলেন শামি ও ঋদ্ধি। প্রথম ইনিংসে ১৩.২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন শামি। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ম্যাচে সব মিলিয়ে ৭ শিকার। মূলত তাঁর দাপটেই ভবানীপুরকে ২৯৬ রানে হারিয়েছিল মোহনবাগান।
শামি বলছেন, ‘সেই ম্যাচ আমার কাছে একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। নিজের সেই অভিজ্ঞতা দলের সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি। গোলাপি বলে মানিয়ে নেওয়াটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সাধারণ বলের চেয়ে তা অনেকটা আলাদা।’
কীরকম? ‘গোলাপি বল সন্ধ্যার পর থেকে সারাক্ষণ সুইং করে। পাশাপাশি প্রথম দিন থেকে রিভার্স সুইংও পাওয়া যায়। সুপার লিগের ফাইনালে পেসার হিসাবে আমি উপভোগ করেছিলাম। এবারও ইডেনে ছবিটা একই থাকবে বলে আমার ধারণা,’ ফোনে বলছিলেন শামি। সঙ্গে যোগ করলেন, ‘পেসারদের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হল, চড়া রোদের মধ্যে ঘণ্টাখানেক খেলা হয়। বড় জোড় একটা করে স্পেল করতে হয়। তারপরই সন্ধ্যা নামে। তাপমাত্রা কমে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক তরতাজা হয়ে বল করা যায়।’
আর গোধূলি? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, গোলাপি বলে নৈশালোকে ব্যাটসম্যানদের কাছে সবচেয়ে কঠিন অধ্যায় হল সন্ধ্যা নামার ওই ঘণ্টাখানেক সময়। এখনও পর্যন্ত বিশ্বক্রিকেটে নৈশালোকে গোলাপি বলে যত ম্যাচ হয়েছে, গোধূলিতে নিয়ম করে প্রচুর উইকেট হারিয়েছে ব্যাটিং করা দল। শামি বলছেন, ‘গোলাপি বল শেষ বিকেলের আলোয় দেখাটা সমস্যার হয়ে দাঁড়ায় ব্যাটসম্যানদের কাছে। তাছাড়া সূর্যাস্তের সময় থেকে বল আচমকাই বাড়তি সুইং করতে শুরু করে। তাই দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নেওয়ার মোক্ষম সুযোগ থাকে। পাশাপাশি আমাদের ম্যাচ হবে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। সেই সময় ইডেনে সন্ধ্যা থেকে শিশির পড়বে। বল অনেক দ্রুত যাবে। সুইং করবে। গোধূলির ধাক্কা সামলানো ব্যাটসম্যানদের কাছে সত্যিই চ্যালেঞ্জিং।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩ টেস্টে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন। যার মধ্যে বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছিলেন শামি। যশপ্রীত বুমরাহর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজেও অধিনায়ক বিরাট কোহলির প্রধান বোলিং অস্ত্র হতে চলেছেন দুরন্ত ছন্দে থাকা বাংলার পেসার। শামি বলছেন, ‘ফিটনেসে অনেক উন্নতি করেছি। সঠিক জায়গায় বল করছি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও ভাল পারফরম্যান্সের ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
দিন-রাতের টেস্ট নিয়েও ইতিবাচক শামি। বলছেন, ‘নৈশালোকের টেস্ট ব্যাট-বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য ফেরাবে বলেই আমার ধারণা। একপেশে দ্বৈরথ হবে না। পাশাপাশি অনেক সমর্থক মাঠে আসার সুযোগ পাবেন। আমি আশাবাদী।’
বাড়তি সুইং আর গোধূলির আতঙ্ক দিন-রাতের টেস্টে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে ভারসাম্য ফেরাবে, বলছেন আত্মবিশ্বাসী শামি
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
11 Nov 2019 07:00 PM (IST)
রবিবার থেকে রাহুল দ্রাবিড়ের তত্ত্বাবধানে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গোলাপি বলে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বাংলার পেসার। সতীর্থদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন নিজের অভিজ্ঞতা
NEXT
PREV
খেলা (sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -